ASANSOL

CBI আদালতের বিচারককে হুমকি চিঠি : ধৃত আইনজীবীর ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ গরু পাচার মামলায় ধৃত অনুব্রত মন্ডলকে জামিন দেওয়ার জন্য আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীকে হুমকি চিঠি দেওয়ার অভিযোগে সোমবার বিকেলে গ্রেফতার করা হয় পূর্ব বর্ধমান জেলা আদালতের আইনজীবীকে বর্ধমানের বাসিন্দা সুদীপ্ত রায়কে। মঙ্গলবার তাকে আসানসোল জেলা আদালতে পেশ করে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ ১০ দিনের হেফাজতে চায়। বিচারক তার জামিন নাকচ করে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। এদিন আদালতে সুদীপ্তর হয়ে কোন আইনজীবী সওয়াল করেননি।


মঙ্গলবার দুপুরে আসানসোলের কুমারপুরে জিটি রোড লাগোয়া একটি হোটেলে এই ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত জানাতে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। সেখানে ডিসিপি (পশ্চিম) অভিষেক মুদি বলেন, গত ২২ আগষ্ট এই ঘটনা নিয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার ভিত্তিতে একটি মামলা করে পুলিশ ও ডিডি একযোগে তদন্ত করতে নামে। গত ৮ দিন ধরে পুলিশ আধিকারিকরা বর্ধমানে গিয়ে তদন্ত করে। বিভিন্ন দিক থেকে তদন্ত করা হয়। সেই চিঠির প্রেরক হিসাবে নাম ছিলো পূর্ব বর্ধমান আদালতের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের হেড ক্লার্ক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের। বর্ধমানে গিয়ে দু দফায় বাপ্পাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তার সইয়ের নমুনাও পুলিশ সংগ্রহ করে। বিভিন্ন সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে বাপ্পা পূর্ব বর্ধমান জেলা আদালতের আইনজীবীর সুদীপ্ত রায়ের নাম পুলিশকে জানায়। সে বলে , ঐ আইনজীবী তাকে এইভাবে চক্রান্ত ও যড়যন্ত্র করে ফাঁসিয়েছে।

ডিসিপি আরো বলেন, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে আসানসোল আদালতের অদূরে বিএনআর মোড় থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতর কাছ থেকে পাওয়া যায় বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের নামে একটি জাল আধার কার্ড ও আগাম জামিন নেওয়ার আবেদন পত্র। সেগুলো তার কাছে কি করে এলো, তার কোন সদুত্তর সে দিতে পারেনি। তবে তাকে যে ব্যক্তি বাপ্পার নামে জাল আধার কার্ড তৈরি করতে সাহায্য করেছে সেই দীপক মুহুরিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বর্ধমান থানায় ২০১৯ সালে সুদীপ্ত রায়ের নামে দুটি মামলা রয়েছে। একটি জজের জাল স্ট্যাম্পের অভিযোগ ও অন্যটি মাদক মামলা। মাদক মামলায় সে জেলেও ছিলো।

পুলিশ জানতে পারে, প্রথম ১৬ আগষ্ট বাপ্পার ছেলেকে অপহরণের হুমকি দিয়েছিলো এই সুদীপ্ত। পরে ২৩ আগষ্ট ভালো করে শিক্ষা দেবে বলে আবারও বাপ্পাকে হুমকি দেয়। দুটি ঘটনাতেই বর্ধমান থানায় জিডি করা হয়েছে। এছাড়াও আরো অনেক কিছু তথ্য সুদীপ্ত সংক্রান্ত পাওয়া গেছে। তার মধ্যে একটি আছে আরটিআই নিয়ে। এছাড়াও সে এর মাঝে একবার কলকাতায় গেছিলো। কেন গেছিলো তা সে বলেনি। ধৃতকে মঙ্গলবার আসানসোল আদালতে তুলে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত চাওয়া হয়েছিলো। বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে জেরা করে পুলিশের অনুমান, প্রতিহিংসা থেকেই সে বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়কে ফাঁসাতেই এই কাজ করেছে। তবে তার এই মোটিভ কেন ও এই ঘটনার পেছনে অন্য কিছু আছে কিনা তা বার করতে আরো তদন্তের জন্য তাকে আরো জেরা করা হবে। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ছিলেন ডিসিপি (সেন্ট্রাল) কুলদীপ সোনেয়াল, এসিপি (সেন্ট্রাল) দেবরাজ দাস ও আসানসোল দক্ষিণ থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ কৌশিক কুন্ডু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *