শীতের রাতে আসানসোল শহরে চাঞ্চল্যকর ঘটনা, তদন্তে পুলিশ
কম্বলের জন্য এক ভবঘুরেকে পিটিয়ে মারলো মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্যঃ শীতের রাতে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল শহরে হাড় হিম করা এক ঘটনা ঘটলো। কম্বলের জন্য রাস্তায় শুয়ে থাকা এক ভবঘুরেকে বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মারলো মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তি। বুধবার রাত সাড়ে বারোটা থেকে একটার মধ্যে এই ঘটনাটি ঘটেছে আসানসোল শহরের জিটি রোডের বিএনআর মোড়ের রবীন্দ্র ভবনে সামনে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ খবর পেয়ে এলাকায় আসে আসানসোল দক্ষিণ থানার (পিপি) পুলিশ। এরপর রক্তাক্ত ও অচৈতন্য অবস্থায় বছর ৫৫ এর ঐ ভবঘুরেকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। এমারজেন্সি বিভাগের চিকিৎসক পরীক্ষা করে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মৃত ভবঘুরের মাথা ও ডানকানে গভীর ক্ষত চিহ্ন বা আঘাত রয়েছে। এদিন ভবঘুরের মৃতদেহর ময়নাতদন্ত করা হয়নি পুলিশের তরফে। বলা হয়েছে, মৃত ব্যক্তির কোন পরিচয় পাওয়া যায় কিনা, তা খোঁজ করে দেখা হচ্ছে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে তা না পাওয়া গেলে, শুক্রবার মৃতদেহর ময়নাতদন্ত করা হবে। তবে জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক জানিয়েছেন, ক্ষত চিহ্ন থেকে অনেক বেশি রক্তক্ষরণ হওয়ায় ঐ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনাকে ঘিরে গোটা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পাশাপাশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন রবীন্দ্র ভবন সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে আসানসোল রবীন্দ্র ভবনের নাইট গার্ড ব্রিজকিশোর সাউ নিজেকে রাতের ঐ ঘটনার অন্যতম প্রতক্ষ্যদর্শী বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, বুধবার রাতে ডিউটি করছিলাম। রাত পৌনে একটা দেখি রবীন্দ্র ভবনের সামনে বিএনআর ব্রিজের দিকে যে বাসস্ট্যান্ড সেখানে একটা লোক ইট ছুঁড়ছে ও লাঠি দিয়ে কাঁচ ভাঙ্গার চেষ্টা করছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে সেখানে গিয়ে তাকে আটকানোর চেষ্টা করি। তখন ঐ লোকটা আমায় তাড়া করে। ইট ছুঁড়তে থাকে। তখন বুঝতে পারি, লোকটা মানসিক ভারসাম্যহীন। প্রান বাঁচাতে কোনমতে পালিয়ে রবীন্দ্র ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়ি। বেশকিছুক্ষুন পরে দূর থেকে দেখি সেখানে শুয়ে থাকা এক ভবঘুরের কম্বল নিয়ে টানাটানি করছে। তারপর তাকে লাঠি দিয়ে মারছে। তিনি আরো বলেন, সেই সময় কোন পুলিশ গাড়িকে এলাকায় দেখিনি। কোন ফোন নম্বর না থাকায় থানায় ফোন করতে পারনি। পরে সকালে শুনি ঐ ভবঘুরে মারা গেছে। পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরের পরে পুলিশ জানতে পারে মানসিক ভারসাম্যহীন ঐ ব্যাক্তি জিটি রোডের ভগৎ সিং মোড়ে রয়েছে। সঙ্গে পুলিশ সেখানে আসে। খবর পেয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও সেখানে আসে। পুলিশ তাকে ধরার চেষ্টা করে। কিন্তু সে গায়ে ময়লা মেখে জিটি রোডের উপর বসে পড়ে। হাতের সামনে যা পায়, তা ছুঁড়তে থাকে। দূর থেকে পুলিশ কর্মীরা তা দেখতে থাকেন। এক ঘন্টারও বেশি সময় ধরে নাটক চলে। শেষ পর্যন্ত ঐ ব্যক্তি এজি চার্চ স্কুলের সামনে দিয়ে পালায়।
উল্লেখ্য, মাস কয়েক আগে এই মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির বিরুদ্ধে জিটি রোডের ভগৎ সিং মোড় সংলগ্ন মহঃ আসলাম নামে এক সেলুন কর্মীকে পাথর দিয়ে মেরেছিলো। বিহারের বাসিন্দা ঐ সেলুন কর্মীর পরে মৃত্যু হয়। তখন তাকে পুলিশ ধরে হাসপাতালে ভর্তিও করেছিলো। সেই ঘটনার প্রতক্ষ্যদর্শী ও আসলামের পরিচিতরা এদিন বলেন, ঐ মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি রাতে পাশের একটা দোকানের জিনিস লুঠ করছিলো। তখন আসলাম তাকে বাধা দেয়। তখন তার উপর হামলা করে। তাদের দাবি, পুলিশের ঐ ঘটনার পরে সতর্ক হওয়া ও পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিলো। তাহলে বুধবারের রাতের ঘটনা ঘটতো না।
এদিকে, আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ঠিক কি ঘটনা তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
- দূর্গাপুরে ভিন জেলা থেকে চুরি যাওয়া ৫৪ লাখ টাকার সামগ্রী সহ ট্রাক উদ্ধার, গ্রেফতার তিন
- রানিগঞ্জে চেম্বার থেকে চিকিৎসকের পচাগলা ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার
- Indian Bank का एसेट फेयर दुर्गापुर पीयरलेस होटल में 10 को, एंट्री फ्री
- West Bengal : सरकारी कार्यालयों में प्रीपेड मीटर लगाने का निर्णय
- নির্মাণের এক মাস পরেই বেহাল রাস্তায় দীর্ঘক্ষণ অবরোধ