RANIGANJ-JAMURIA

রানীগঞ্জের আলুগড়িয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সঙ্গে পালিত হল আন্তর্জাতিক নার্স দিবস

বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জি, রানীগঞ্জ : রানীগঞ্জের আলু গড়িয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রথমবার শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হল আন্তর্জাতিক নার্স দিবস। যে নার্সেরা এক সময় নিজেদের বাড়ির কথা ভুলে গিয়ে, শুধুমাত্র নিজের দায়িত্ব, কর্তব্য ও শপথ গ্রহণের বিষয়কে স্মরণে রেখে, বিগত দুটি বছর করোনা মহামারীর সময়কালে নিজেদের জীবনকে বাজি রেখে করে চলেছিল নার্সিং পরিষেবা প্রদানের মধ্যে দিয়ে অসংখ্য রোগীর সেবা যত্ন। শুক্রবার 12ই মে সেই সেবিকা বা নার্সদের সম্মান জানানোর লক্ষ্যে, বিশ্বব্যাপী আয়োজন করা হয়, আন্তর্জাতিক নার্স দিবস।

মূলত ব্রিটিশ মহিলা “নাইটেঙ্গেল ফ্লোরেন্স” যিনি ইতালিতে জন্মগ্রহণ করেন, পরবর্তীতে কর্মসূত্রে তিনি ইংল্যান্ডে সেবিকার কাজ করেন, সে এক সময় ১৮৫৪ সালে প্রিমিয়ান যুদ্ধে আহত সৈনিকদের সেবায় নিবিড়ভাবে ব্রতী থেকে, অক্লান্ত পরিশ্রম করে, সেনাদের সেবা করেন। সে সময় মডার্ন নার্সিং এর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে খ্যাতি পান তিনি, এছাড়াও নার্সিং এর যে রীতি রয়েছে তা থেকে দূরে সরে, সেনা জওয়ানদের কিভাবে জীবাণুমুক্ত পরিবেশ তৈরি করে, তাদের জীবনযাত্রার মান বাড়িয়ে, মৃত্যুহার কমিয়ে, সুস্থ করে তোলা যায় অসংখ্য সেনাকে, সেই বিষয়কে লক্ষ্য করেই, একসময় ফ্লোরেন্সকে “নাইটেঙ্গেল” উপাধি ও তার সাথেই তাকে “লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প” উপাধিতেও ভূষিত করা হয়।

সেই সেবিকার অনবদ্য প্রচেষ্টার কথা মাথায় রেখে ও নার্সিং এর নতুন দিগন্ত খুলে দেওয়ার বিষয় কে লক্ষ্য করেই, তার জন্মদিনটিকে আন্তর্জাতিক নার্স ডে হিসেবে পালন করা হয়। বিগত দুটি বছর করোনা মহামারীর কারণে নার্স বা সেবিকারা এই বিশেষ দিনটি পালন করার সুযোগ না পেলেও, এবার কিন্তু তারা তাদের সম্মানের এই বিশেষ দিনটিকে পালন করতে বিশেষভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করলেন। শুক্রবার এ বিষয়ের প্রেক্ষিতে রানীগঞ্জের আলুগোড়িয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বি এম ও এইচ দফতরে পালিত হল আন্তর্জাতিক নার্স দিবস। এদিন রানীগঞ্জ এলাকার সব কটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্য কর্মীরা, ও A.N.M ও G.N.M নার্সেরা একত্রিত হয়ে নাইটেঙ্গেল ফ্লোরেন্সের ২০৩ তম জন্ম দিবস পালন করেন শ্রদ্ধার সঙ্গে। এদিন প্রদীপ প্রজ্বলন করে, তার প্রতিকৃতিতে মাল্য দান করে, কেক কেটে পালিত হয় বিশ্ব নার্স দিবস।

এদিন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নার্সেরা এই দিনটিকে নিজেদের মতো করে কাটানোর লক্ষ্যে, বিভিন্ন নাচ, গান, ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে মেতে ওঠেন। সকলেই একে অপরকে কেক খাইয়ে মিষ্টিমুখ করে, কেন এই দিনটিকে পালন সে বিষয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। এদিনের এই কর্মসূচিতে এলাকার প্রায় 84 জন নার্সদের সাথে উপস্থিত হন D.P.H.N.O টিংকু চ্যাটার্জি আলুগড়িয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের B.M.O.H ডাক্তার এরশাদ আহমেদ, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের হেড নার্স জিনিয়া সরকার প্রমুখ। এদিনের এই কর্মসূচি প্রসঙ্গে এক নার্স করোনার অতিমারির সময়কাল ও বিভীষিকাময় তার জীবন যাত্রার কথা তুলে ধরেন নিজের বক্তব্যে।

Leave a Reply