আশাকর্মীদের জুতো ও চটি পেটানোর নিদানের অভিযোগে বিএমওএইচের বিরুদ্ধে, বিক্ষোভে উত্তাল ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল ও সালানপুর, কাজল মিত্র ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ আশাকর্মীদের জুতো ও চটি দিয়ে পেটানোর নিদান খোদ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের বা বিএমওএইচ ডাঃ সুব্রত সিটের। এই অভিযোগে শুক্রবার সকালে উত্তাল হল পশ্চিম বর্ধমান জেলার সালানপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র।সালানপুর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের এমন মন্তব্যের প্রতিবাদে এদিন আশা কর্মীরা ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসে তুমুল বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা হুশিয়ারি দেন, বিএমওএইচকে তার এই কথার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। না, হলে তারা কাজ করবেন না। গন্ডগোলের খবর পেয়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বা সিএমওএইচ ডাঃ ইউনুস সেখানে জেলার আশা কর্মীদের কোঅর্ডিনেটর অমিত গুহকে পাঠান। তিনি আশা কর্মীদের সঙ্গে গোটা বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। আশা কর্মীরা ডিস্ট্রিক্ট কো-অর্ডিনেটরের কাছে নিজেদের দাবি সহ স্মারকলিপি দেন। তার কাছে বিএমওএইচের এই মন্তব্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন আশা কর্মীরা।
যদিও এদিন বিক্ষোভের সময় সালানপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অভিযুক্ত বিএমওএইচ ডাঃ সুব্রত সিট উপস্থিত ছিলেন না। আশা কর্মীরা দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখানোর পর যতক্ষণ না বিএমওএইচ তাদের কাছে ক্ষমা চাইছেন ততক্ষণ তারা নিজেদের কাজে যোগ দেবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
অন্য দিকে, আশা কর্মীদের ডিস্ট্রিক্ট্র কো- অর্ডিনেটার অমিত গুহ বলেন, আশা কর্মীরা আমাকে তাদের দাবি নিয়ে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন। তা আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিএমওএইচকে দেবো ও তাকে গোটা বিষয়টি জানাবো।
আশা কর্মী চুমকি চট্টোপাধ্যায় ও রেখা নন্দীরা এদিন জানিয়েছেন, ঘটনার সূত্রপাত দিন কয়েক আগে। ব্লকের পর্বতপুর এলাকার একজন শিশুকে টিকা দেওয়া হয়েছিল। সেই টিকা দেওয়ার পর শিশু জ্বরে আক্রান্ত হয় ওই শিশুটি। পরে ঐ শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে স্বাস্থ্য কর্মীদের গাফিলতির অভিযোগ তোলেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম দফায় স্বাস্থ্যকর্মীরা শিশুটির পরিবারের লোকেদের কাছে মার্জনাও চেয়ে নেন।এরপর আবার ঐ আশা কর্মীদের ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডেকে অভিযোগকারী পরিবারের সদস্যদের কাছে ফের ক্ষমা চাইতে বলেন বিএমওএইচ। তখন তিনি পরিবারের সদস্যদের নিদান দেন স্বাস্থ্য কর্মীদের জুতো মারা ও চটি পেটা করার। এমনি অভিযোগ বিক্ষোভকারী আশা কর্মীদের। গোটা
ঘটনাটি মদ্যপ অবস্থায় সালানপুর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুব্রত সিট ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ আশা কর্মীদের।
আরো জানা গেছে , ডাঃ প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার সকালে পুরুলিয়ার বাড়িতে চলে। রবিবার পার করে আসেন। স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসা অনেকেরই নানা অভিযোগ এই বিএমওএইচের বিরুদ্ধে আছে বলে এলাকা সূত্রে জানা গেছে।
শেষ পর্যন্ত উত্তেজনার খবর পেয়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসে সালানপুর থানার পুলিশ। বেশ কিছুক্ষণ পরে আশা কর্মীরা তাদের বিক্ষোভ তুলেনেন। তবে বিএমওএইচ ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত তারা কাজ করবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
আশা কর্মীদের অভিযোগ নিয়ে বিএমওএইচের কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি। তিনি ফোন তোলেনি ও ওয়াটস্ এ্যাপের ম্যাসেজেরও উত্তর দেননি।
তবে সিএমওএইচ ডাঃ ইউনুস খান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিএমওএইচ একরকম বলেছেন। আশা কর্মীরা একরকম বলেছন। আশা কর্মীরা আমার কাছে আসছেন। দু’পক্ষেরই কথা শুনবো। তারপর দেখবো কি যায়। তেমন হলে আমি আমার উর্ধতনের কাছে পাঠিয়ে দেবো।