ASANSOL

ভীমগড় – পলাশথলি সেকশনে করে নতুন করে যাত্রী ট্রেন চালানোর দাবি

এই বিষয় সরাসরি আলোচনা করতে রাঁচিতে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন আসানসোলের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল : ঝাড়খন্ড এবং পশ্চিমবাংলায় সীমানার মধ্যে থাকা বীরভূম জেলার ভীমগড়- থেকে ঝাড়খণ্ডের পলাশথলি সেকশনের রেল লাইনের নিচে থেকে অবৈধভাবে কয়লা খননের পর দীর্ঘ কাল ধরে যাত্রী ট্রেন বন্ধ হয়ে আছে। অবিলম্বে সেখানে জামতারা ও নলার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ভীমগড়কে যুক্ত করে নতুন করে যাত্রী ট্রেন চালানোর দাবি তুলেছেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন, ঝাড়খন্ড বিধানসভার অধ্যক্ষ রবীন্দ্রনাথ মাহাতো ।

আর এই বিষয় সরাসরি আলোচনা করতে রাঁচিতে গত সোমবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন রেলের তরফে আসানসোলের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার পরমানন্দ শর্মা ,আসানসোলের ডিভিশনের অন্ডাল সাইথিয়া সেকশনের রেল ট্র্যাকের দায়িত্বে থাকা ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার বন্দনা সিনহা। এছাড়াও ছিলেন ইসিএল এর এক আধিকারিক। বৈঠকটি হয় রাঁচিতে ঝাড়খন্ড বিধানসভার অধ্যক্ষ রবীন্দ্রনাথ মাহাতোর সঙ্গে ।সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী সচিবালয়ের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। এই খবরে নতুন করে আশা জেগেছে পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের সীমানার বাসিন্দাদের।

রবীন্দ্রনাথ মাহাতো জানান অন্ডাল-সাঁইথিয়া সেকশনের ভিমগড় থেকে পলাশথলি যাত্রী ট্রেনে করে যাবার রেল লাইনের নিচে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ কয়লা কেটে নেয়া হয়েছে দীর্ঘদিন আগে। এরফলে ওই লাইনে আমাদের যে লোকাল ট্রেন গুলি চলত তাতেই ঝাড়খন্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের মানুষরা উপকৃত হতেন ।এখন সেগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। সেজন্য আমাদের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন ইতিমধ্যেই রেলমন্ত্রী কে চিঠি লিখেছেন। আমিও চিঠি লিখেছি রেলকে। তার পরিপ্রেক্ষিতে রেল আধিকারিকরা একটি সমীক্ষাও করেছেন।

গত সোমবার আসানসোলের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার সহ রেল আধিকারিকদের সাথে একটি বৈঠক হয়।তারা আমাকে জানিয়েছেন ভিমগড় থেকে হজরতপুর পর্যন্ত রেললাইনটি ঠিক করে সেখানে কয়লা বহনের জন্য মাল গাড়ি চালানো হচ্ছে। আমরা ওনাদের বলেছিলাম ওখান থেকেই লাইনটাকে নলা হয়ে জামতারা পর্যন্ত জোড়ার ব্যবস্থা করতে ।তাহলে শুধু যাত্রী নয় মাল পরিবহনের ক্ষেত্রেও রেল উপকৃত হবে এবং বাংলার সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের আর্থিক যোগাযোগ আরো অনেক বেড়ে যাবে। বিশেষ করে ঝাড়খণ্ডের নলা ,দুমকা এবং পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের গ্রামীণ এলাকার যাত্রীরা অত্যন্ত উপকৃত হবেন। আমাদের এই বৈঠকে ডি আর এম জানিয়েছেন তারা একটি নির্দিষ্ট প্রস্তাব আমাদের কথামতো তৈরি করে পূর্ব রেল মারফত রেল পর্ষদে পাঠিয়েছেন। আমরা সরাসরি চেষ্টা করছি রেলমন্ত্রীর সাথে বিষয়টা নিয়ে কথা বলে দ্রুত সমীক্ষা করে কাজটা শুরু করতে। ওই এলাকাটি ইসিএলের। ওখানে অবৈধ কয়লা খননের পর যেসব বড় বড় গর্ত রেললাইনের নিচে হয়ে আছে সেগুলো ভরাট করার জন্য আমরা বহুবার বলেছি। ই সি এল এর উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের সাথে ওই নিয়ে আমার বৈঠক হয়েছে। কিন্তু ওরা ভরাট করছে না। এবার আমি ইসিএল এর বিরুদ্ধে সোজা আদালতে যাব এই বিষয়টিকে নিয়ে।



অন্যদিকে আসানসোল ডিভিশনের অতিরিক্ত ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার মুকেশ কুমার মিনা বলেন কয়েকদিন আগেই ডিআরএম সাহেব এবং আমাদের ইঞ্জিনিয়ার বন্দনা সিনহা গিয়েছিলেন রাঁচিতে অধ্যক্ষর সাথে বৈঠক করতে। তার আগে গত আগস্ট মাসে আমিও আলাদা করে রাঁচিতে এই বিষয়ে বৈঠক করেছি । ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, বিধানসভার অধ্যক্ষ এবং এলাকার সংসদ রাও চাইছেন জামতারা থেকে ভিমগড় পর্যন্ত রেললাইন চালু করে দেওয়া হোক। সেই মতো আমাদের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাব আমরা পূর্ব রেলকে পাঠিয়েছি এবং শুনেছি সেটা রেল পর্ষদে গেছে। আসানসোলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন এবার রেল পর্ষদ সার্ভে সহ অন্যান্য বিষয় সিদ্ধান্ত নেবে। এডিআরএম মুকেশ কুমার মিনা বলেন ই সি এল এর এলাকা হওয়া সত্ত্বেও ওখানে যে অবৈধ খননে আমাদের যাত্রী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়েছে তা নিয়ে অনেক এফআইআর করা হয়েছে এবং ই সি এল কে চিঠিও দেয়া হয়েছে।
ই সি এল এর সম্প্রতি দায়িত্বপ্রাপ্ত চিফ সিকিউরিটি অফিসার শৈলেন্দ্র কুমার সিং বলেন সাধারণত এই ধরনের অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ইসিএল ব্যবস্থা নেয়। ওখানে আগে নিশ্চয়ই ভরাট করা হয়েছে ।তবু আবার কেন সমস্যা দেখা দিয়েছে তা খোঁজ নিয়ে তবেই বলতে পারব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *