ASANSOL

হাইকোর্ট ও আসানসোল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে শর্ত সাপেক্ষে জামিন পেলেন ৮ ইসিএল কর্তা

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ* শেষ পর্যন্ত জামিন হলো কয়লা পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়া ইসিএলের ৮ কর্তা। যার মধ্যে একজন গত মঙ্গলবার হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত বাকি ৭ জনকে জামিন দিয়েছে। তবে তাদের জামিন হয়েছে শর্ত সাপেক্ষে। ১৪০ দিন ধরে আসানসোল জেলে রয়েছেন ইসিএলের ৮ কর্তা। এই সময়ের মধ্যে বেশ কয়েকবার আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে তাদের জামিনের শুনানি হয়েছে। সেইসব শুনানিতে সিবিআইয়ের আইনজীবীর বিরোধিতায়। তাদের জামিন নাকচ হয়েছে বারবার।

গত নভেম্বর মাসে আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে দুবার শুনানির দিন থাকলেও শুনানি হয়নি। তখন জানা গেছিলো, এই ৮ জনের মধ্যে সুভাষ মুখোপাধ্যায় হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেছেন। সেই আবেদনের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার হাইকোর্ট সুভাষ মুখোপাধ্যায় জামিন মঞ্জুর করে। জামিনের শর্ত হিসাবে বলা হয়েছে তিনি পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলায় যেতে পারবেন না। সিবিআই মামলায় তদন্তের জন্য যখনই ডাকবে তখনই হাজিরা দিতে হবে। বর্তমানে সুভাষ মুখোপাধ্যায় কোথায় থাকছেন, তার ঠিকানা এই মামলার তদন্তকারী অফিসার বা আইও উমেশ কুমার ও আদালতকে জানিয়ে দিতে হবে। এছাড়াও তাকে ৫০ হাজার টাকা করে দুজন জামিনদার বা সিওরিটি বন্ড দিতে হবে।


সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের জামিন পাওয়ায় প্রসঙ্গ তুলে বৃহস্পতিবার বাকি ৭ জনের আইনজীবী শেখর কুন্ডু আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে তাদের জামিনের আবেদন করেন। সওয়াল-জবাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমার জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি এর স্বপক্ষে বলেন, এই মামলায় একজন ভারতীয় দন্ডবিধির ১৬৪ নং ধারায় আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন। তাই তাদের জামিন দেওয়া ঠিক হবে না। তদন্ত এখনো চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী সাতজনের জামিন মঞ্জুর করেন। এখানে জামিনে হাইকোর্টের শর্ত বহাল রাখা হয়েছে। পাশাপাশি বিচারক ৭ জনকে ৫ হাজার টাকা করে দুজনের জামিনদার বা সিওরিটি বন্ড দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।


প্রসঙ্গতঃ, সিবিআই কয়লা পাচারের এই মামলায় গত ১৩ জুলাই প্রথমে যে সাতজনকে গ্রেফতার করেছিল তারা হলেন ইসিএলের প্রাক্তন জেনারেল ম্যানেজার অভিজিৎ মল্লিক, সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, তন্ময় দাস, বর্তমান জেনারেল ম্যানেজার এসসি মৈত্র এবং মুকেশ কুমার। এছাড়া সেদিন গ্রেফতার করা হয়েছিলো দুই নিরাপত্তা আধিকারিক দেবাশীষ মুখোপাধ্যায় ও রিংকু বেহেরাকে । পরে সুভাষ মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়। তিনি তিনদিনের সিবিআই হেফাজত ছিলেন। বাকি সাতজন পাঁচ দিনের জন্য সিবিআই হেফাজতে ছিলেন।


উল্লেখ্য, এই কয়লা পাচার মামলায় গত ১৯ জুলাই সিবিআই ৪১ জনের নাম সহ প্রথম বা সাপ্লিমেন্টারী চার্জশিট জমা দিয়েছে। তাতে এই আটজনের নাম আছে।
প্রসঙ্গতঃ, এই কয়লা পাচার মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালা সুপ্রিম কোর্টের রক্ষা কবচে আছে। সিবিআই তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *