আসানসোল পুরনিগমের জল প্রকল্পের কাজ নিয়ে কংগ্রেসের কাউন্সিলরদের অভিযোগ
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ আসানসোল পুরনিগমের জল প্রকল্পের একটি কাজে টেন্ডার দেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে অভিযোগ আনলো বিরোধী দল কংগ্রেস। পুরনিগমের কংগ্রেস কাউন্সিলরদের দাবি, কাজ পাইয়ে দিতে এই কাজের টেন্ডার করা হয়েছে। আসানসোল পুরনিগমের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর গোলাম সরবর রবিবার ২৯ নং ওয়ার্ডে রেলপারের কেটি রোডে দলের কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন , ভূতাবুড়ি পাম্পিং হাউসে দামোদর নদীতে চারটি টিউবওয়েল বসানো হবে। এই কাজের জন্য এমন একজন ঠিকাদার বা তার সংস্থাকে দরপত্র বা টেন্ডার দেওয়া হয়েছে যার নদীর ভেতরে বা রিভারবেড টিউবওয়েল বসানোর মতো কাজের কোন অভিজ্ঞতা বা ক্রেডেনসিয়াল নেই। ঐ সংস্থা বা ঠিকাদার শুধু ড্রেন মেরামতের কাজ করেছে। যা সবাই খুব ভালো করেই জানে। তাকে টেন্ডারে অংশ নিতে দেওয়া হয়। টেন্ডার কমিটিতে যারা বসে আছেন তাদের তো তাকে আগেই বাতিল করা উচিত ছিল।
তিনি আরো বলেন, পুরনিগমের ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ ও শাসক দলের একটা লবির যোগসাজশে এই ঠিকাদারকে টেন্ডারে অংশ নিতে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, টেন্ডারে লেখা আছে একটি মোটর পাম্পও বসানো হবে। এই ঠিকাদার কখনো বৈদ্যুতিক কাজ করেনি। তার ইলেকট্রিক সংক্রান্ত কাজেরও জ্ঞানও নেই। এরপরেও ৮১ লক্ষ টাকার এই কাজের টেন্ডার দেওয়া হয় তাকেই। উষ্মা প্রকাশ করে গোলাম সরবর বলেন, রাজ্য সরকার বলছে তাদের কাছে টাকা নেই। পুরনিগম বলছে কাজের তহবিল নেই। তারপরেও এইভাবে কাজের নাম করে টাকা নয়ছয় করা হচ্ছে। আসানসোল পুরনিগমের দ্বিতীয় পর্যায়ের ” আমরুত” জল প্রকল্পের ডিপিআর পাস করা হয়েছে। সেই প্রকল্পে এই ভূতাবুড়িতে ৫ এমজির একটি পাইপ ইনফিলট্রেশন গ্যালারি করার পরিকল্পনা রয়েছে। যা তৈরি করতে খরচ হবে ২১ কোটি টাকা। এরপর বসানো হবে ৪টি টিউবওয়েল। তিনি বলেন, সেই কাজের জন্য আগে যা বসানো হবে ভেঙে দেওয়া হবে। এতে পুরনিগমের প্রায় ১ কোটি টাকার ক্ষতি হবে। এটাকে বলা হয় ঠিকাদার ও কিছু নেতার যোগসাজশে লুট। গোলাম সরবর বলেন, আসানসোল পুরনিগমের নতুন বোর্ড গঠন প্রায় এক বছর হয়ে গেছে। মেয়র বিধান উপাধ্যায় আসানসোলের উন্নয়ন করতে চাইলেও তার দলেরই একটা বিরুদ্ধ লবি তাকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে।
এর পেছনে রয়েছে কয়েকজন নেতা। পুরনিগমকে ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুল পরামর্শ ও তথ্য দেওয়া হচ্ছে। একদল কর্মী আছে যারা তাকে ভুল কাজ করতে বাধ্য করাচ্ছেন। তিনি বলেন, অবিলম্বে এই টেন্ডার বাতিল করা হোক। নতুন টেন্ডার কমিটি গঠন করে তদন্ত করতে হবে। একই সঙ্গে আবারও টেন্ডার করতে হবে বলে জানান তিনি। তা না হলে আসানসোলের মানুষের স্বার্থে আন্দোলন করবে কংগ্রেস। রাজপথে নেমে পুরনিগমের নীতি জনগণের সামনে তুলে ধরা হবে। জনগণের করের টাকা লুট করা হচ্ছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি আরো জানান, আসানসোল পুরনিগমের আমরুত প্রকল্পে পানীয় জলের কাজ ঠিকমতো হয়নি। এখনও পুরনিগমের বিভিন্ন এলাকায় মানুষ ঠিকমতো জল পাচ্ছেন না। এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কি কাজ হয়েছে, তা বলা হোক।
সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ছিলেন আসানসোল পুরনিগমের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলার এস এম মুস্তাফা।
যদিও মেয়র বিধান উপাধ্যায় কংগ্রেসের এই অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন, অভিযোগ যে কেউ করতেই পারে। এমন কোন টেন্ডার করা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। আর আমরুত প্রকল্পে জলের কাজ করা হবে।