ASANSOL

আসানসোলে হোটেল মালিককে গুলি করে খুনের ঘটনার তদন্তে সিআইডি

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ আসানসোল শহরের একটি হোটেল মালিককে এলোপাথাড়ি গুলি করে খুনের ঘটনার ১৬ ঘন্টা পরে শনিবার দুপুর পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি । এদিকে এই ঘটনার তদন্ত ভার নিয়েছে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা দপ্তর সিআইডি। শনিবার সকালে কলকাতার ভবানী ভবন থেকে ৬ সদস্যর একটি দল আসানসোলের জিটি রোডের ভগৎ সিং মোড় সংলগ্ন সেনরেল রোডের ঐ হোটেলে এসে পৌঁছান। তারা আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশের আধিকারিক, হোটেল কর্মী ও মৃত হোটেল মালিকের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।

অন্যদিকে, এদিন দুপুরের পরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে হোটেল মালিক অরবিন্দ ভগতের মৃতদেহর ময়নাতদন্ত করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। ইতিমধ্যেই পুলিশ সেই মৃতদেহ দূর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতাল নিয়ে আসানসোলে নিয়ে আসছে।
এদিকে, এই ঘটনায় রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেস ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে আক্রমন করেন আসানসোল দক্ষিণ বিধান সভা বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্যের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল।


আসানসোল দক্ষিণ থানার পিপি বা আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ লাইন ও রাজ্যের আইন ও শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটকের বাড়ি থেকে সামান্য কিছু দূরে জিটি রোডের ভগৎ সিং মোড় সংলগ্ন সেনরেল রোডে শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে আটটা নাগাদ হওয়া এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে ।
উল্লেখ্য , শুক্রবার সন্ধ্যায় দুই বন্দুকবাজ আচমকাই ঐ হোটেলের মধ্যে ঢুকে পড়ে। তারা লবিতে সোফায় বসে থাকা হোটেল মালিক অরবিন্দ ভগত (৫৫) কে খুব কাছ থেকে পরপর বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি করে। সেই সময় তিনি দুই ক্লায়েন্টের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তাদের সামনেই দুই বন্দুকবাজ তাকে গুলি করে। হোটেল মালিকের সঙ্গে থাকা দুজন ঘটনায় হতচকিত হয়ে পড়ে। তারা দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেন। গুলির শব্দ পেয়ে ছুটে আসেন হোটেলের নিরাপত্তা রক্ষী কালিপদ বাউরি। তাকে বন্দুক তাক করে বন্দুকবাজরা। এরপর তারা হেঁটে হোটেল থেকে বেরিয়ে চলে যায়।
এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে গোটা এলাকায়।

ঘটনার খবর পেয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ ছুটে আসে। ঘটনায় পুলিশ তদন্তে নেমেছে। পুরো ঘটনাটি ধরা পড়েছে হোটেলে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরায়।
সঙ্গে সঙ্গে গুলিবিদ্ধ হোটেল মালিককে সেনরেল রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার শারীরিক অবস্থার কথা ভেবে দূর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয় ।
পুলিশ জানায়, হোটেল মালিক অরবিন্দ ভগত অন্যদিনের মতো তার হোটেলের লবিতে বসে ছিলেন। এমন সময় হঠাৎ বন্দুকধারীরা হোটেলে ঢুকে তাকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়।
শুক্রবার রাতে ঐ হোটেলে আসেন আসানসোল দূর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার এন সুধীর কুমার নীলকান্তম। তিনি বলেন, সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দূষ্কৃতিদের খুঁজে বার করা পুলিশের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ।


জানা গেছে, শুক্রবার রাতভর বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমান্ত এলাকায় পুলিশ নাকা চেকিং করে। বিভিন্ন এলাকায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করা হলেও, দুই বন্দুকবাজের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।
আরো জানা গেছে, হোটেল ছাড়া জমি কেনাবেচার ব্যবসা আছে অরবিন্দ ভগতের।এই ঘটনার সেই ব্যবসার কোন যোগ সূত্র আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি দেখা হচ্ছে পিছনে কারা রয়েছে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *