RANIGANJ-JAMURIA

পঞ্চায়েতে রণকৌশল নিয়ে নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে মহঃ সেলিম, একযোগে আক্রমন তৃনমুল ও বিজেপিকে

বেঙ্গল মিরর, রানিগঞ্জ ও আসানসোল, চরণ মুখোপাধ্যায় ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* লাল ঝান্ডার প্রতি বাংলার মানুষের আস্থা ফিরছে। তাই তো পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় জেলায় মানুষেরা প্রতিরোধ করেছেন, প্রতিবাদ জানিয়েছেন ও সংঘবদ্ধ হয়েছেন। আর এতেই ভয় পেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের রানিগঞ্জে সিপিএমের কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমনই মন্তব্য করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহঃ সেলিম।
এদিন রানিগঞ্জে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় দলের রণকৌশল কি হবে তা ঠিক করতে ও নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সংক্ষিপ্ত সভা হয় মহঃ সেলিমের উপস্থিতিতে। সেই সভায় জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।


পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মহঃ সেলিম বলেন, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের জন্যই বামফ্রন্টের আমলে বাংলায় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চালু হয়। তা গ্রামবাংলার মানুষদের নিয়ে করা হয়েছিলো। কিন্তু তৃনমুল কংগ্রেসের জমানায় সেই ব্যবস্থায় আপাদমস্তক দূর্নীতিতে ভরে গেছে। আমরা আবার আগের মতো স্বচ্ছ, দূর্নীতি মুক্ত ও মানুষের পঞ্চায়েত ফিরিয়ে দিতে চাই। তার দাবি, বাংলার মানুষেরা বামপন্থীদের উপর আস্থা রাখছেন। এখন গোটা দেশ ও রাজ্যে যে লুঠতন্ত্র চলছে, তার বিরোধিতায় মানুষেরা সরব হয়েছেন। রাজ্যে দিদির লুঠ ও দিল্লিতে দাদার লুঠ। কেন্দ্রের চোরেদের পাহারা দিচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্যের চোরেদের পাহারা দিচ্ছে রাজ্য পুলিশ।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে উত্তরবঙ্গে গিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হেলিকপ্টার প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে বিপদের মুখে পড়ে। জরুরি অবতরণের সময় হেলিকপ্টার থেকে নামতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আহত হওয়া ও এই ঘটনা সংবাদ মাধ্যমের কাছে জানতে পারেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। মুখ্যমন্ত্রীর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন মহঃ সেলিম। পাশাপাশি এদিন তিনি এই দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, এর নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত। কারা দোষী, কেন এটা হলো, তা বার করা হোক। কেননা তিনি একজন ভিভিআইপি। তার কটাক্ষ, এর পেছনে আবার সিপিএমের হাত আছে বলে, পরে মাথায় ফেট্টি বেঁধে প্রচারে না বেরিয়ে পড়েন? আগে যেমনটা হয়েছিলো। আসুন শুনব তারই মন্তব্য।আর এই দুর্ঘটনার বিষয় নিয়ে তিনি তদন্ত করার অনুরোধও জানালেন।


এদিন তিনি পাটনা বৈঠক নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃনমুল কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, আগের বিরোধীদের ডাকা একটা বৈঠকেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাননি। কর্ণাটন বিধান সভা নির্বাচনের পরে তার মতের পরিবর্তন হয়েছে। উনি তো অখিলেশ যাদব ও নবীন পট্টনায়কদের নিয়ে তৃতীয় ফ্রন্ট করতে গেছিলেন। আমরা তা বিরোধিতা করেছিলাম। আমরা প্রথম থেকেই বলেছি বিজেপি বিরোধী সবাই এককাট্টা হোক। যে কারণে পাটনা বৈঠক। তবে মহঃ সেলিম বলেন, রাজ্য যেমন দূর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই হচ্ছে, তা চলবে। এখানে কোন সমঝোতা হবেনা।
একই ভাবে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের সমঝোতার কথা তুলে ধরে মহঃ সেলিম বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বোঝাপড়া বা সেটিংয়ের রাজনীতি চলছে, এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেই কারণে বারংবার আদালতের নির্দেশের পরেও, পুরো সংখ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী নেই। আসল কথা হলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার ভাইপো ও ভাইপো স্ত্রীকে গ্রেফতার হওয়া থেকে বাঁচাতে চাইছেন। তবে তা হবে না। যা প্রমাণ আছে, তাতে, আজ নয়তো কাল জেলে যেতেই হবে বলে দাবি মহঃ সেলিমের।

Leave a Reply