ASANSOL

বর্ধমান সন্মার্গ চিটফান্ড মামলা, জামিন নাকচ রাজু সাহানির

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ বর্ধমান সন্মার্গ চিটফান্ড মামলায় বৃহস্পতিবার জামিন হলো না হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান তথা তৃনমূল কংগ্রেসের নেতা রাজু সাহানির। তার ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজত হয়।
গত ৩ সেপ্টেম্বর তাকে ৫ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে পেয়েছিলো এই মামলায় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে বৃহস্পতিবার বেলা বারোটার পরে তাকে কলকাতা থেকে আসানসোল আদালতে নিয়ে আসে সিবিআই। রাজুর নিরাপত্তায় ছিলো কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। দুপুর আড়াইটের পরে আসানসোল আদালতের সিজিএম তরুণ কান্তি মন্ডলের এজলাসে রাজুকে কোর্ট লকআপ থেকে আনা হয়। তিনটের পরে প্রায় ৪৫ মিনিটের মতো এজলাসে সওয়াল-জবাব হয় দু’পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে।

রাজু সাহানির হয়ে ছিলেন প্রদীপ কর, সৌমেন চট্টোপাধ্যায় ও প্রসেনজিৎ নাগ। অন্যদিকে, সিবিআইয়ের তরফে ছিলেন শীবেন্দ্র সাচান ও রাকেশ কুমার। শুনানির শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সিজিএম তরুণ কান্তি মন্ডল রায় শোনাননি। দেড় ঘন্টারও বেশি সময় পরে বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ সিজিএম তার জামিন নাকচ করে ১৪ দিনের জেল হেফাজতর নির্দেশ দেন। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর রাজুকে আবার আসানসোল আদালতে সিজিএমের এজলাসে তোলা হবে।


এদিন অবশ্য সিবিআইয়ের তরফে তাকে আবার হেফাজতে নেওয়ার জন্য কোন আবেদন করা হয়নি। উল্টোদিকে, রাজুর আইনজীবীর তরফে তাকে যে কোন শর্তে জামিন দেওয়ার আবেদন করা হয়েছিলো। সিবিআইয়ের আইনজীবী তার বিরোধিতা করেন ও রাজুকে জেল হেফাজতে পাঠানোর জন্য সওয়াল করেন। বিচারক সিবিআইয়ের আবেদনেই মান্যতা দেন।


তবে এদিন রাজু এই চিটফান্ড সংস্থার সঙ্গে জড়িত যে রয়েছেন, তার কিছু নতুন তথ্য সিবিআইয়ের আইনজীবী শীবেন্দ্র সাচান তার তথ্য দেন বিচারকের। তিনি বলেন, রাজু সাহানি এই সংস্থা থেকে ” আনডিউ বেনিফিট ” পেয়েছেন। এর আগের দিন সিবিআইয়ের তরফে বলা হয়েছিলো রাজু’র থাইল্যান্ডে ব্যাঙ্ক একাউন্ট আছে। এদিন বলা হয়েছে, তার থাইল্যান্ড, হংকং ও ব্যাঙ্ককে তিনটি কোম্পানি আছে। রাজু তার ডিরেক্টর। চিটফান্ড সংস্থার সঙ্গে এই সংস্থাগুলোর কোন কিছু যোগসাজশ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি তদন্তে দেখা, এই চিটাফান্ড সংস্থার চেয়ারম্যান সৌম্যরুপ ভৌমিক ফেরার থাকাকালীন তার মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন রাজুর ঠিকানায় ছিলো। তার প্রমাণ আছে। তাই তাকে জামিন দেওয়া না হোক। সে জামিন পেলে সে সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারে ও তথ্য প্রমান নষ্ট করতে পারে। কারণ তিনি খুবই প্রভাবশালী।
যদিও, রাজু’র দুই আইনজীবী প্রদীপ কর ও সৌমেন চট্টোপাধ্যায় সিবিআইয়ের আইনজীবীর দাবি মানতে চাননি।

তারা বলেন, সিবিআই আমার মক্কেলকে এদিন নতুন করে আর হেফাজতে চায়নি। তার মানে এটা ধরে নেওয়া যেতে পারে, সে এই ৫ দিনে তদন্ত ও জেরায় সহযোগিতা করেছেন। তাহলে জামিন দেওয়া হলে কি হবে? বর্ধমান সন্মর্গ মামলায় তদন্ত শুরু করায় পরে সিবিআই ২ টি চার্জশিট জমা দিয়েছে। তাতে যাদের নাম আছে, তারা সবাই জামিন পেয়েছে। এখনো সংস্থার চেয়ারম্যানকে সিবিআই ধরতে পারে নি। মামলায় প্রিন্সিপাল অভিযুক্ত বাইরে থেকে এভিডেন্স ট্যাম্পার না করলে, আমাদের মক্কেল কি করবে? তারা বলেন, তাকে ৭৫ লক্ষ টাকা ধার দেওয়া হয়েছিল। সেই টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। তাহলে আমার মক্কেলের অপরাধ কোথায়? বর্ধমান সন্মার্গ সংস্থা তো তার নামে মামলা করেনি?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *