আসানসোলে ৬০ জন তীর্থযাত্রীর টাকা হাতিয়ে বাস নিয়ে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ
দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে তীর্থ যাত্রায় বেরিয়ে চরম সমস্যায় ৬০ যাত্রী
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় : দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে বাংলা, ঝাড়খণ্ড ও উড়িষ্যায় তীর্থ করতে বেরিয়ে চরম সমস্যায় ৬০ তীর্থ যাত্রী। গত তিনদিন ধরে তারা রয়েছেন পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলে ২ নং জাতীয় সড়ক লাগোয়া ঘাঘর বুড়ি মন্দিরে। ৬০ জন তীর্থযাত্রীর মধ্যে বয়স্ক মহিলা ও পুরুষদের পাশা পাশি ছোট বাচ্চা ও কিশোরীরাও রয়েছেন। অভিযোগ, বাস সারাই করে আনার নাম করে, বাস মালিকের লোকেরা বেপাত্তা হয়ে গেছে। হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা। কোন উপায় না পেয়ে, আসানসোলের মন্দিরে আটকে পড়া তীর্থ যাত্রীরা এখন তাদেরকে বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশের কাছে সাহায্যের জন্য অনুরোধ করছেন। পুলিশও গোটা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি বিপাকে পড়া তীর্থ যাত্রীরা বাস মালিকের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।
জানা গেছে, গত ১০ অক্টোবর দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন থানার গঙ্গারামপুর থেকে ৬০ জন তীর্থ যাত্রার নামে বাসে করে বেরোন । বাস মালিক তাদের থেকে টাকা নেন ও বলেন, পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যা ও ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন ধর্মীয় স্থান দেখানোর ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু তারাপীঠ মন্দির দর্শন করানোর পর বাস আসানসোলের ঘাঘর বুড়ি মন্দিরে পৌঁছায়। সেখানে বাস থেকে ৬০ জনকে নামিয়ে দেওয়া হয় । বলা হয় বাসে কিছু কাজ করতে হবে। পাশাপাশি বাস মালিকের লোকেরা তীর্থযাত্রীদের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নেয় ও বাস সারাই করানোর নাম করে বৃহস্পতিবার সকালের পরে সুযোগ পেয়ে পালিয়েছে বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে তীর্থ যাত্রায় বেরোনো ৬০ জন যাত্রী মন খারাপ। তারা এখন ভাবছেন কি করে ফেরত যাবেন তাদের বাড়িতে। তাদের সমস্যার কথা জানতে পারেন ঘাঘর বুড়ি মন্দির কমিটির সদস্যরা। তারা তীর্থযাত্রীদের আসানসোল দক্ষিণ থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেন। তারপরে এদিন তীর্থযাত্রীরা সাহায্যের জন্য আসানসোল দক্ষিণ থানায় পৌঁছান।
তারা আসানসোল দক্ষিণ থানা পুলিশকে গোটা ঘটনার কথা জানান। পুলিশের তরফে তাদের আশ্বস্ত করে বলা হয় যে, বাড়িতে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি পুলিশের তরফে সেই ট্যুরিস্ট বাসের মালিকের সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে । তীর্থযাত্রীদের তরফে শেখর কান্তি চৌধুরী মনীন্দ্র নাথ দাস ও তপতী দাস এদিন বলেন, গত ১০ অক্টোবর আমরা দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন থানা এলাকা থেকে বাসে বেরোই। আমাদের মোট ৯ দিনের যাত্রা ছিলো। তারাপীঠ, দেওঘর, দীঘা, পুরী, নবদ্বীপ করে আমাদের বাড়ি ফেরার কথা। কিন্তু আমরা তিনদিন আগে তারাপীঠ মন্দির দেখি। তখন বুঝতে পারি, বাস ঠিক নেই। বৃষ্টির জল বাসের ছাদ দিয়ে পড়ছে। তখন আমরা বাসের মালিককে বাস ঠিক করতে বলি। তখন আমাদেরকে বলা হয় যে, আসানসোলে বাস ঠিক করে দেওয়া হবে।
তারা বলেন, সেই মতো আসানসোলের এই মন্দিরে আমাদের নিয়ে আসা হয় । বৃহস্পতিবার বাস ঠিক করার কথা বলে, আমাদের থেকে ১০ হাজার টাকা নেওয়া হয়। তার আগে, আমরা আরো ৬৫ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালের পরে বাস মালিকের লোকেরা বেপাত্তা হয়ে গেছে। ফোনের সুইচ অফ। কি করবো, বুঝে উঠতে না পেরে আমরা এদিন পুলিশের কাছে যাই। তারা ট্যুরিস্ট বাস মালিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশের কাছে আবেদন করেছেন।
পুলিশ জানায় গোটা বিষয়টি দেখা হচ্ছে।