ASANSOL

রেজিস্ট্রার অপসারণে হাইকোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ, প্রাথমিক জয়, দাবি আন্দোলনকারীদের

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ আসানসোলের কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ডঃ চন্দন কোনারকে অপসারণ বা পদ থেকে ডিসচার্জ করার সিদ্ধান্তে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ দে। বুধবার সকালে বিচারপতি এই নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, আগামী ২১ দিন এই রায় বলবৎ থাকবে। ২১ দিন পরে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে জানা গেছে।
কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশ আসার পরে স্বাভাবিক ভাবেই উচ্ছ্বসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে গত ১০ দিনেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করা অধ্যাপক ও শিক্ষা কর্মীরা। তাদের দাবি, এদিনের কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশ তাদের প্রাথমিক জয়।

file photo


অন্যদিকে, উপাচার্য ডঃ সাধন চক্রবর্তী এই নির্দেশের পরে বলেন, এটা একটা ইন্টার্মিং স্টে অর্ডার বা অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ। উপাচার্যের এই ক্ষমতা আছে কি না, এই ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কর্মীরা একটা প্রশ্ন তুলেছেন। এই নিয়ে আবার শুনানি হবে। তার জন্য একটা সময় দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন , সুপ্রিম কোর্টের একটা নির্দেশ আছে, যেখানে উপাচার্যের এই ক্ষমতা আছে। কারণ ঐ রেজিস্ট্রার স্থায়ী ছিলেন না। তিনি প্রভেশনারি পদে ছিলেন।
এদিকে, ওয়েবকুপার জেলা সভাপতি অধ্যাপক বীরু রজক ও সারা বাংলা তৃনমুল শিক্ষা বন্ধু সমিতির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সচিব দেবাশীষ বন্দোপাধ্যায় বলেন, হাইকোর্ট যে কিছু একটা করবে, তা আমাদের আশা ছিলো। উপাচার্য আইন ভেঙে যে কাজ করেছেন, তা প্রমাণ হলো। আমাদের জয় হবেই। উপাচার্যকে সরানো না পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।


রেজিস্ট্রার উপাচার্যের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে আগেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। করেছিলেন একটি পিটিশন। তার ভিত্তিতেই বুধবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ দে ‘র এজলাসে শুনানি হয়।
প্রসঙ্গতঃ, গত ১৪ মার্চ পদ থেকে ডিসচার্জ বা অপসারণ করার কথা জানিয়ে উপাচার্য রেজিস্ট্রার ডঃ চন্দন কোনারকে চিঠি দিয়েছিলেন। তাতে বলা হয়েছিলো, রেজিস্ট্রারের কাজ সন্তোষজনক নয়। তাই তাকে কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ৩২(৩) ধারায় পদ থেকে ডিসচার্জ করা হচ্ছে।
এর আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কর্মীরা উপাচার্যের বিরুদ্ধে একাধিক দূর্নীতির অভিযোগ তুলে আন্দোলন করছিলেন। কিন্তু রেজিস্ট্রারকে সরানোর পরে ওয়েবকুপার জেলা সভাপতি অধ্যাপক বীরু রজক ও বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের কনভেনার অধ্যাপক সজল কুমার ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে অধ্যাপক ও কর্মীরা উপাচার্যের বিরোধিতায় সরাসরি আন্দোলনে নেমে পড়েন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে ধর্ণা অবস্থানে বসে পড়েন। সেই আন্দোলন এখনো চলছে।


অভিযোগ রয়েছে, আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট অফিসার মহেশ্বর মালো দাসকে শারীরিকভাবে নিগৃহীত করেছেন। তাকে দিয়ে জোর করে তার দায়িত্বে থাকা একাদিক অতিরিক্ত পদ থেকে পদত্যাগ করানো হয়েছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে উপাচার্য আসানসোল উত্তর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ইতিমধ্যেই। পাশাপাশি, অধ্যাপক ও কর্মীদের আইন ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে আন্দোলন ও পোষ্টার দেওয়ায় সতর্ক করে উপাচার্য চিঠি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকেলে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আসেন। কিন্তু তাকে প্রশাসনিক ভবনে ঢুকতেই দেওয়া হয় নি।

Leave a Reply