ASANSOL

আসানসোল জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে কাজ বন্ধ করে অবস্থান বিক্ষোভ অস্থায়ী কর্মীদের, ঘেরাও

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্যঃ সদ্য উৎসবের মরশুম শেষ হয়েছে। কিন্তু নভেম্বর মাস শেষ হতে চললেও মেলেনি অক্টোবর মাসের বেতন। তাই সময় মত বেতন না মেলায় শুক্রবার সকাল থেকেই বেসরকারি কোম্পানির অধীন আসানসোল জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে অস্থায়ী কর্মীদের একাংশ কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখান। তারা হাসপাতালের সামনে অবস্থানেও বসে পড়েন। পরে হাসপাতালের সাইট ইনচার্জ সুজয় ঘোষ ও সহকারি সাইট ইনচার্জ শুভম মুখোপাধ্যায়কে তাদের অফিস ঘরে কয়েক ঘন্টা তালা মেরে আটকে রাখা হয়। তারপর দুপুর দুটো থেকে বিক্ষোভকারী অস্থায়ী কর্মীরা প্রায় দেড় ঘন্টার মতো জেলা হাসপাতালের সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাসকেও তার চেম্বারে ঘেরাও করেন।

সুপার গোটা বিষয়টি পশ্চিম বর্ধমান জেলার সিএমওএইচ ডাঃ মহঃ ইউনুস ও রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের সর্বোচ্চ আধিকারিকদের জানান। এরপরে ঐ অস্থায়ী কর্মীরা বিকেল চারটে নাগাদ পৌঁছে যান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বা সিএমওএইচ অফিসে। বেতন সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে সিএমওএইচ ডাঃ মহঃ ইউনুস তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি সঙ্গে সঙ্গে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের ডিরেক্টর অফ হেল্প সার্ভিস বা ডিএইচএস সহ অন্যান্য আধিকারিকদের সাথে কথা বলেন। এরপর অস্থায়ী কর্মীদেরকে তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেছেন শনিবারের মধ্যেই তারা বেতন পেয়ে যাবেন।


এদিন আসানসোল জেলা সুপার স্পেশালিট হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মীদের তরফে আন্দোলনকারীদের মধ্যে অন্যতম প্রসেনজিৎ বাউরি বলেন, প্রত্যেক মাসেই বলতে গেলে আমাদের সময় মতো বেতন হয়না। চলতি মাস শেষ হতে চললেও আমরা এখনো গত অক্টোবর মাসের কোন বেতন পাইনি। সেই সঙ্গে আমরা বর্তমান বাজারদরকে সামনে রেখে বারবার আমাদের বেতন বৃদ্ধিরও দাবি জানিয়ে চলেছি। আমরা বলতে গেলে সবাই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল যেদিন চালু হয়েছিলো, সেদিন থেকেই কাজ করছি। তিনি আরো বলেন, গত কয়েকদিন ধরে আমরা বেসরকারি সংস্থার আধিকারিকদের বেতনের কথা বলেছি। তা সত্ত্বেও এখনো বেতন পায়নি। শুধু দিন বলে, আমাদেরকে আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। সেজন্য বাধ্য হয়েই এদিন আমরা আন্দোলনে নামলাম। এদিন আমরা সাইড ইনচার্জ ও সহকারী সাইড ইনচার্জের ঘরে তালা লাগিয়ে দিয়েছিলাম। তারপর সুপার ও জেলার সিএমওএইচের কাছে গেছিলাম। তারা আমাদেরকে শনিবারের মধ্যে বেতন দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এদিন আমরা আংশিক কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছি। বেতন না মিললে, সব কাজ বন্ধ করে দেবো।


সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, এখানে ১৩০ জনের মতো অস্থায়ী কর্মী আছেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন নিরাপত্তা কর্মী, হাউসকিপিং, সাফাই কর্মী এবং বিভিন্ন ওয়ার্ডের ওয়ার্ড বয় এবং ওয়ার্ড গার্ল। তার দাবি, এই আন্দোলনের ফলে জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আংশিক সমস্যা তো হয়েছেই।
এই প্রসঙ্গে জেলা হাসপাতালের সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাস বলেন, আমার পক্ষে যত রকম ভাবে চেষ্টা করা যায় গত দু/তিনদিন ধরে বিভিন্ন স্তরে অস্থায়ী কর্মীদের হয়ে তাদের বেতনের কথা বলেছি। এদিনও বলেছি। আশা করছি শনিবারের মধ্যে বেতন তারা পেয়ে যাবেন। আমাকেও প্রায় ঘন্টা দেড়েকের বেশি সময় অস্থায়ী কর্মীরা ঘেরাও করে রেখেছিল। গোটা বিষয়টি তাদেরকে বোঝানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *