ASANSOL

রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে-স্কুলে জয় হিন্দ বাহিনী গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল : মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শিক্ষা মন্ত্রক রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে স্কুলে জয় হিন্দ বাহিনী গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। সামাজিক কাজকর্ম থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য গঠন এবং বিপর্যয় মোকাবেলায় নিজেরা নিজেদের স্বার্থে অন্তত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই বাহিনীকে প্রশিক্ষিত করে তোলা হবে। প্রথম পর্যায়ে রাজ্য সরকার সারা রাজ্যের ১০০ টি স্কুলের ৪০০০ ছাত্রকে এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবে। এজন্য রাজ্যে জয় হিন্দ বাহিনীর চারটি ব্যাটেলিয়ানের কথা সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এই চারটি ব্যাটেলিয়ান হলো কলকাতা, জঙ্গলমহল ব্যারাকপুর এবং উত্তরবঙ্গ।
এই চার বাহিনী বা ব্যাটেলিয়ানের মধ্যে দুই বর্ধমান সহ বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মেদিনীপুর ,ঝাড়গ্রাম মিলিয়ে থাকছে জঙ্গলমহল বাহিনী ।

পশ্চিম বর্ধমানের জেলা শিক্ষা দপ্তরের দায়িত্বে থাকা জেলা শিক্ষা আধিকারিক বা ডিইও তমজিৎ চক্রবর্তী বুধবার এই সময়কে জানান পশ্চিম বর্ধমান জেলায় যে তিনটি বিদ্যালয় কে এই বিষয়ের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে ।সেগুলি হল ঢাকেশ্বরী হাই স্কুল, গৌরান্ডী হাই স্কুল এবং কেন্দা হাই স্কুল। প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ই ৪০ জন করে অর্থাৎ এই জেলা থেকে ১২০ জন পড়ুয়াকেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ।এজন্য ছাত্র ছাত্রীদের শপথ নেওয়ার কাজ শুরু হলো এদিন। প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হবে চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে। এই প্রশিক্ষণ দুই সপ্তাহ ধরেই চলবে ।প্রশিক্ষণ দেবার জন্য ইতিমধ্যেই সিভিল ডিফেন্স , বিপর্যয় মোকাবেলা দপ্তর সহ জেলা প্রশাসনের বেশ কিছু দপ্তরের আধিকারিকরা নিজেরাই প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

জয় হিন্দ বাহিনীর সাথে যুক্ত পড়ুয়াদের কি ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ? এই প্রশ্নের উত্তরে তমজিত বলেন শরীর শিক্ষা বা ব্রতচারীর নানান দিক যেমন থাকবে ,তেমনি সামাজিক কাজে বা বিপর্যয় মোকাবেলায় কিভাবে নিজেদের এগিয়ে আসতে হয় তারও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এইসব ছাত্ররা পরবর্তীকালে সেই কাজটি করবেন। যেমন এনসিসিতে নানান ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়া হয় তার চেয়েও বেশি প্রশিক্ষণ এখানে দেয়া হবে। সর্বোপরি এটি সম্পূর্ণভাবে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের অধীনে থাকা একটি কর্মসূচি। এনসিসি তে যেমন আলাদা পোশাক থাকে তেমনি জয় হিন্দ বাহিনীতে আলাদা পোশাক থাকবে এবং সেই সঙ্গে আলাদা লোগো থাকবে। এই প্রশিক্ষণ এর মধ্যে দিয়ে এদের সমাজকর্মীর মানসিকতাও গড়ে উঠবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
মাত্র কিছুদিন আগেই দেখা গেল এনসিসি অর্থ বরাদ্দ নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বক্তব্য রাখা শুরু করেছিলেন কোন কোন কেন্দ্রীয় আধিকারিক ।যা নিয়ে রাজ্য জুড়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছিল ।

মনে করা হচ্ছে আগামী দিনে এই এনসিসির
চেয়েও শক্তিশালী জয় হিন্দ বাহিনী গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
পশ্চিম বর্ধমান জেলায় তৃণমূলের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা সেলের প্রধান শিক্ষক রাজিব মুখোপাধ্যায় বলেন এটা অত্যন্ত সময়চিত সিদ্ধান্ত ।এজন্য আমি মুখ্যমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। পড়াশোনার পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের সামাজিক দায়বদ্ধতা কথা স্মরণ করিয়ে দেবে এই ধরনের প্রশিক্ষণ

।একই সঙ্গে অন্যান্য ছাত্রছাত্রীরাও কোনো সমস্যায় পড়লে কি করতে হবে কি করতে হবে না সেটাও এরা কিন্তু বুঝিয়ে দিতে পারবে। আগামী দিনে সমস্ত স্কুলগুলিতে যাতে এই ধরনের বাহিনী গড়ে তোলা যায় তার আবেদনও আমরা শিক্ষা মন্ত্রকের কাছে একই সঙ্গে রাখছি। এমসিসির অর্থ বরাদ্দ নিয়ে সম্প্রতি যে ধরনের বিতর্ক আমরা কেন্দ্র সরকারের প্রতিনিধির কাছ থেকে দেখেছিলাম তাতে সত্যিই খারাপ লাগছিল ।সে ক্ষেত্রে রাজ্যজুড়ে এমন একটি বিকল্প বাহিনী গড়ে তোলা অত্যন্ত সময়চিত প্রয়াস বলে আমরা মনে করি। জামুরিয়ার কেন্দা হাই স্কুলের ছাত্রীরা শপথ নেওয়ার পর বললেন আজ খুব গর্ববোধ হচ্ছে এমন একটা বাহিনীর সাথে নিজেদের যুদ্ধ করার সুযোগ পেয়ে।

Leave a Reply