বাড়ির মধ্যে আগুনে পুড়ে মৃত্যু রাজ্য পুলিশের এক সাব ইন্সপেক্টরের
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্যঃ বাড়ির মধ্যে আগুনে পুড়ে মৃত্যু হলো রাজ্য পুলিশের এক সাব ইন্সপেক্টর বা এসআইয়ের। মৃত এসআইয়ের নাম অমল ভট্টাচার্য (৫৮)। তিনি বর্তমানে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের অধীনে আসানসোল পুলিশ লাইনে কর্মরত ছিলেন। এই এসআইয়ের বাড়ি আসানসোলের মাইথনের ডিভিসির লেফ্ট ব্যাঙ্ক এলাকায়। তবে তিনি বর্তমানে আসানসোল দক্ষিণ থানার আসানসোল গ্রামে নতুন পাড়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। বুধবার গভীর রাতে এই ভাড়াবাড়িতে ঘটনাটি ঘটেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে এসআইয়ের মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মাইথনের ডিভিসির লেফ্ট ব্যাঙ্ক এলাকার বাসিন্দা অমল ভট্টাচার্য আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসআই বা সাব ইন্সপেক্টর ছিলেন।
বর্তমানে তিনি পুলিশ লাইনে কর্মরত আছেন। তিনদিন আগে তিনি জঙ্গলমহলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরে ডিউটি করতে যান। বৃহস্পতিবার তার সেখান থেকে আসানসোল গ্রামে নতুন পাড়ার ভাড়া বাড়িতে ফিরে আসার কথা ছিলো। কিন্তু ডিউটি শেষ হয়ে যাওয়ায় বুধবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ আসানসোলে আসেন। গভীর রাত দেড়টা নাগাদ বাড়িওয়ালা দেখেন একতলায় যে অমলবাবু ভাড়া থাকেন সেখান থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি আসানসোল দক্ষিণ থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখে ঘরে সবকিছু আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে গেছে। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় পড়ে আছেন এসআই। সঙ্গে সঙ্গে তাকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এসআইয়ের স্ত্রী মুনমুন ভট্টাচার্য এদিন সকালে কলকাতা থেকে বাড়ি ফিরে এসে এই ঘটনার কথা জানতে পারেন। স্বাভাবিক ভাবেই তিনি ঘটনার আকস্মিকতায় হকচকিত হয়ে যান।
এদিন দুপুরে জেলা হাসপাতালে তিনি বলেন, আমি ও স্বামী এই বাড়িতে ভাড়া থাকি। আমাদের ছেলেমেয়েরা কলকাতার বাড়িতে থাকে ও পড়াশোনা করে। স্বামী তিনদিনের জন্য জঙ্গলমহলে মুখ্যমন্ত্রীর সফরের ডিউটিতে যান। আমাকে কলকাতায় চলে যেতে বলেন। আমি তাই যাই। আমাদের এদিন আসানসোলে আসার কথা ছিলো। কিন্তু ডিউটি শেষ হয়ে যাওয়ায় বুধবার রাতে তিনি আসানসোলে চলে আসেন। এদিন সকালে আসানসোলে এসে এই ঘটনা জানতে পারি। বুঝতে পারছি না, কি করে এই ঘটনা ঘটলো। ঘরের সব আসবাবপত্র ও জিনিসের সঙ্গে সিলিং ফ্যান ও এসি বা শীততাপনিয়ন্ত্রন মেশিনও পুড়ে গেছে। তিনি বলেন, পুলিশ আমাকে বলেছে সিগারেটের আগুন কোনভাবে বিছানায় পড়ে যাওয়ায় এই ঘটনা। পুলিশ তার প্রমাণ পেয়েছে। আমার কোন অভিযোগ নেই। অন্যদিকে, পুলিশের প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, সিগারেটের আগুন থেকেই এই ঘটনা ঘটেছে। গভীর রাত থাকায় কেউ জানতে পারেননি। বাড়িওয়ালা পরে বুঝতে পারেন। পরিবারের তরফে কোন অভিযোগ নেই। এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।