ASANSOL

প্রোমোটারের কাছ থেকে টাকা চাওয়া নিয়ে অডিও ভাইরালে রাজনৈতিক বিতর্ক, তৃনমুল বিজেপির চাপানওতোর

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ আসানসোল শহর জুড়ে গত কয়েক দিন ধরে একটি অডিও ভাইরাল হয়েছে। সেই অডিও নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। একইসঙ্গে শুরু হয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেস ও কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির মধ্যে চাপানওতোর। দুই দলের নেতারা একে অপরকে আক্রমণ করেছেন। ( এই ভাইরাল হওয়া অডিওর সত্যতা অবশ্য ” বেঙ্গল মিরর “র তরফে যাচাই করা হয় নি। )
ভাইরাল হওয়া অডিওতে দুই পুরুষ কণ্ঠকে কথা বলতে শোনা যাচ্ছে। অভিযোগ ও দাবি করা হয়েছে, তার মধ্যে একজন হলেন আসানসোল পুরনিগমের জিটি রোডের ৪০ নং ওয়ার্ডের তৃনমুল কংগ্রেসের কাউন্সিলর মৌমিতা বিশ্বাসের স্বামী রাজু বিশ্বাস। অন্যজন হলেন প্রোমোটার পলাশ সাহা। রাজু বিশ্বাস ফোন করে পলাশ সাহার কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা চাইছেন। পলাশ সাহা সেই পরিমাণ টাকা দিতে অস্বীকার করে দর কষাকষি করছেন। অন্যদিকে রাজু বিশ্বাস পলাশ সাহাকে বলছেন, তার স্ত্রীর কাউন্সিলর হওয়ার লড়াইয়ের জন্য ২০ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন। দুজনের মধ্যে প্রায় তিন মিনিট কথা হয়। যা ভাইরাল হওয়া অডিও থেকে জানা যায়।
আসানসোল পুরনিগমের ৪০ নং ওয়ার্ডের আড়াডাঙ্গা এলাকায় একটি বহুতল তৈরী করছেন এই প্রোমোটার পলাশ সাহা বলে জানা গেছে।


এদিকে, সোমবার এই প্রসঙ্গে রাজু বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, ঐ আওয়াজ তার নয়। তিনি বলেন, আমাকে বদনাম করার জন্য এই অডিও তৈরি করে বাজারে ছাড়া হয়েছে। আমি ঐ প্রোমোটারকে কোন ফোন করিনি। ঐ প্রোমোটারি বারবার আমাকে ফোন করে টাকা দিতে চাইছেন। প্রয়োজন হলে, তা আমি দেবো। তিনি আরো বলেন, ঐ প্রোমোটার কিভাবে এখানে ঐ বহুতল তৈরী করছেন, তা সবাই জানে। আমি পুরনিগমকে জানিয়েছি কাউন্সিলারের প্রতিনিধি হিসাবে। কাজ আইনমতো না হওয়ায় স্টপ অর্ডার হয়েছে। কিন্তু তারপরেও কাজ চলছে। তার আরো দাবি, প্রোমোটার আমাকে হুমকি দিয়েছে। যদিও, এই ব্যাপারে তিনি কোথাও কোন অভিযোগ দায়ের করেননি।


অন্যদিকে, প্রোমোটার বলেন, আমি আইন মেনে কাজ করছি। তারপরেও চাপ আসছে। ফোন করা হচ্ছে। তার দাবি, আমি যদি বেআইনী কিছু করি, তাহলে পুরনিগম তো কাজ বন্ধ করে দেবে। কই তা তো হয়নি।
এদিকে, এই নিয়ে শাসক দলকে আক্রমন করেছে বিজেপি। পদ্ম শিবিরের রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, তৃনমুল কংগ্রেস মানেই দূর্নীতি ও কাটমানি। আসানসোল পুরনিগমের ৪০ নং ওয়ার্ড শুধু কেন অনেক ওয়ার্ড আছে যেখানে শাসক দলের কাউন্সিলররা তোলাবাজি চালাচ্ছেন। এটা আমরা নই, তৃনমুল কংগ্রেসের এক কাউন্সিলরই বলেছেন। কংগ্রেসের এক কাউন্সিলরও অভিযোগ করেছেন। তিনি আরো বলেন, আমরা জেলাশাসককে বলেছি। এরপর পুর কমিশনারের কাছে অভিযোগ করবো।


পাল্টা আসানসোল পুরনিগমের মেয়র পারিষদ গুরুদাস ওরফে রকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ঐ অডিও আমরা পেয়েছি। দলের তরফে তা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। তাতে যদি দেখা যায়, ঐ অডিওতে টাকা চাওয়া ব্যক্তি ৪০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের স্বামী, তাহলে পদক্ষেপ নিতে উচ্চ নেতৃত্বকে জানানো হবে। তিনি বলেন, কোন দলের কোন নেতা কি বলছেন, তা নিয়ে ভাবছি না। মেয়র আগেই জানিয়ে দিয়েছেন কোন বেআইনি নির্মাণ বরদাস্ত করা হবেনা। ইতিমধ্যেই অনেক বেআইনি নির্মাণকে ভাঙা হয়েছে। জরিমানা নেওয়া হয়েছে। কাউকে রেয়াত করা হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *