Indian Railway : ভগবান হনুমানকে নোটিশ পাঠালো
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য্য, আসানসোল। এ যেন পরেশ রাওয়ালের ও মাই গড ছবির একটা অংশ । যেখানে ব্যক্তিগতভাবে একটি দোকানের ধসে ক্ষতি হওয়ার পর ভগবানের কাছে নোটিশ পাঠান হয়েছিল বিমার টাকার জন্য। ঠিক প্রায় একই ধরনের ঘটনা ঘটলো রেলের ধানবাদ ডিভিশনের ধানবাদ জেলার বেকার বাঁধ নামে এক এলাকায়। এবার ধানবাদের রেল দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা স্বয়ং ভগবান হনুমানকে নোটিশ পাঠালো । শুধু তাই নয়, হনুমান মন্দিরের গায়ে নোটিশ লাগিয়েও দিল। সেখানে হনুমানের নামেই নোটিশ করা হয়েছে। এই ঘটনায় গোটা ধানবাদ রেল এলাকা সহ সাধারণ মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে ধানবাদ রেল ডিভিশনের ধানবাদের বেকারবাঁধ বলে একটি জায়গায় এই ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান ১৯৩১ সাল থেকেই এখানে একটি হনুমান মন্দির আছে। স্থানীয় লোকেরা প্রত্যেকদিন সেখানে পুজোপাট ,মন্ত্র উচ্চারণ এসব করেন। হঠাৎ প্রতিদিন কার মতোই কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা এখানে এসে দেখেন মন্দিরের প্রধান গেটে রেলের পক্ষ থেকে একটি নোটিশ ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। নোটিশের বিষয় হিসেবে বলা হয়েছে অবৈধভাবে রেলের জমিতে দখল করে হনুমান মন্দির তৈরি করা হয়েছে। হনুমানের উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিতে বলা হচ্ছে এই বিষয় আপনাকে জানানো হচ্ছে আপনি অবৈধভাবে রেলের জমি দখল করে এখানে মন্দির করেছেন। সেটা আইনত অপরাধ। আপনাকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে ১০ দিনের মধ্যে রেলের এই জমি ছেড়ে যদি আপনি চলে না যান তাহলে আপনার বিরুদ্ধে রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তরের পক্ষ থেকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই নোটিশে স্বাক্ষর করছেন রেলেরই একজন সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার পদমর্যাদার আধিকারিক। এই নোটিশ দেখেই স্থানীয় লোকেদের মধ্যে আক্রোশ এবং ক্ষোভ তৈরি হয়। তারা বলেন এত বছরের রেল কখনও এই মন্দির এলাকায় মন্দির সরানোর জন্য কোনও নোটিশ রেল বা কেউ দেয় নি। শুধু তাই নয় এই প্রথম স্বয়ং ভগবান হনুমানের নামে নোটিশ দিয়ে হুমকি দেওয়া হল যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এরপর তারা এই নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তবে অভিযোগ দীর্ঘ ৭০-৮০ বছর ধরেও যারা ওই বস্তি এলাকায় আছেন তাদেরও এখান থেকে রেল উচ্ছেদের জন্য নোটিশ দিয়েছে। এদের অধিকাংশই এলাকায় মাছ শাকসবজি ফল এসব বিক্রি করে কোন মতেই সংসার চালান। আর এই মন্দিরটি তাদের নিজস্ব মন্দির বলে তারা মনে করেন। রেলের জমিতে যেসব বড় বড় ধর্মীয় স্থান আছে সেগুলি নিয়ে কিন্তু তারা নীরব।
এই বিষয় ধানবাদ ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক পিকে মিশ্রা কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন এই নিয়ে তিনি কিছু বলবেন না। যা বলার ডিআরএম বলবেন। ডিআরএম এর দপ্তরে ফোন করা হলে অতিরিক্ত ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারের সাথে কথা বলতে বলা হয়। অতিরিক্ত ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (অপারেশন) আশিস কুমার জানান আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি দুটো ভুলহয়েছে ।একটি চিঠিটা হনুমানের নামে লেখা উচিত হয়নি। আর দ্বিতীয়ত মন্দিরে গিয়ে এটা লাগানো উচিত হয়নি। এটা অনিচ্ছাকৃত ভুল।