কয়লা খনির বর্তমান ও প্রাক্তন কর্মী এবং তাদের পরিবারের জন্য পুরী, দার্জিলিং বা দিঘাতে মাত্র ৪০০ টাকায় হলিডে হোম
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য ।আসানসোল। : ( Holiday Home for Coal India Employees ) দেশজুড়ে কয়লা খনির বর্তমান ও প্রাক্তন র কর্মী এবং তাদের পরিবারের জন্য কয়েকদিনের ছুটি নিয়ে অথবা এলটিসি নিয়ে বেড়ানোর ইচ্ছে করলে পুরী ( Puri ) , দার্জিলিং ( Darjeeling ) বা দিঘাতে ( Digha ) দিনপিছু মাত্র ৪০০ টাকায় হলিডে হোমে হোটেলে ঘরের সুবিধে মিলবে। ইস্টার্ন কোলফিল্ড বা ভারত কোকিং কোল লিমিটেড সহ কোল ইন্ডিয়া প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ বর্তমান কর্মচারী এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ও তাদের লক্ষ লক্ষ পরিবার এই সুবিধা পাবেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই কোল ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ পুরী দার্জিলিং এবং দীঘায় তিনটি হোটেলের সাথে চুক্তিও করেছে। কয়লাখনির বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা এলটিসি এলএলটিসি তে এই সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। এজন্য অতিরিক্ত যে টাকা কর্মী বা তাদের পরিবার পিছু ভাড়া বাবদ দরকার হবে সেটা কোল ইন্ডিয়া ভর্তুকি হিসেবে দেবে।




গত শনিবার ধানবাদের ভারত কোকিং কোন লিমিটেডের সদর দপ্তরে এবং সোমবার ই সি এল এর সদর দপ্তরে কোল ইন্ডিয়ার পার্সোনাল দপ্তর থেকে পাঠানো এই নির্দেশ এসে পৌঁছেছে। কোল ইন্ডিয়ার প্রশাসনিক দপ্তরের মুখ্য জেনারেল ম্যানেজার এসকে ভগতের স্বাক্ষরিত এই আদেশ কবে থেকে এবং কিভাবে কার্যকরী করা হবে তাও উল্লেখ করা আছে। ওই তিন জায়গায় যদি হোটেলে খনি কর্মী বা তার পরিবার অথবা অবসরপ্রাপ্ত কর্মী এবং তাদের পরিবার গিয়ে থাকতে চান তাহলে ৭৫ দিন আগেই নির্দিষ্ট ফর্মে আবেদন করতে হবে।
এজন্য কোল ইন্ডিয়া তিন জায়গায় তিনটি বড় হোটেলের সাথে চুক্তিও করেছে। পুরীতে ১লা জানুয়ারি ২০২৩ থেকে ৩১শে ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত হোটেল শুভ প্যালেস এর সাথে এই চুক্তি হয়েছে। দার্জিলিংয়ে হোটেল নির্ভানা র সাথে ১৬ই ডিসেম্বর ২০২২ থেকে ১৫ ই ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত এই চুক্তি হয়েছে। আর দীঘাতে দোসরা জানুয়ারি ২০২৩ থেকে ১লা জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত জি সি ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের সাথে চুক্তি হয়েছে। দার্জিলিং এর ক্ষেত্রে অবশ্য ঘর গুলি নন এসি হবে। আর পুরি এবং দীঘার ক্ষেত্রে এসি ঘর হবে। এজন্য খনি কর্মীরা এই খবর শুনে অত্যন্ত খুশি। ৪০০ টাকা প্রতিদিন ঘর পিছু ভাড়া ঠিক হয়েছে। তবে শ্রমিকরা বলেন টানা তিন দিনের বেশি হোটেলে এই সুবিধে পাওয়া যাবে না বলে অর্ডারে বলা আছে ।এটা যদি আরেকটু বাড়ানো যায় তাহলে ভালো হয় ।
ওই নির্দেশে আরো বলা আছে যদি কেউ মনে করেন তিনি তার যাত্রা বাতিল করবেন সেখানে যাবেন না। তাহলে সাতদিন আগে তা কোল ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিতে হবে নিজস্ব দপ্তরের মারফত। আবেদনের ক্ষেত্রেও কর্মীদের কন্ট্রোলিং অফিসার মারফত কোল ইন্ডিয়ার প্রশাসনিক দপ্তরে আবেদন পত্র পাঠাতে হবে। সঙ্গে ডিমান্ড ড্রাফট ব চেক দিতে হবে । আরো বলা হয়েছে ইচ্ছুক কর্মীদের অন্তত দুটি করে ঘর ন্যূনতম বুকিং করতে হবে ।আর এক বছরে একজন কর্মী এবং তার পরিবার একবারই এই সুবিধাটা একটি জায়গায় পাবেন। এবং বছরে একজন কর্মী সবমিলিয়ে তিন জায়গায় এই সুযোগ তিনবার পাবেন ।অর্থাৎ কেউ যদি মনে করেন যে এক বছরে তিনি তিনবার পুরি বা দার্জিলিং বা দীঘা যাবেন তাহলেই সুবিধে প্রতিটি জায়গার জন্য বছরে একবার করে পাবেন।
কয়লা খনি শ্রমিকরা কোল ইন্ডিয়ার এই ঘোষণায় অত্যন্ত খুশি। বিশেষ করে যে তিনটি জায়গাতে বাঁছা হয়েছে সারা দেশের কয়লা খনি শ্রমিক এবং তাদের পরিবারের বেড়ানোর জন্য বা সেখানে গিয়ে থাকার জন্য তা সত্যিই উল্লেখযোগ্য। এ রাজ্যের পর্যটনের ক্ষেত্রেও এটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। যদিও ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা বলেন এই দাবি শ্রমিকদের পক্ষ থেকে অনেক আগেই করা হয়েছিল। এতদিনে কোল ইন্ডিয়া তা মানলেন। পাল্টা তারা প্রশ্ন করেন ৭৫ দিন আগেই যদি বুকিং এর জন্য আবেদন করতে হয় তাহলে দার্জিলিংয়ের ১৬ই ডিসেম্বর থেকেই এই চুক্তি চালু হচ্ছে। সেক্ষেত্রে মাত্র তিন চার দিন থাকছে। তাহলে ৭৫ দিন হলে সেটা তো অনেক পিছিয়ে যাবে। যদিও এই বিষয় কয়লা খনির এক আধিকারিক বলেন আপাতত কেউ যদি যেতে চান এই নির্দেশ দিয়ে মনে হয় তা ১৬ তারিখ থেকেই কার্যকরী হবে দার্জিলিং এর ক্ষেত্রে।