RANIGANJ-JAMURIA

পুলিশ প্রশাসনের মানবিক মুখ লক্ষ্য করা গেল

বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জী, রানীগঞ্জ : ফের আরো একবার পুলিশ প্রশাসনের মানবিক মুখ লক্ষ্য করা গেল পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটে l এবার রানীগঞ্জ থানা অন্তর্গত নিমচা ফাঁড়ি এলাকায় গত কয়েক দিন ধরে নিমচা ফাঁড়ির জেমেরি গ্রামে, এক মানসিক ভারসাম্যহীন, ভবঘুরে যুবককে ঘোরাফেরা করতে দেখে, এলাকার মানুষের সন্দেহ হওয়ায় তারা ওই যুবককে আটকে রাখে। পরে নিমচা ফাঁড়ির পুলিশকে খবর দেওয়া হলে, নিমচা ফাঁড়ির পুলিশ তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে, ওই মানসিক ভারসাম্যহীন, যুবককে উদ্ধার করে নিমচা ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। পরে তাকে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করে তার বাড়ির খোঁজ-খবর বের করতে সক্ষম হয় পুলিশ। ওই যুবককে তাদের ভাষাতেই প্রশ্ন করে জানতে পারা যায়, বিহারের গয়া জেলার বিষ্ণুপদ থানা এলাকার বাসিন্দা সে। পরে সে তার নামও জানায়, সে নিজের নাম সিন্টু কুমার রাম বলেই জানাই।

এই বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ তড়িঘড়ি বিহারের ওই বিষ্ণুপদ থানাতে, এই যুবকের দেওয়া বিভিন্ন তথ্য জানিয়ে, একেবারেই সুনিশ্চিত হয়, যে সে সেই এলাকারই সদস্য। তারা তার বাড়ির সদস্যদের ওই মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের খোঁজ পাওয়ার বিষয়টি জানালেও অসহায় গরিব পরিবারের সদস্যদের, ওই যুবককে ফিরিয়ে আনার কোন সঙ্গতি না থাকায়, তারা ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারে না তাকে। দীর্ঘ কয়েক দিন এ বিষয়ে জানানোর পর, তাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কোন উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখায়, রানীগঞ্জের নিমচা ফাঁড়ির আইসি মলয় দাস, রানীগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর সুদীপ দাশগুপ্তর কাছে এই বিষয়টি জানালে সুদীপ দাশগুপ্ত, মলয় দাস কে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে বলে, ওই যুবককে সুস্থ স্বাভাবিক করে তোলার কথা জানান। সে মতোই মলয় দাস ওই যুবককে দীর্ঘ কয়েকটি দিন, নিজেদের পর্যবেক্ষণে রেখে, তাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে, সুস্থ অবস্থায় নিয়ে আনতে সচেষ্ট হন। এরপরই ওই যুবক অনেকটাই স্বাভাবিক অবস্থায় চলে এলে, তাকে বাড়ি পৌঁছে দিতে উদ্যোগ নেন নিমচা ফাঁড়ির পুলিশ।

এরপরই মলয় দাস এর নেতৃত্বে সোমবার বিহারের রাচির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে তাকে। বিহারের বিষ্ণুপদ থানা এলাকায়, তার বাড়ি সদস্য, তার দাদা মনোজ রামের হাতে তাকে তুলে দেন। শুধু তাকে তার বাড়ির আত্মীয়দের হাতে তুলে দিয়ে পুলিশ ক্ষান্ত হয় না। তাকে যথারীতি বেশ কয়েকটি নতুন পোশাক কিনে দিয়ে, নতুন পোশাক পরিয়ে, তার সাথে কিছু খাবার দাবার ও ব্যবহারের সামগ্রী তাকে দিয়ে, তার আত্মীয়-স্বজনদের হাতে তাকে তুলে দেন, পঞ্চায়েতের প্রধান ও থানার পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে। দীর্ঘদিন ধরেই নিজেদের বাড়ির সদস্য বাড়ি ছেড়ে বিভিন্ন অংশে ভবঘুরের মতো ঘুরে বেড়ানোর বিষয় জানতে পেরে ও নিখোঁজ ভাইকে সামনে পেয়ে স্বভাবতই খুশি হয়ে আনন্দ উচ্ছ্বাসে, কান্নায় ভেঙে পড়ে তার আত্মীয়-স্বজন। তারা পুলিশ প্রশাসনের এই মহতী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *