ASANSOL-BURNPUR

বার্ণপুরে ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রী খুন, তদন্তে সিআইডি

ধৃতদের নিয়ে এলাকায় অফিসাররা, মোবাইলের খোঁজে পুকুরে তল্লাশি

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ বার্ণপুরে আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছাত্রী খুনের ঘটনায় তদন্তভার নিলো রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা দপ্তর সিআইডি। শুক্রবার সিআইডির ৫ সদস্যের একটি তদন্তকারী দল ঘটনাস্থলে আসে। তারা তদন্ত শুরু করে এই খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা অন্যতম প্রধান দুই অভিযুক্তকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। একইসঙ্গে সিআইডির তদন্তকারী দল নিহত ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন। সিআইডির তদন্তকারী দল ঘটনাস্থলের কাছে থাকা একটি পুকুরেও ছাত্রীর মোবাইলের খোঁজে তল্লাশি চালায়, বেশ কয়েকজন জলে নামিয়ে। জেরায় ধৃতরা সিআইডির অফিসারদের বলেছি, তারা পুকুরের পাড় থেকে ছাত্রীর মোবাইল ফোনটা জলে ছুঁড়ে ফেলেছে। সেই মতো এদিন একইভাবে পুকুরের পাড় থেকে ইঁটের একটা টুকরো জলে ছুঁড়ে ফেলা হয়। ঠিক যে জায়গায় টুকরোটি গিয়ে পড়ে, সেখানে জলে তল্লাশি চলে দীর্ঘক্ষণ ধরে। কিন্তু, সেই মোবাইলের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।


উল্লেখ্য, এর আগেই হিরাপুর থানার পুলিশের হাতে মোবাইলে কথোপকথনের একটা রেকর্ডিং পুলিশের হাতে এসেছে। তাতে, জানা গেছে, খুন হওয়ার আগে অর্থাৎ বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় কোয়েল এক যুবকের কথা হচ্ছে। সেই কথায় সুমিতা হেমব্রমের নাম পাওয়া যায়। সুমিতা একজনের থেকে কিছু টাকা পায়। সুমিতার কথায় কোয়েল সেই টাকা আনতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছে। পুলিশ সেই রেকর্ডিং পরীক্ষা করে দেখছে।
কলেজ ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই আসানসোলের হিরাপুর থানার পুলিশ খুনের ঘটনায় তদন্ত নেমে তিনজনকে এই খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করে। সেই তিনজনের নাম হলো সুমিতা হেমব্রম, সমীর মাড্ডি ও রোহিত হাঁসদা। এই তিনজন আপাততঃ ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে ও তদন্তের স্বার্থে সিআইডি এই তিনজনকে আরো জেরার জন্য ভবানীভবনে নিয়ে যেতে পারে বলে জানা গেছে।


প্রসঙ্গতঃ বার্ণপুরের বাসিন্দা আসানসোল বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী কোয়েল হাঁসদা একটা ফোন পেয়ে সোমবার সন্ধ্যা সাতটার সময় বাড়ি থেকে বেরিয়ে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যায়। মঙ্গলবার তার মৃতদেহ বাড়ি থেকে বেশ কিছু দূরে হিরাপুর থানার নিউটাউন এলাকায় ১২ নং রাস্তায় বিপিএল কলোনির পেছনে কচুবন থেকে উদ্ধার করেছিলো পুলিশ। মৃত ছাত্রীর বাবা কুলটির মিঠানি হাইস্কুলের শিক্ষক লক্ষীরাম হাঁসদা ও পরিবারের অভিযোগ ছিলো কোয়েলকে প্রতিহিংসা থেকে পরিকল্পনা করে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে। আসানসোল জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পরে জানা গেছিলো, গলা টিপে শ্বাসরোধ করে ঐ ছাত্রীকে খুন করা হয়েছে। খুনের আগে, তার উপর শারীরিক অত্যাচারও করে খুনিরা। সেই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষেরা। তারা হিরাপুর থানার সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। বিজেপির তরফেও হিরাপুর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো হয়।

Leave a Reply