BARABANI-SALANPUR-CHITTARANJAN

রাজু সাহানির সঙ্গে আসানসোল জেলে ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী সঞ্জয় সিংহ, দুজনেরই জামিন নাকচ

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ বর্ধমান সন্মার্গ চিটফান্ড মামলায় হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান রাজু সাহানির সঙ্গে আসানসোল জেলে ঠাঁই হলো তার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী দূর্গাপুরের বাসিন্দা সঞ্জয় সিংহের। দূর্গাপুজোর আগে থেকেই বর্ধমান সন্মার্গ চিটফান্ড মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়ে আসানসোল জেলে রয়েছে তৃনমুল কংগ্রেসের নেতা রাজু সাহানি।


এই একই মামলায় গত মঙ্গলবার জেরার জন্য কলকাতার সিজিও কমপ্লেক্সে সঞ্জয় সিংহকে ডেকে পাঠায় সিবিআই। টানা ১০ ঘন্টা জেরার করার পরে সহযোগিতা না করায় মঙ্গলবার রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার তাকে আসানসোল জেলা আদালতে পেশ করে সিবিআই তিনদিনের হেফাজতে নিয়েছিলো। সেই হেফাজত শেষে শনিবার সঞ্জয়কে আসানসোল জেলা আদালতে ভারপ্রাপ্ত সিজেএম প্রান্তিক রঞ্জন বোসের এজলাসে তোলা হয়। তার হয়ে আইনজীবী শেখর কুন্ডু জামিনের আবেদন করেন। তিনি এই তিনদিনে হেফাজতে নিয়ে সিবিআই সঞ্জয়ের কাছ থেকে কি পেয়েছে, তার সিজার লিস্ট সিজেএমের সামনে পড়েন। তাতে বলা হয়েছে, তার কাছ থেকে একটা হাতঘড়ি, মানিব্যাগ থেকে ১১১০ টাকা, একটি ডেভিড কার্ড, একটি প্যান কার্ড, একটি সচিত্র পরিচয় পত্র ও কিছু ওষুধ।

আইনজীবী বলেন, এরপর বলা হচ্ছে, তার সঙ্গে নাকি এই মামলার যোগ রয়েছে। এদিন অবশ্য সিবিআইয়ের তরফে তাকে নতুন করে হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়নি। কিন্তু সিজেএমের কাছে এই মামলার কেস রেকর্ড না থাকায় শুনানি আর এগোয়নি। ভারপ্রাপ্ত সিজেএম সিডি কল ফর করার পাশাপাশি সঞ্জয় সিংহকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। আগামী ১১ নভেম্বর আবার আসানসোল জেলা আদালতে সিজেএমের এজলাসে তোলা হবে। তবে, তার আগে আগামী ৩ নভেম্বর তার জামিনের শুনানি হবে বলে জানা গেছে।


এদিন একইসঙ্গে এই চিটফান্ড মামলায় আসানসোল জেলে থাকা রাজু সাহানিকে আদালতে পেশ করা হয়েছিলো। এর আগে সিজেএমের কাছে রাজুর জামিন নাকচ হয়েছিলো। তাই এদিন জেলা জজের এজলাসে তার আইনজীবী শেখর কুন্ডু জামিনের আবেদন করেছিলেন। শুনানিতে আইনজীবী যে কোন শর্তে রাজুকে জামিন দেওয়ার জন্য আবেদন করেন। তিনি বলেন, এতদিন জেলে রয়েছেন আমার মক্কেল। সিবিআই বলছে তদন্ত করা হয়েছে। তাহলে কি পাওয়া গেছে, তা সিবিআই জানায়নি। কিন্তু সওয়াল-জবাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী সুরেন্দ্র সিং তার জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, রাজু সাহানির সঙ্গে সরাসরি যোগ রয়েছে চিটফান্ডের মালিক ফেরার থাকা সৌম্যরুপ ভৌমিকের সঙ্গে। তাদের মধ্যে টাকার লেনদেন হয়েছে। তার ঘনিষ্ঠদের জেরা করা হচ্ছে। একজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তাই তাকে এখন জামিন দেওয়া হলে তদন্ত ব্যহত হবে। কারণ একজন পুরসভার চেয়ারম্যান হিসাবে প্রভাবশালী। শেষ পর্যন্ত সওয়াল-জবাব শেষে ভারপ্রাপ্ত জেলা জজ শরন্যা সেন প্রসাদ রাজু সাহানির জামিন নাকচ করে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। আগামী ১১ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।


অন্যদিকে, এদিন এই চিটফান্ড মামলায় গ্রেফতার হওয়ায় পরে হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়া তৃনমুল কংগ্রেসের নেতা বর্ধমান পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও পুর প্রশাসক প্রণব চট্টোপাধ্যায় আসানসোল জেলা আদালতে সিজেএমের এজলাসে হাজিরা দেন। একই সঙ্গে তার সঙ্গে স্ত্রী রেখা চট্টোপাধ্যায়ও এদিন হাজিরা দিয়েছেন। তাদের আইনজীবী অমিতাভ মুখোপাধ্যায় সিজেএমের কাছে প্রনববাবু ও তার স্ত্রীর হাজিরা দেওয়ার দেওয়ার সময়সীমা বাড়ানোর জন্য আবেদন করেন। পাশাপাশি সিবিআইয়ের তাদের ব্যাঙ্ক একাউন্টগুলি তদন্তের জন্য ” ফ্রিজ ” করেছে। তাতে তাদের অসুবিধা হচ্ছে। সেই একাউন্টগুলি ” ডিফ্রিজ ” করার আবেদন আইনজীবী করেন। কিন্তু সিবিআইয়ের আইনজীবীর আইনজীবীর আপত্তিতে তা সিজেএম খারিজ করে দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *