ASANSOL

পরিসেবা নিয়ে পুরনিগম বোর্ডকে আক্রমণ বিজেপির, পাল্টা জবাব শাসক দলের

জনগণকে নাগরিক সুবিধা দিতে না পারে, তাহলে তাদের নাগরিকদের কাছ থেকে কর আদায়ের কোনো অধিকার নেই : চৈতালি তিওয়ারি

বেঙ্গল মিরর,আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় : আসানসোল মিউনিসিপ্যাল ​​কর্পোরেশনের বোর্ড গঠিত হওয়ার পরে ৭ মাসেরও বেশি সময় পার হয়ে গেছে। কিন্তু এখনও অবধি কর্পোরেশন এলাকার মানুষের কাছে মৌলিক সুবিধা পৌঁছামো যায়নি। জল, বিদ্যুৎ ও স্যানিটেশনের অভাবে পুর এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই হতে চলেছে বাংলার সবচেয়ে বড় পূজা দুর্গাপূজা। দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে সব ওয়ার্ডে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা করার কথা থাকলেও সেভাবে তা করা হচ্ছে না। আসানসোল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের বিজেপি দলনেত্রী চৈতালি তিওয়ারি বুধবার দুপুরে আসানসোলের জিটি রোডের গোধুলি মোড় সংলগ্ন আবাসিক অফিসে সাংবাদিক সম্মেলনে এইসব কথার প্রসঙ্গ তুলে পুর বোর্ডকে আক্রমণ করেন । অন্যদের মধ্যে ছিলেন কাউন্সিলর গৌরব গুপ্ত, প্রাক্তন কাউন্সিলর ভৃগু ঠাকুর ও মধুমিতা চট্টোপাধ্যায় ।


তিনি আরো বলেন, জিতেন্দ্র তিওয়ারি যখন মেয়র ছিলেন তখন আসানসোল, রানিগঞ্জ, জামুরিয়া এবং কুলটি এই চারটি এলাকার প্রতিটি বাড়িতে জল সংযোগ দেওয়ার কাজ শুরু করা হয়েছিলো। সেই সময়ে এই কাজটি খুব দ্রুত চলছিল। কিন্তু এরপর থেকে সেই কাজ থেমে যায়।
বাড়িতে বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়ার কাজ থমকে আছে। নতুন বোর্ড গঠনের পর নতুন কোনো কাজ করা তো দূরের কথা, বিগত বোর্ডে যে কাজ করা হয়েছে, তার ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না। তিনি বলেন, যে কাজ অসম্পূর্ণ ছিল, তাও সম্পূর্ণ হয়নি। মিউনিসিপ্যাল ​​কর্পোরেশন যদি জনগণকে নাগরিক সুবিধা দিতে না পারে, তাহলে তাদের নাগরিকদের কাছ থেকে কর আদায়ের কোনো অধিকার নেই। কোনো ওয়ার্ডেই উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি। মানুষ পুর পরিসেবা ঠিক মতো পাচ্ছেন না।

যেসব ওয়ার্ডে বিজেপি কাউন্সিলর রয়েছেন, সেখানে স্থানীয় কাউন্সিলরকে বাইপাস করে কাজ করা হচ্ছে। বিজেপি কাউন্সিলররা জনগণের সমর্থনে কাউন্সিলর হয়েছেন। তারা টিএমসি নেতাদের মতো ছাপ্পা ভোটে জিতে কাউন্সিলর হননি। কিন্তু তারপরও বর্তমান বোর্ড তাদের সম্মান দিচ্ছে না। চৈতালি তিওয়ারি স্পষ্টভাবে বলেন, আসানসোল মিউনিসিপ্যাল ​​কর্পোরেশন এলাকার মানুষ যদি দুর্গাপূজা বা উৎসবের মরসুমে নাগরিক সুবিধা পেতে অসুবিধার সম্মুখীন হয়, তাহলে আমরা আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু করবে। বিজেপি আসানসোলের মানুষকে বোকা বানাতে দেবে না।

এই কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করবেন : গুরুদাস চ্যাটার্জি

এই প্রসঙ্গে আসানসোল মিউনিসিপ্যাল ​​কর্পোরেশনের এমএমআইসি গুরুদাস ওরফে রকেট চ্যাটার্জি বলেন, যে বিজেপির কাউন্সিলররা এমন অভিযোগ করছেন, তারা তো বোর্ড মিটিংয়ে আসেন না। শুধু সামাজিক ও সংবাদ মাধ্যমে ঘরে বসেই রাজনীতি করেন। তিনি বলেন, বিজেপির জেতা ওয়ার্ডের লোকজনেরা কর্পোরেশনে কাছে এসে বলছেন, ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা দেখা করেন না। জনগণ এতটাই ক্ষুব্ধ যে এভাবে কয়েকদিন চলতে থাকলে তারা এই কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করবেন।

তিনি বলেন, চৈতালি তেওয়ারির স্বামী জিতেন্দ্র তেওয়ারি যখন মেয়র ছিলেন তখন বিরোধী দলের নেতা যিনি ছিলেন তিনিও এই ধরনের অভিযোগ করেছেন। তখন আসানসোল পুর কর্পোরেশনে কেউ কথা বলার সাহস পেতো না। মেয়র নিজের চেম্বারে একা বসে থাকতেন। কিন্তু আজ মানুষ কথা বলছে এবং এখানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করছে। তিনি বলেন, যারা রাজনীতির চশমা চোখে রেখেছেন, তারা কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না। উন্নয়নের উদাহরণ স্বরূপ তিনি গাড়ুই নদীর পরিচ্ছন্নতার কথা উল্লেখ করেন।গুরুদাস চ্যাটার্জি বলেন, যেভাবে গারুই নদী পরিষ্কার করা হয়েছে তা বর্তমান বোর্ড যে গতিতে কাজ করছে তার প্রমাণ। আসানসোলের মানুষ সব কিছু দেখতে পাচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *