কারখানার পাশাপাশি সিএসআরে নজির রাখছে জামুড়িয়ার শ্যাম মেটালিক্স
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ* কারখানা চালানোর পাশাপাশি সিএসআর বা কর্পোরেট সোশাল রেসপনসেবলিটিতে সামাজিক দায়বদ্ধতার এক অনন্য নজির রাখছে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়ার বাহাদুরপুরের ইস্পাত কারখানা শ্যাম মেটালিক্স। মঙ্গলবার দুপুরে জামুরিয়ার নিংঘায় ২ নং জাতীয় সড়ক লাগোয়া একটি বেসরকারি হোটেলে শ্যাম মেটালিক্স ফাউন্ডেশনের তরফে হওয়া এক সাংবাদিক সম্মেলনে সংস্থার ডিরেক্টর সুমিত চক্রবর্তী বলেন, ‘ ১৯৯১ সাল থেকে চলা শ্যাম সেল পাওয়ার এন্ড স্পঞ্জ আয়রণ কারখানা এখন অনেক বড় বড় কারখানার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উৎপাদনের ক্ষেত্রের পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতার দিক দিয়ে অনেকটা এগিয়ে গেছে। মঙ্গলপুর, জামুরিয়া, সম্বলপুরের এই সংস্থার কারখানা থেকে বার্ষিক উৎপাদন আনুমানিক ৮ মিলিয়ন টন ইস্পাত। আগামীদিনে তা আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তার সঙ্গে কারখানাগুলির সংলগ্ন এলাকায় আমরা নিয়ম মেনে সিএসআরে সামাজিক দায়বদ্ধতার কাজও করছি। আগামী দিনে তা আরো বাড়বে।
সংস্থার জামুরিয়া কারখানার সিএসআরের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক উর্মিলা চট্টোপাধ্যায় বলেন, কারখানা সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকায় শ্যাম মেটালিক্সের পক্ষ থেকে অনেক সামাজিক কাজ করা হচ্ছে । সারা বছর ধরে বনসৃজন , মহিলাদের জন্য শিক্ষা ও বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ ও স্বনির্ভরতার ব্যবস্থা করা হয়েছে । তিনি আরো বলেন, উন্নততর চাষের ব্যবস্থা, পুকুর সংস্কার করে মাছ চাষে উৎসাহ দেওয়া, আদিবাসীদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার, পানীয় জলের ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য শিবির, পশুর চিকিৎসা, গ্রামাঞ্চলে সোলার লাইটের ব্যবস্থা, ধসনার শ্মশানের আধুনিকীকরণের পাশাপাশি সৌন্দর্যায়ন করা হয়েছে। একইসঙ্গে স্কুল মাঠে উন্নতি, দর্শকদের বসার ব্যবস্থা, একাধিক স্কুলবাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ, বাহাদুরপুর স্কুলের বিজ্ঞানের ল্যাবরেটরি তৈরি করে সেখানে বিজ্ঞান শাখা চালু করা হয়েছে। এরই সঙ্গে ১৫টি গ্রামে চিকিৎসা সহায়ক ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল ভ্যান, দমকলের একটি গাড়ি গ্রামবাসীর কাজে ব্যবহারের জন্য রাখা হয়েছে।
এই কারখানার আশেপাশে একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা আছে। কারখানার সিএসআরের কাজে গ্রামপঞ্চায়েত গুলির অনুমতিতে গ্রামগুলিরও উন্নতি ঘটেছে। এইসব কিছুই খুব কম সময় করতে পারা গেছে কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা ও এলাকার বাসিন্দারা পাশে থাকায়।
তিনি বলেন, শ্যামসেল ফুটবল একাডেমি এখন পশ্চিম বর্ধমান জেলায় খেলাধুলার ক্ষেত্রে একটা নামে পরিনত হয়েছে। তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে পুরুষ ও মহিলাদের ফুটবল টিম গত দুবছরে ১৯টি ট্রফি জয় করে একটা রেকর্ড করেছে এই আসানসোল মহকুমায়। চলতি মাসেই সংস্থার ফুটবল একাডেমিকে আবাসিক ফুটবল একাডেমিতে উন্নিত করা হচ্ছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ছিলেন সংস্থার সিওও দেবাশীষ মজুমদার, কারখানা ম্যানেজার অলোক মিশ্র, ইউপি সিং, মিনু ঘোষ, প্রীতি মুখোপাধ্যায়, সমাদৃতা গুপ্ত, অঙ্কুশ রায় ও কৌশিক গোস্বামী।