ASANSOL

কয়লা পাচার মামলা : ৮ ইসিএল কর্তার জামিন নাকচ আসানসোল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে

আরো ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ বিচারকের , পরবর্তী শুনানি ১৬ আগষ্ট

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ কয়লা পাচার মামলায় ধৃত ইসিএলের প্রাক্তন ও বর্তমান জিএম বা জেনারেল ম্যানেজার সহ আটজনের জামিন নাকচ হলো সোমবার আসানসোল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে। দু’পক্ষের আইনজীবীর সওয়াল-জবাব শেষে বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী তাদের আরো ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। আগামী ১৬ আগষ্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে বিচারক নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিন ধৃতদের তরফে আইনজীবী আশীষ মুখোপাধ্যায় সাতটি ফাইল বিচারকের কাছে জমা দেন। সেই ফাইলে ইসিএলের ধৃত কর্তারা পদে থাকাকালীন ( ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল) কয়লা চুরি নিয়ে যেসব চিঠি দিয়েছিলেন, তা রয়েছে বলে জানা যায়।


আইনজীবী আশীষ মুখোপাধ্যায় আশীষ চন্দ্র কুমার, অমিতাভ মুখোপাধ্যায় সহ অন্যান্যরা যেকোন শর্তে মক্কেলদের জামিন দেওয়ার আবেদন করেন। তারা বলেন, এই মামলায় গত ১৯ জুলাই সিবিআই ৪১ জনের নাম সহ প্রথম বা যে প্রিলিমিনারী চার্জশিট জমা দিয়েছে, তাতে আটজনের নাম আছে। তাদের বিরুদ্ধে চার্জও গঠন হয়েছে। তাহলে তাদের আর নতুন করে জেলে রাখা ও জিজ্ঞাসাবাদের কি প্রয়োজন আছে? আর গত ১৪ দিন জেল হেফাজতে থাকাকালীন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তকারী অফিসার মাত্র একদিন কয়েক মিনিটের জন্য জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।
সিবিআইয়ের তরফে আইনজীবী রাকেশ কুমার এই আটজনকে নতুন করে আর হেফাজতে নেওয়ার আবেদন না করলেও, তবে তিনি ধৃতদের জামিন দেওয়ার আবেদনের বিরোধিতা করেন। এদিনও সিবিআইয়ের তরফে জেল হেফাজতে থাকার সময় মামলার তদন্তের জন্য ধৃতদের জেরা করার আবেদন করা হয়েছিলো। বিচারক সেই আবেদনও এদিন মঞ্জুর করেছেন।


প্রসঙ্গতঃ, সিবিআই কয়লা পাচারের এই মামলায় গত ১৩ জুলাই প্রথমে যে সাতজনকে গ্রেফতার করেছিল তারা হলেন ইসিএলের প্রাক্তন জেনারেল ম্যানেজার অভিজিৎ মল্লিক, সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, তন্ময় দাস, বর্তমান জেনারেল ম্যানেজার এসসি মৈত্র এবং মুকেশ কুমার। এছাড়া রয়েছেন দুই নিরাপত্তা আধিকারিক দেবাশীষ মুখোপাধ্যায় ও রিংকু বেহেরা। পরে সুভাষ মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়। তিনি তিনদিনের সিবিআই হেফাজত ছিলেন। বাকি সাতজন পাঁচ দিনের জন্য সিবিআই হেফাজতে ছিলেন। সোমবার নতুন করে ১৪ দিনের জেল হেফাজত হওয়ায়, তাদের হেফাজতের মেয়াদ বেড়ে ৩৩ দিন হবে।
সিবিআইয়ের আইনজীবী এদিন আদালতে সওয়াল করে বলেন, ইসিএলের এই আধিকারিকদের সঙ্গে কয়লা পাচার মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালার সঙ্গে সরাসরি যোগ ছিলো। তাদের মধ্যে মোটা অংকের টাকারও লেনদেন হয়েছিলো। এদেরকে জামিন দেওয়া হলে তারা পালিয়ে যেতে পারেন বা সাক্ষ্যকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করবেন।


যদিও গ্রেফতার হওয়া আটজনের আইনজীবীরা সিবিআইয়ের এই দাবি, মানতে চাননি। এদিন এজলাসে পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে আইনজীবী আশীষ মুখোপাধ্যায় ও আশীষ কুমাররা, আইনজীবী অঙ্কিতা সেনগুপ্ত সিবিআইয়ের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তারা বলেন, এফআইআরে নাম থাকা অনেককে এখনো জেরা পর্যন্ত করা হয় নি। কয়লা চুরি হয়েছে ইসিএলের লিজ হোল্ড এলাকা থেকে। সেই এলাকার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআইএসএফ। অথচ তাদের কাউকে ডাকা হয়নি। বেআইনি কয়লা চুরি নিয়ে একটা রিট পিটিশনের মামলায় হাইকোর্ট একটা টাস্ক ফোর্স গঠন করার নির্দেশ দেয়। যার মাথায় ছিলেন মেজর রাজা পাল। তাকেও জেরার জন্য ডাকা হয়নি। আইনজীবীরা বলেন, কেউ পালাবেন না। সবাই আসানসোলে থাকেন। অনেকে তো চাকরিও করেন না। তাই তাদের জামিন দেওয়া হোক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী ৮ জনের জামিনের আবেদন নাকচ করেন।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *