আসানসোলে পুর পরিসেবা নিয়ে পুরনিগম অভিযানে এসে কয়লা ও বালি নিয়ে সরব বিজেপির রাজ্য সভাপতি
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত:: ( Asansol News Today ) পুর পরিসেবা নিয়ে আসানসোল পুরনিগম অভিযানে এসে বালি ও কয়লা চুরি নিয়ে সরব হলেন বিজেপির রাজ্য সম্পাদক সাংসদ সুকান্ত মজুমদার ( Sukanta Majumdar ) । বালি ও কয়লার টাকা যারা নিয়েছে তারা কেউ ছাড়া পাবেন না বলেও তিনি হুঁশিয়ারী দেন। আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারির কথায় সহমত পোষণ করে তার দাবি, গোটা রাজ্যের সঙ্গে আসানসোল পুরনিগম এলাকায় ডেঙ্গুর একই ছবি। বিজেপির রাজ্য সভাপতির এই অভিযোগ ও দাবিকে গুরুত্ব দিতে চাননি আসানসোল পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায় ও তৃনমুল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন ওরফে দাসু।
ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা আসানসোল সাংগঠনিক জেলার পক্ষ থেকে শুক্রবার আসানসোল পুরনিগম এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি, পানীয় জলের সঙ্কট ও রাস্তাঘাটের বেহাল দশার নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের উপস্থিতিতে আসানসোল পুরনিগম অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছিলো। এই অভিযান শেষে মেয়রের কাছে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এদিন দুপুর ১২ টা নাগাদ একটি বিক্ষোভ মিছিলের মধ্যে দিয়ে এই আন্দোলন শুরু হওয়ার কথা ছিলো । যদিও প্রায় দেড় ঘন্টা পরে বিজেপির কর্মসূচি শুরু হয় দুপুর দেড়টা নাগাদ।আসানসোলের জিটি রোডের গীর্জা মোড় থেকে ডেঙ্গুর প্রকোপে মৃত্যুর প্রতিবাদে প্রতীকী শবদেহ ও মশারী নিয়ে আসানসোল পুরনিগম পর্যন্ত মিছিল করেন বিজেপির কর্মী সমর্থকেরা। মিছিল শেষে আসানসোল পুরনিগমের মুল গেটের সামনে তারা বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখান।
এই অবস্থান বিক্ষোভ মঞ্চে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, আসানসোল পুরনিগমে অনেক প্রকার দুর্নীতি হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম আমরুত প্রকল্প। যেখানে কেন্দ্রের সরকার এখনো পর্যন্ত ৫০০ কোটি টাকা পাঠালেও রাজ্য সরকার আসানসোল পুরনিগমকে একটাকাও দেয়নি। এই তথ্য তো আমার আগের বক্তা আসানসোলর প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি দিয়েছেন। মেয়র ও মন্ত্রীর মধ্যে কোন যোগাযোগ নেই। তারা বসে সমস্যার সমাধান করছেন না। আসলে তারা বসবেন জেলের ভেতরে। যেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসাবেন তার পরদিনই কয়লা পাচার ও গোরু পাচার কাণ্ডে গ্রেফতার হবে। দুদিন আগে হওয়া রানিগঞ্জের খোলামুখ কয়লাখনিতে ধসের ঘটনা নিয়েও তিনি বক্তব্য রাখেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, ওখানে সাতজন মারা গেছেন। আর পুলিশ প্রশাসন বলছে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিন মিছিল ও ধর্ণা বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন আসানসোল দক্ষিণ, কুলটি ও দূর্গাপুরের তিন বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল, ডাঃ অজয় পোদ্দার ও লক্ষ্মণ ঘোড়ুই, আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি, জেলা সম্পাদক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়, বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় ও দেবতনু ভট্টাচার্য, আসানসোল পুরনিগমের বিরোধী দলনেত্রী চৈতালি তেওয়ারি সহ আরো অনেকে।
এই প্রসঙ্গে মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, বিজেপি তাদের স্মারক লিপিতে যে সব দাবি জানিয়েছেন তা নিয়ে আগে থেকেই পুরনিগম কতৃপক্ষ উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করেছে। তৃনমুল কংগ্রেসের কোন্দল নিয়ে বিজেপি পরামর্শ নিয়ে, তিনি বলেন, আমাদের দল নিয়ে না ভেবে, সুকান্তবাবুদের নিজের দলের সংগঠন নিয়ে ভাবা দরকার। কারণ ওদের মধ্যেই মনোমালিন্য রয়েছে। কারোর নাম করে বলতে চাইনা।
বিজেপির এই আন্দোলনে জমায়েত নিয়ে কটাক্ষ করেন তৃনমুল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন ওরফে দাসু। তিনি বলেন, আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন রাজ্য সভাপতি, তিন বিধায়ক, একজন প্রাক্তন মেয়র, জেলা সভাপতি, পুর কাউন্সিলাররা। তারপরেও হাতে গোনা কটা লোক। এর থেকে প্রমাণিত হয় যে, বিজেপির সঙ্গে সাধারণ মানুষেরা নেই। তাদের সঙ্গে শুধু রয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আছেন বাংলার মানুষেরা। তৃনমুল কংগ্রেসের রাজনৈতিক মোকাবিলা করতে হলে, আগে দলের সংগঠন ঠিক করতে হবে।