ASANSOLधर्म-अध्यात्म

আসানসোল ও বার্ণপুরে থিমের জোর লড়াই, চলছে একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার প্রতিযোগিতা

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্যঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল শহর ও ইস্পাত নগরী বার্নপুরের দুর্গাপুজোয় বিগত কয়েক বছরের মতো এবারেও থিমের ছড়াছড়ি। তাতে একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার প্রতিযোগিতা চলছে। স্বাভাবিকভাবেই এইসব পুজোর মন্ডপ ও প্রতিমা দেখতে পঞ্চমীর রাত থেকেই প্রতিটিতেই যথেষ্ট ভিড়। ষষ্ঠী সন্ধ্যা নামতে না নামতে দেখা গেলো সেই চেনা ছবি।

আসানসোলের প্রথম সার্বজনীন পুজো হলো জিটি রোডের রাহালেনের আদি দুর্গাবাড়ি। এবার এই পুজো ১০০ বছরের। এই পূজোর সবকিছুই হলো সাবেকিয়ানা। আজও সবকিছুর মধ্যেও যেমন এই পুজোয় একটা ঐতিহ্য বজায় আছে, তেমনই আন্তরিকতাও আজও চোখে পড়ে। পঞ্চমীর রাত থেকেই ধেমোমেন কোলিয়ারির দুর্গাপুজো গত কয়েক দশকের মত এবারও দর্শক টেনে রেখেছে। বুর্জ খালিফার আদলে এখানে যেমন মন্ডপ তেমনি তার সঙ্গে মিলিয়ে প্রতিমা ও চন্দননগরের আলো দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসছেন।

আসানসোল আপকার গার্ডেনের দুর্গা পুজো এবার ৮১ বছরে পড়েছে। এই পুজোর থিম রক্তকরবী। পাশাপাশি মহিলাদের নিয়ে একাধিক মডেল দর্শক টানবে এখানে। যেমন একটি মডেল এ ভ্রুণ হত্যার প্রতিবাদ অবশ্যই এই সময় গুরুত্বপূর্ণ ।কল্যাণপুর হাউজিংয়ের কে সেক্টরে এলে এক টুকরো মিশরকে দেখা যাবে। এই পুজোর থিম রহস্যময়ী ক্লিওপেট্রা। কল্যাণপুরে স্কিম ২ র পুজোয় এবার থিম ভাবনা অন্য রকমের। সত্যজিৎ রায়কে স্মরণ করে হীরক রাজার দেশের টুকরো টুকরো ছবিকে তুলে ধরা হয়েছে এখানে। কল্যাণপুর আদি দুর্গাপুজোয় চাষীর ঘরে দুর্গাপুজো। একেবারেই গ্রাম বাংলার সংস্কৃতির মধ্যে উঠে এসেছে সেই মণ্ডপ।ইস্পাত নগরী বার্ণপুরের নব বিকাশের দুর্গাপুজোর প্রতিমা দেখতে গেলে মনে হবে কোথায় এসেছি। এখানে রাজস্থানের দৃশ্য যেমন আছে তেমনই ঘোড়া হাতি সবই মিলবে। রাধানগর অ্যাথলেটিক ক্লাব অন্যতম সেরা পুজো বলে যারা গত কয়েক বছর ধরে দাবি করে আসছে। এবারেও তারা রাজস্থানকে তুলে এনেছেন। এখানে থিমের মধ্যে উট থেকে শুরু করে রাজস্থানী বৈচিত্র এই মন্ডপে ধরা পড়বে। কোর্ট রোড পুজো কমিটির থিম ঠাকুরদালান। তাদের আলোর কাজ চোখে পড়ার মতো। সঙ্গে মায়ের মূর্তি একবারে মানানসই। এছাড়াও রয়েছে আসানসোলের হটন রোডের উদয়ন ক্লাব, গৌরমন্ডল রোডের দূর্গাপুজো। আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনের পুজো তো রয়েছে। এখানে মহাষ্টমীর দিন কুমারী পুজো সবচেয়ে আকর্ষণীয়। বলা যেতে পারে, অন্যবারের তুলনায় আসানসোল ও বার্ণপুরের সেরা পুজো গুলিতে এবারে আলোর কারসাজি অবশ্যই দর্শকদের টানবে। তবে ভয় যদি বৃষ্টি হয়। বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে অবশ্য সব বড় পূজোর কর্মকর্তারা নানান ব্যবস্থাও নিয়ে রেখেছেন। যাতে মন্ডপের কোথাও জল না পড়ে বা জল না জমে। আর আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখেই পঞ্চমীর রাত থেকেই মানুষেরা বেরিয়ে পড়েছেন সেরা পুজো দেখতে। মধ্যরাত পর্যন্ত কোথাও কোথাও ভিড় ভালোই দেখা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *