ASANSOLKULTI-BARAKAR

নিষিদ্ধ পল্লী থেকে নাবালিকা ও বাংলাদেশী উদ্ধারের ঘটনা, আদালতে বেকসুর খালাস গ্রেফতার হওয়া ২৮ জন

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ মুর্শিদাবাদে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অভিযোগের ভিত্তিতে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের কুলটি থানার নিয়ামতপুরের লছিপুরের যৌনপল্লী থেকে ২০ জন নাবালিকা ও একজন বাংলাদেশীকে উদ্ধার করা হয়েছিলো। ২০২১ সালের ৪ আগষ্ট এই ঘটনাটি ঘটেছিলো। সেই ঘটনায় ২৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্য গ্রহণের পর বৃহস্পতিবার আসানসোল জেলা আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২) শরন্যা সেন প্রসাদ অভিযুক্তদের প্রত্যেককেই প্রকৃত প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস করার নির্দেশ দেন।


এই মামলায় অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী শেখর কুন্ডু ও অভিরূপ গাঙ্গুলী বলেন, মুর্শিদাবাদের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২১ সালের ৪ ল আগস্ট আসানসোলের কুলটি থানার নিয়ামতপুরের লছিপুর নিষিদ্ধ পল্লীতে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের তৎকালীন চেয়ারপার্সেন অনন্যা চক্রবর্তী তদানীন্তন পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক বিভু গোয়েল ও আসানসোল দূর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় ঠাকুরকে সঙ্গে নিয়ে একটি অভিযান চালান। সেদিন গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে তল্লাশি চলে। নিষিদ্ধ পল্লী থেকে প্রথমে ৪২ জনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে ২০জন নাবালিকা ও একজন বাংলাদেশী মহিলাকে উদ্ধার করা হয়েছিলো। বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

এছাড়াও পুলিশ এই ঘটনায় দুই দফায় মোট ২৮ জনকে গ্রেফতার করে। এদের বিরুদ্ধেই নাবালিকা পাচার বা হিউম্যান ট্রাফিকিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছিলো। গ্রেফতার হওয়া বা অভিযুক্তদের মধ্যে বেশিরভাগ বিহার ও ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা ছিলো। উদ্ধার হওয়া নাবালিকারা যেমন মুর্শিদাবাদ ও নদিয়া থেকে নিষিদ্ধ পল্লীতে এসেছিলো। তেমনিই বিহারের সাসারাম থেকে আনা হয়েছিল কয়েকজনকে। একটা বড় একটি নাবালিকা পাচারের তথ্য নিষিদ্ধ পল্লীতে হয়েছে বলে পুলিশ ও প্রশাসনের মনে হয়। তাই তার গুরুত্ব বুঝে রাজ্য পুলিশের সিআইডির হাতে এই মামলার তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়। তারপর তদন্ত শুরু করে সিআইডি ।


শেখর বাবু বলেন, উদ্ধার হওয়া নাবালিকারা কেউ ধৃতদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেননি বিচারকের কাছে । এমনকি তাদের মেডিকেল করানোর ক্ষেত্রেও তারা আপত্তি জানায় । অনেকেই নিজে থেকেই এই পেশায় এসেছে বলেও জানায়। তাদের জোর করে কেউ ধরে এনে এই নিষিদ্ধ পল্লীতে এই পেশায় ঢুকিয়েছে এ কথা কেউ স্বীকার করেনি।
দীর্ঘ সাক্ষ্য দান ও শুনানির পর অতিরিক্ত জেলা জজ (দুই )শরন্যা সেনপ্রসাদ বৃহস্পতিবার সমস্ত অভিযুক্তকেই বেকসুর খালাস করার নির্দেশ দেন। জানা গেছে, ঐ ঘটনার পরে পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে লছিপুরের ১০০টির বেশি ছোট ছোট দোকান ও ঘরগুলি সিল করে দেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকেই এইসব নাবালিকা ও বাংলাদেশি মহিলাকে উদ্ধার করা হয় বলে পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছিলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *