ASANSOL

কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় : তিন মাসের অতিরিক্ত দায়িত্বের সময়সীমা শেষ উপাচার্যের, এবার কে? শুরু জল্পনা

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে চাকরির মেয়াদ গত ২৮ এপ্রিল তিন মাসের জন্য বেড়েছিলো বা এক্সটেনশন হয়েছিলো ডঃ সাধন চক্রবর্তীর। এই নির্দেশ দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই মর্মে রাজ ভবনের তরফে একটি বিঞ্জপ্তিও জারি হয়েছিল। সেই মতো ঐ তিন মাসের অতিরিক্ত দায়িত্ব পাওয়া মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২৮ মে রবিবার।


জানা গেছে, এরই মধ্যে দুদিন আগে অর্থাৎ গত শুক্রবার রাজ্য উচ্চ শিক্ষা দপ্তরে চিঠি লেখেন উপাচার্য ডঃ সাধন চক্রবর্তী। তাতে তিনি জানতে চান, তার চাকরির মেয়াদ সরকারি ভাবে কবে শেষ? ২৮ মে ? না, ৩১ মে? রবিবার উপাচার্য নিজেই এই কথা জানিয়ে বলেন, দুদিন আগে উচ্চ শিক্ষা দপ্তরে চিঠি দিয়েছি। এদিন পর্যন্ত কোন উত্তর পাইনি। আশা করছি পাবো। তখনই জানতে পারবো। তবে এর মধ্যে রবিবার পর্যন্ত তিনি উপাচার্যের পদ থেকে পদত্যাগ করেননি ।
এর মধ্যে গত ১৩ মে আচমকাই উপাচার্যকে বরখাস্ত করেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস।

১৫ মে কলকাতা হাইকোর্টে এর বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন উপাচার্য। একটা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ মে উপাচার্য নিজে বিচারপতিকে বলেছিলেন, রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস তাকে বরখাস্ত করার চিঠি প্রত্যাহার করে নিলে, তিনি ২৪ ঘন্টার মধ্যে পদত্যাগ করবেন। রাজ্যপালের আইনজীবী হাইকোর্টে আবেদন করে বলেন, আচার্য বরখাস্তের নোটিশ প্রত্যাহার করে নেবেন। বিচারপতিও সেই নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু রাজ্যপালের বরখাস্ত করার চিঠি প্রত্যাহার করার নির্দেশের বয়ান ও তাতে আচার্যের সই না থাকায় উপাচার্য আপত্তি তোলেন। এই নির্দেশে বলা হয়েছিলো, রাজ্যপাল বরখাস্তের চিঠি প্রত্যাহার করছেন। তবে তিনি যেন পদত্যাগ করেন। তাতে সই ছিলো রাজ্যপালের সচিবের।

উপাচার্য রাজভবনে পাল্টা আইনজীবী মারফত চিঠি পাঠিয়ে বলেন, কলকাতা হাইকোর্ট এমন কোন নির্দেশ দেয়নি। আমি নিজের থেকে পদত্যাগ করবো বলেছিলাম। কিন্তু রাজ্যপালের চিঠিতে পদত্যাগ করার উল্লেখ আছে। পাশাপাশি আচার্য হিসাবে তাতে রাজ্যপালের সই থাকার কথা। এই বিষয় দুটি ঠিক করা হলে, আমি পদত্যাগ করবো। পরে চিঠিতে রাজ্যপাল আচার্য হিসাবে সই করেন। কিন্তু চিঠির বয়ান বদলানো হয়নি। তাই উপাচার্য্য পদত্যাগও করেননি। রাজ ভবন থেকে তাকে আর কিছু বলাও হয়নি।


তবে এরই মধ্যে গত ১৪ মার্চ থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু করে দেন অধ্যাপক, অধ্যাপিকা, শিক্ষা কর্মী ও পড়ুয়াদের একাংশ। যা নিয়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়। এই বিষয়টিও কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত যায়। যা নিয়ে বিচারপতি কড়া পর্যবেক্ষনও দেন। ৪৫ দিনের মাথায় নিজেদের দাবি পূরণ হয়েছে বলে জানিয়ে আন্দোলনকারীরা তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করেন।
এখন দেখার, ডঃ সাধন চক্রবর্তীর পরিবর্তে কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদ নিয়ে কি হয়?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *