ASANSOL

কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়, গেট আটকে বিক্ষোভ, প্রশাসনিক ভবনে ঢুকতেই পারলেন না উপাচার্য, এবার আন্দোলনে পড়ুয়াদের একাংশ

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও দেব ভট্টাচার্যঃ ( Agitation at KNU Asansol ) গেট আটকে বিক্ষোভ স্লোগান। তার তাতে বাধা পেয়ে মঙ্গলবার বিকেলে আসানসোলের কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে ঢুকতেই পারলেন উপাচার্য বা ভাইস চ্যান্সেলার ( ভিসি) ডঃ সাধন চক্রবর্তী। আর এই বাধায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ ও অসন্তুষ্ট ভিসি বেশ কিছুক্ষুন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকার পরে, বেরিয়ে যান। যাওয়ার সময় তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে যান যে, তিনি এই গোটা বিষয়টি তার নিয়োগ কর্তা আচার্য তথা বাংলার রাজ্যপাল ও সরকারকে জানাবেন। তবে ভিসির এই হুঁশিয়ারীতে বিন্দুমাত্র বিচলিত নন, তার পদত্যাগের দাবিতে গত এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কর্মীরা। বরং দেখতে গেলে ভিসি হঠানোর এই আন্দোলন মঙ্গলবার আরো তীব্রতর হয়েছে।

এদিন অধ্যাপক ও কর্মীদের আন্দোলনে সামিল হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ। মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ঐক্য মঞ্চ ও ওয়েবকুপার ডাকে একটি বিক্ষোভ সভা হয়। সেই সভা থেকে আওয়াজ তুলে বলা হয়েছে যতদিন না তাদের তিনটি দাবি মানা না হচ্ছে, ততদিন এই আন্দোলন চলবে।
এরই মধ্যে এদিন বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেট দিয়ে উপাচার্য ভেতরে ঢোকেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবনের মধ্যে তিনি ঢুকতেই পারলেন না। সেই ভবনের গেট আটকে তখন অবস্থানে বসে রয়েছেন অধ্যাপক, শিক্ষা কর্মী ও বেশ কিছু পড়ুয়া। তারা গেট বন্ধ করে ব্যাপক স্লোগান দিতে দিতে বিক্ষোভ দেখান। কোনমতেই ভিসিকে ভেতরে যেতে দেওয়া হয়নি।


পরে উপাচার্য বলেন, ওদের দাবি এই বেআইনি অবস্থানে বসে তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। যে আন্দোলনটাকে আমি নিজে সোমবার নোটিশ দিয়ে বেআইনি বলে জানিয়েছি সেই জায়গায় বসে আলোচনা সম্ভব নয়। আমার অফিস তালা বন্ধ করা আছে। সেখানে আমার অফিসের কর্মীরাও ঢুকতে পারছেন না। সেখানে আমি বসবো এদের সঙ্গে? তারা যদি কোন আলোচনা করতে আসেন নিশ্চয়ই করবো। সেটা আমার অফিসে বসে ও একবারে আইন ও নিয়ম মেনে। তিনি আরো বলেন, আমাকে যারা নিয়োগ করেছেন, তাদেরকে গোটা বিষয়টি আমি জানাবো। তিনি এই আন্দোলনে পড়ুয়াদের সামিল হওয়াকে একবারে ভালোভাবে নেননি। উপাচার্য বলেন, অধ্যাপক ও কর্মীরা পড়ুয়াদের মোটিভেট করে নিজেদের সঙ্গে নিয়েছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন-পাঠনেরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে ।প্রশাসনিক কাজকর্ম করা যাচ্ছে না। ডেপুটি রেজিস্টার ও ডেভেলপমেন্ট অফিসার দুজনে অসুস্থ হয়ে বাইরে আছেন।
তাকে ঘিরে ব্যাপক স্লোগান ও ঢুকতে না পেয়ে পরে তিনি আবার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে যান ।


অপরদিকে আন্দোলনকারীদের পক্ষে কলেজ শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার জেলা প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড: বীরু রজক অসমঞ্জ চট্টরাজ ও অন্য অধ্যাপকরা বলেন, আমরা আমাদের দাবির কথা আগেই জানিয়েছি। সেই দাবি মানা না হলে আন্দোলন চলবে। তারা বলেন, আমাদের তিনটি দাবি মানতে হবে। যেখানে আমরা বসে আছি, সেখানে ভিসিকে বসতে হবে আলোচনার জন্য। তিনি কাকে কি বলবে, তা তার ব্যাপার। উনি জানাতেই পারেন। কিন্তু আমরা আমাদের দাবি থেকে সরছি না। আগামী দিনে আরো কি ধরনের আন্দোলন করা হবে, তা সবার সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *