বোর্ড পরীক্ষায় স্কুলের ছাত্রীদের ভাল ফলাফল, অভিনব উদ্যোগ শিক্ষিকার, মধ্যাহ্ন ভোজনে বার্ণপুরের বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকরা
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : আসানসোল শিল্পাঞ্চলের একটি নামী ইংরেজী মাধ্যম স্কুলের এক শিক্ষিকা আজ ঢাকেশ্বরী বৃদ্ধাশ্রমে বসবাসরত প্রবীণদের দুপুরের খাবার পরিবেশন করলেন। তার সঙ্গে ছিলেন তারই স্কুলের এক ছাত্রী যে এবারের বোর্ড পরীক্ষায় ৯৭.৬ শতাংশ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। জানা গিয়েছে আসলে এবারের বোর্ড পরীক্ষায় এই স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা ভালো ফল করেছে, এই খুশিতে এই স্কুলের শিক্ষিকা বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের দুপুরের খাবার পরিবেশন করেন।




এই ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই শিক্ষিকা বলেন, বড়দের আশীর্বাদ শিশুদের আগামী জীবনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে, তাই আজ এই উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। তিনি তার স্কুলের শিক্ষার্থীদের একটি বার্তা দিতে চান যে তারাও বয়স্কদের সেবা করুক তাদের সম্মান করুক এবং সর্বদা তাদের যত্ন করুক। পাশাপাশি ওই শিক্ষিকা বলেন যে, “আমি মূলত দুটি কারণে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই।প্রথমত, দীর্ঘ মহামারীর পরে জনজীবনে স্বাভাবিক হয়েছে এবং দ্বিতীয়ত, এই বছর আইসিএসই বোর্ডের পরীক্ষায় আমাদের ছাত্রীরা রাজ্য এবং জাতীয় স্তরে অসাধারন অবদান রেখেছে। এছাড়াও দরিদ্র, নিঃস্ব, বৃদ্ধ এবং অসুস্থদের জন্য নগণ্য কাজ করার পরে আত্মতৃপ্তির অনুভূতি অসাধারণ যা বলে প্রকাশ করা যাবেনা। এটি আমাকে অপরিমেয় আনন্দ এবং তৃপ্তি প্রদান করে। এই সমস্ত কাজের মাধ্যমে সামান্য হলেও আমি মনে করি আমার মা এবং আমার শাশুড়ি যারা অতীতে পরোপকার করার জন্য সুপরিচিত ছিলেন, তাদের সেই সমাজসেবা করার প্রয়াসকে উত্তরাধিকারসূত্রে আগামীদিনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।”

এদিকে ওই শিক্ষিকার সুযোগ্য মেধাবী ছাত্রী বলে, ” তার স্কুলের শিক্ষিকার এই প্রয়াসের কথা জানতে পেরে সে নিজেই ইচ্ছে প্রকাশ করে এই কর্মকাণ্ডের স্বাক্ষী হয়ে থাকবার জন্য। সে নিজেও তার শ্রদ্ধেয় শিক্ষিকা ও তার পরিজনের সঙ্গে হতে হাত মিলিয়ে বয়স্কদের দুপুরের খাবার পরিবেশন করে। এই অনুভূতি অসাধারণ এবং আগামী দিনে সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে তাকে সাহায্য করবে। ভবিষ্যতে সে আরো সমাজসেবার কাজে লিপ্ত হয়ে মানুষের মানুষের পাশে থাকতে চায়। এমনকি এই অনুভূতি তার সহপাঠীদের কাছেও ছড়িয়ে দিতে চায় যাতে তারাও সমাজসেবামূলক কাজে নিজেদের যুক্ত করতে পারে।
এদিকে এই উদ্যোগের পরে বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকরা উপস্থিত সবাইকে আশীর্বাদ দেন। এদিনের দুপুরের খাবারের তালিকায় ছিলো, ডাল, ভাত, আলুভাজা, দুরকমের তরকারি, মাছ, পাঁপড় ভাজা, চাটনি থেকে মিষ্টি । এদিন ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইন্দ্রাণী সরকার, জয়দীপ সেনগুপ্ত প্রমুখ।