আসানসোল স্টেশনে ধরা পড়লো হাসপাতাল থেকে পালানো বন্দী
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ ৯ দিন পরে আসানসোল রেল স্টেশন থেকে পুলিশের হাতে ধরা পড়লো আসানসোল জেলা হাসপাতাল থেকে পালানো বিচারাধীন বন্দী। বুধবার সকালে মন্দিল বিপ্লব নামে ঐ বন্দী গত ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যা নাগাদ জেলা হাসপাতালের মুল ভবনের একতলায় পুরনো মেল মেডিকেল ওয়ার্ডের কেবিনের জানালার কাঁচ ভেঙে পালিয়ে যায়৷ মন্দিল বিপ্লব আসানসোলের সালানপুর থানার জেমারির বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে পুরুলিয়ার একটি খুন ও ডাকাতির পাশাপাশি আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কুলটি ও সালানপুর থানা এলাকায় চুরি, ছিনতাইয়ের মতো লুটপাটের সঙ্গে জড়িত থাকার একাধিক মামলা রয়েছে।




গত জুলাই মাস থেকে মন্দিল বিপ্লব আসানসোল জেল বা বিশেষ সংশোধনাগারে বন্দী রয়েছে। ২৫ অক্টোবর তাকে জেল থেকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। পরে তার চিকেন পক্স ধরা পড়ে। সেজন্য তাকে জেলা হাসপাতালের নির্দিষ্ট পুলিশ সেলের পরিবর্তে আলাদা করে মুল ভবনে একতলায় পুরনো মেল মেডিকেল ওয়ার্ডে কেবিনে রাখা হয়। সেই কেবিনে পুলিশ পাহারাও ছিলো। কিন্তু ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যার পরে জানাজানি হয় যে, ঐ বন্দী কেবিনে নেই। পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে সে কেবিনের গ্রিলের জানালার উপরের অংশের কাঁচ ভেঙে পালিয়েছে। গোটা ঘটনার কথা জেলা হাসপাতালের তরফে আসানসোল দক্ষিণ থানায় লিখিত ভাবে অভিযোগ জানানো হয়। তার ভিত্তিতে আসানসোল দক্ষিণ থানায় ভারতীয় দন্ডবিধি বা আইপিসির ২২৪ ধারায়
(কেস নং ৪৪৪/২২, ৩১ অক্টোবর, ২০২২) একটি মামলা হয়।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ বিভিন্ন ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। সূত্র মারফত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিডি বা গোয়েন্দা দপ্তর, কুলটি, সালানপুর ও আসানসোল (দক্ষিণ) থানার বেশ কয়েকটি টিম গঠন করা হয়। সেই টিমের সদস্যরা গত দু’দিনে বিভিন্ন পালিয়ে যাওয়া বন্দী লুকিয়ে থাকতে পারে, সেই সন্দেহে সম্ভাব্য আস্তানায় হানা দিয়ে অভিযান চালায়। একইভাবে পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ডের বোকারো, ধানবাদ, গিরিডি ও দেওঘর জেলাতেও অভিযান চালানো হয়। কিন্তু তাকে পাওয়া যায় নি।
আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি (সেন্ট্রাল) কুলদীপ সোনেয়াল বলেন, বুধবার সকালে পুলিশ একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র মারফত খবর পায় যে ঐ বন্দী গ্রেফতার এড়াতে পশ্চিমবঙ্গে লুকিয়ে থাকার উদ্দেশ্যে ধানবাদ থেকে আসানসোল বা তারপরের কোন স্টেশনে নামার জন্য ট্রেনে উঠেছে। সেই খবরের ভিত্তিতে ধাওয়া করে ও তল্লাশির পরে ডিডি ও আসানসোল দক্ষিণ পুলিশ আসানসোল রেল স্টেশন এলাকায় তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এদিনই পুলিশ তাকে আসানসোল জেলা আদালতে পাঠায়।