BARABANI-SALANPUR-CHITTARANJAN

হিমালয়ের দুর্গম ট্রেল পাস অভিযানে সাফল্য পেল চিত্তরঞ্জনের পাঁচ পর্বতারোহী

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য্য, আসানসোল। ১৮৩০ সাল থেকে হিমালয়ের দুর্গম ট্রেল গিরিপথ বা বা ট্রেল পাস অভিযানে প্রায় দুশো বছরে এখনো পর্যন্ত ৯৪ টি দল গেলেও মাত্র বাইশটি দল অভিযানে সফল হয়েছে। এদের মধ্যে সম্প্রতি সাফল্য পেল এই অভিযানে রেলনগরি চিত্তরঞ্জন শহরের পাঁচ পর্বতারোহী নেতৃত্বাধীন এমিনি ট্রেকার্স। হিমালয়ের নন্দা দেবী এবং নন্দা কোট শৃঙ্গের মধ্যে অবস্থিত প্রায় ১৭ হাজার ৪০০ ফুট উচ্চতা এই ট্রেল পাস অতিক্রম করে এই অভিযাত্রী দল চিত্তরঞ্জনে ফিরেছেন শুক্রবার ।

তারা এখান থেকে রওনা হয়েছিলেন গত বাইশে সেপ্টেম্বর। উত্তরাখণ্ডের খাতি থেকে তারা ২৬ শে সেপ্টেম্বর ওই অভিযানের জন্য রওনা হয় এবং চৌঠা অক্টোবর দলটি ১৭৪০০ ফুট উপরে সাফল্যের সাথে পা রাখে । আর ৮ই অক্টোবর সেখান থেকে নিচে নেমে আসে সফল অভিযাত্রীরা। অভিযাত্রী দলে ছিলেন টিম লিডার রঞ্জন দত্ত , পার্থ ঘোষ, বিজয় কান্ত পান্ডে, তাপস হর এবং প্রশান্ত মুখার্জি । প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য এই পর্বতারোহী দলটি কিছুদিন আগেই হিমালয় হারিয়ে যাওয়া মৃত একাধিক পর্বতারোহীর খোঁজ এনেছিল। সেই সূত্র ধরেই ওই মৃতদেহ তাদের বাড়ি পৌঁছেছিল।


দলনিতা রঞ্জন দত্ত জানান এই গিরিপাশে গিয়ে অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়েছে আমাদের গোটা দলেরই। পিণ্ডারি হিমবাহের শেষ প্রান্তে অবস্থিত ট্রেইল গিরিপথে প্রতিটি মুহূর্তে পা ফেলার আগে চূড়ান্ত সতর্ক থাকতে হয়েছিল ।কারণ সম্পূর্ণ বরফে ঢাকা এই পথে কোথায় কি আছে তা জানার উপায় নেই ।তাছাড়া যে কোন মুহূর্তে ভয়ংকর তুষার ঝড়ে জীবনহানি হওয়ার ঝুঁকিও আছে। মৃত্যুকে বাজি রেখেই আমরা ট্রেল পাস সকলেই জয় করতে পেরে আনন্দিত। তিনি বলেন ২০০০ থেকে ২০২২এই ২২ বছরে ১২ টি দল যারা এই অভিযানের সাফল্য পেয়েছে। আর গত প্রায় দুশো বছরে ৯৪ টি দল তারা গেলেও সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত ২২টি দল অভিযানে সাফল্য পেয়েছে।


রঞ্জন জানান ট্রেলের গিরিপথ হল হিমালয়ের মধ্য দিয়ে একটি পর্বত গিরিপথ যা ভারতের পিথোরাগড় এবং বাগেশ্বর জেলার উত্তরাখণ্ড রাজ্যের নন্দা দেবী এবং নন্দা কোট শৃঙ্গের মধ্যে অবস্থিত । এটি পিন্ডারি হিমবাহের শেষ প্রান্তে অবস্থিত এবং পিন্ডারি উপত্যকাকে মিলাম উপত্যকার সাথে সংযুক্ত করেছে । বলা হয় যে এটি অতিক্রম করা খুব কঠিন। পাসটি ১৮৩০ সালে কুমায়ুন বিভাগের প্রথম ব্রিটিশ ডেপুটি কমিশনার জিডব্লিউ ট্রেল দ্বারা অভিযানের চেষ্টা হলেও ব্যর্থ হয়। পরেই তার নাম থেকেই এই গিরিপথের নাম ট্রেল পাস হয়।
জোহর উপত্যকা এবং পিন্ডার উপত্যকার লোকেরা বাণিজ্যের জন্য এটি অতিক্রম করার চেষ্টা করেছিল। উত্তরাখণ্ড রাজ্যের বাগেশ্বর জেলার সুপি গ্রামের বুধা মালাক সিং ১৮৩০ সালে এখানে প্রথম পৌঁছন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *