ভাইরাল ভিডিও ঘিরে শোরগোল, তৃনমুল কংগ্রেস কাউন্সিলরের রোষ ও হুমকির মুখে পুলিশ কর্মী
মোটরসাইকেল চালকের জরিমানার চালান কাটায় তোলাবাজির অভিযোগ
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ মোটরসাইকেল চালকের নামে জরিমানার চালান কেটে আসানসোল পুরনিগমের এক তৃনমুল কংগ্রেসের কাউন্সিলারের রোষের আসানসোল উত্তর থানার ট্রাফিক গার্ডের এক পুলিশ কর্মী। আসানসোল উত্তর থানার ২ নং জাতীয় সড়কের কাল্লা মোড়ে ট্রাফিক গার্ডের কিয়স্কে গিয়ে কর্মরত এক পুলিশকে ১৫ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শ্যাম সোরেন সরাসরি হুমকি দেন বলে অভিযোগ ।
তিনি ঐ পুলিশ কর্মীর উদ্দেশ্যে বলেন, ” তোলাবাজি বন্ধ করুন”। না হলে মেরে গুটিয়ে দেব। চাকরি করতে এসেছেন, চাকরি করুন। বেশি হনু হয়ে গেছেন”। তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলারের এমন সব কথা ও ছবি ধরা পড়ে ক্যামেরায়। যা ভিডিও ভাইরাল হতেই শোরগোল পড়ে। গোটা ঘটনা নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানওতোর। দুই বিরোধী দল বিজেপি ও সিপিএম আক্রমণ করে রাজ্যের শাসক দলকে।যদিও তৃনমুল কংগ্রেসের ঐ কাউন্সিলর মানতে চাননি যে, তিনি পুলিশ কর্মীকে হুমকি দিয়েছেন।
তার দাবি, আমি পুলিশের এই কাজের প্রতিবাদ করেছি মাত্র। এখানে এই কিয়স্ক থেকে পুলিশ জরিমানা আদায়ের নামে তোলাবাজি করে। সাধারণ মানুষদের হেনস্তা করে। তারজন্য শুধু ক্ষোভ প্রকাশ করেছি। তিনি আরো বলেন, যার নামে এক হাজার টাকার চালায় কাটা হয়েছে, সেই বাবলু সোরেন আসানসোল পুরনিগমের ১৫ নং ওয়ার্ডের সাফাই কর্মীদের সুপার ভাইজার। সে প্রতিদিন ১৫০ টাকা মজুরিতে কাজ করেন। সে যদি এক হাজার টাকা জরিমানা দেয়, তাহলে তার সংসার চলবে কি করে? তিনি বলেন, ঐ পুলিশ কর্মী বলেছেন, মেয়রের চিঠি আনতে। এটা পুলিশের কাজ? এই পুলিশই এইসব কাজ করে রাজ্য সরকারের বদনাম করছে।
ঘটনার সূত্রপাত, এদিন সকালে আসানসোল পুরনিগমের ১৫ নং ওয়ার্ডের সাফাই কর্মীদের সুপার ভাইজার বাবলু সোরেনের মোটরসাইকেল ধরাকে কেন্দ্র করে। ২ নং জাতীয় সড়কের কাল্লা মোড়ের কাছে তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলেছিলেন। সেই সময় এক সিভিক ভলেন্টিয়ার তাকে ডেকে নিয়ে যায় কাল্লা মোড়ের ট্রাফিক গার্ডের কিয়স্কে। হেলমেট পড়ে না থাকায় এক পুলিশ কর্মী তাকে ১ হাজার টাকার জরিমানা করে চালান কাটেন। ঐ সাফাই কর্মীর দাবি, আমি হেলমেট পড়েই মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলাম। ওয়ার্ডে সাফাই কর্মীরা চলে গেছে, তা জানানোর জন্য একটা ফোন আসে। তখন আমি হেলমেট খুলে ফোন ধরি।
তিনি আরো বলেন, আমি পুলিশ কর্মীকে বলি, আমি আসানসোল পুরনিগমের সাফাই কর্মী। আমার কথা শোনা হয়নি। এরপর আমি কাউন্সিলরকে ফোন করি। তিনি ফোনে কথা বলতে চাইলেও পুলিশ কর্মী কথা বলতে চাননি। এরপর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে আসানসোল পুরনিগমের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শ্যাম সোরেন। এরপর তিনি ঐ পুলিশ কর্মীকে হুমকি দেন। যা ভিডিওতে ধরা পড়েছে। গন্ডগোলের খবর পেয়ে এলাকায় আসেন আসানসোল উত্তর বিধান সভা ব্লকের তৃনমুল কংগ্রেসের সভাপতি উৎপল সিনহা। তিনি কাউন্সিলরকে শান্ত করে পরিস্থিতি সামাল দেন। পুলিশ জানায়, কি ঘটনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। শাসক দলের জেলা নেতৃত্ব জানিয়েছে, কি ঘটনা তা খোঁজ করে দেখা হচ্ছে। কেউ আইন ভেঙে কোন কাজ করলে, দল সমর্থন করবে না। সে যেই হোক না কেন। তবে, কাউন্সিলারের হুমকি দিয়ে ভাইরাল হওয়া ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি বেঙ্গল মিরর।