আসানসোল জেলা হাসপাতালের পিপি ইউনিটে দুঃসাহসিক চুরির অভিযোগ, তদন্তে পুলিশ
সিসি ক্যামেরা ভাঙ্গা থেকে বিস্কুট খাওয়া, চারটি সিলিং ফ্যান সহ একাধিক চিকিৎসা সামগ্রী লুঠ
.বেঙ্গল মিরর, আসানসোল , রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ দূর্গাপুজোর ঠিক মুখে আসানসোল জেলা হাসপাতাল চত্বরে দুঃসাহসিক চুরি। রবিবার রাতে এই ঘটনাটি ঘটেছে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ঠিক পেছনে পিপি ইউনিট বা এ্যান্টিনেট্যাল ক্লিনিকে। সোমবার সকালে এই চুরির কথা জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ডেপুটি সুপার কঙ্কন রায় সহ অন্যান্যারা পিপি ইউনিটে ছুটে যান। আসে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। এদিন দুপুরে পিপি ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিস্টার ইনচার্জের কাছ থেকে কি কি চুরি হয়েছে ও কি ভাঙ্গা হয়েছে, তা জেনে সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাস আসানসোল দক্ষিণ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
জানা গেছে, চোর পিপি ইউনিট থেকে একটি সিসি ক্যামেরা, চারটি সিলিং ফ্যান, দুটো ব্লাড প্রেশার মেশিন, তিনটি ওয়েট মেশিন, একটি গ্লুকো মিটার, একটি তালা চাবি ও দুটি বড় কাঁচি চুরি করেছে। পাশাপাশি, চোর পিপি ইউনিটের মেন দরজা, গেটের তালা, একটি জানালার কাঁচ ও লক, মিটার বক্স ও একটি আলমারি ও লকার ভেঙেছে।
পিপি ইউনিটে জানলার উপরে একটি সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে। সেই ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, রবিবার রাত ৯.৪০ মিনিট নাগাদ একজন যুবক সাদা জামা প্যান্ট পড়ে সেই জানলার কাছে সাইকেল দাঁড় করাচ্ছে। তারপর সে জানলার কাঁচ ও লক ভেঙে সিসি ক্যামেরার তার টানছে। কিছুক্ষুনের মধ্যেই সেই সিসি ক্যামেরা বন্ধ হয়ে যায়। অনুমান করা হচ্ছে, এরপর ঐ চোর পিপি ইউনিটের মেন গেটে লাগানো তালা ভাঙ্গে। তারপর দরজার তালা ভাঙ্গতে না পেরে সে দরজার পাল্লার একটা অংশ ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে। ইউনিটের ভেতরে ঢুকে চোর চারটি সিলিং ফ্যান খোলে ও একে একে ব্লাড প্রেশার মেশিন, ওয়েট মেশিন, কাঁচি সহ একাধিক চিকিৎসা সামগ্রী চুরি করে। আলমারিতে কিছু আছে কিনা দেখতে তার লক ভাঙে চোর। আলমারির লকারও ভাঙা হয়। এর মাঝে চোর ইউনিটে সিস্টার ও কর্মীদের রাখায় প্লাস্টিকের কৌটো খুলে বেশ কয়েকটি বিস্কুট খায়। এরপর চোর পিপি ইউনিট থেকে বেরোয়।
হাসপাতালে লাগানো অন্য একটি সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়, রাত পৌনে এগারোটা নাগাদ ঐ সাদা জামা প্যান্ট পড়া যুবক সাইকেল নিয়ে এমারজেন্সি বিভাগের সামনের গেট দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। সবকিছু দেখে হাসপাতাল কতৃপক্ষের অনুমান, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে একজনকে দেখা গেলেও, তার সঙ্গে আরো কেউ ছিলো। কেননা, একার পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব নয়। এছাড়াও পিপি ইউনিটটি যে জায়গায় আছে, সেখান দিয়ে সন্ধ্যা বা রাতের দিকে তেমন কেউ যাতায়াত করে না। সেখানে নিরাপত্তা রক্ষীও নেই। বলতে গেলে গোটা এলাকাটি একবারে নিরিবিলি। সুপার বলেন, পুলিশ এসেছিলো। লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অন্য দিকে পুলিশ জানায়, অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করা হচ্ছে।