ASANSOL

শিল্পাঞ্চলে ” বাংলা বর্ষবরণ ” হালখাতার পুজো, মন্দিরে মন্দিরে ঢল

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়* আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস আগে থেকেই দেওয়া ছিলো। তাই শনিবার তপ্ত দিনে রেকর্ড তাপমাত্রার পারদকে দূরে সরিয়ে ” পয়লা বৈশাখে” র মধ্যে দিয়ে বাংলা বর্ষবরণ হলো আসানসোল শহর তথা গোটা শিল্পাঞ্চল জুড়ে। দোকানে দোকানে হলো হালখাতার পুজো। মন্দিরে মন্দিরে পুজো দেওয়ার জন্য ভোরবেলা থেকে সাধারণ মানুষের ঢল।
এদিন সকালে আসানসোল উৎসব কমিটির তরফে বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিনে আসানসোল শহরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিলো।

শহরের দুই প্রান্ত জিটি রোডের গীর্জা মোড় ও পুরনো রামকৃষ্ণ মিশন মোড় থেকে দুটি আলাদা করে শোভাযাত্রা বেরোয়। দুটি শোভাযাত্রা গিয়ে একসঙ্গে শেষ হয় জিটি রোডের রাহালেন মোড় সংলগ্ন মিউনিসিপ্যাল পার্কে। শোভাযাত্রায় ছিলেন রাজ্যের আইন ও শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটক, পান্ডবেশ্বরের বিধায়ক তথা পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃনমুল কংগ্রেসের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, আসানসোল পুরনিগমের পুর চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়, ডেপুটি মেয়র ওয়াসিমুল হক, মেয়র পারিষদ গুরুদাস ওরফে রকেট চট্টোপাধ্যায়, ইন্দ্রানী মিশ্র সহ অন্যান্য পুর কাউন্সিলর ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষেরা।

এদিন সন্ধ্যা মিউনিসিপ্যাল পার্কে বর্ষবরণ উপলক্ষে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়।
নতুন বছরের প্রথম দিনে আসানসোলের অন্যতম প্রাচীন মা কল্যানেশ্বরী মন্দিরে সকাল থেকেই ছিলো ভক্তদের ভিড়। পুজোর ডালি নিয়ে ভক্তরা লম্বা লাইন দিয়ে একে একে পুজো দেন মন্দিরে। গোটা মন্দিরকে সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছিলো । সারা বছর যেন পরিবারের মঙ্গল হয় তার প্রার্থনা করা হয়।


একইভাবে, ভিড় ছিল আসানসোলের ২ নং জাতীয় সড়কের ঘাঘরবুড়ি মন্দির, বারাবনির বালিয়াপুর কালিমন্দির, কুলটির ছিন্নমস্তা মন্দির, চিত্তরঞ্জনের সিমজুরি মন্দির, আসানসোলের হটন রোড কালি মন্দির, এসবি গরাই রোডের শ্রীপল্লী কালি মন্দির সহ প্রায় সব মন্দিরেই।
বিকেলের দিকে রোদ কমতে ও তাপমাত্রার পারদ সামান্য নামতেই আসানসোল বড়বাজার সহ শিল্পাঞ্চলের রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া, কুলটি, বরাকর, বারাবনি, নিয়ামতপুর, চিত্তরঞ্জন, রুপনারায়নপুর ও বার্ণপুরের বাজারের পাড়ায় পাড়ায় দোকানে সাধারণ মানুষের আনাগোনা শুরু হয়। ঠান্ডা পানীয়তে গলা ভিজিয়ে হাতে নতুন ক্যালেন্ডার ও মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে দোকান থেকে বেরোনো। সবমিলিয়ে একবারে বাঙালিয়ানার মুড।


তবে, এদিন সকাল থেকে গত কয়েকদিনের মতোই টি টোয়েন্টির ধাঁচে ব্যাট করেছে তাপমাত্রার পারদ। গত ৫ বছরের পয়লা বৈশাখের দিনের সব রেকর্ড ভেঙে এদিন পারদ উঠেছিলো একবারে ৪২ ডিগ্রিতে বলে আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে। এদিন অবশ্য গরমের সঙ্গে বাতাসে আপেক্ষিক আদ্রতার পরিমাণে তারতম্য হওয়ায় মাঝে মধ্যে ঘাম হয়েছিলো। যে কারণে অস্বস্তি একটা ছিলো। আবহাওয়া দপ্তর বলেছে, এমনটা এখনো আরো আগামী চারদিন থাকবে। ঝড়বৃষ্টির কোন সম্ভাবনা নেই।
যদিও, এই আবহাওয়া ও গরম বাঙালির বর্ষবরণকে হারাতে পারেনি।

Leave a Reply