ASANSOL

আসানসোলকে যানজট মুক্ত করার পুরনিগমের উদ্যোগে আপাততঃ ইতি,ব্যস্ততম রাস্তায় বেআইনি দখলদার উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্যঃ ( Asansol News Today ) আসানসোল শহরকে যানজট মুক্ত করে সাধারণ মানুষদেরকে নিত্য দিনের সড়ক যন্ত্রণা থেকে রেহাই দেওয়ার পুরনিগমের পদক্ষেপ বা উদ্যোগে আপাততঃ ইতি পড়লো। শহরের অন্যতম প্রধান জনবহুল ও ব্যস্ততম রাস্তা হটন রোডের দুধারের বেআইনি দখলদার উচ্ছেদ করার অভিযান থেকে পিছিয়ে এলো আসানসোল পুরনিগম কতৃপক্ষ। হটন রোডের একাংশে বেআইনি ভাবে দখল করে দোকান করা লোকেদের রুটি রোজগারের কথা ভেবে এমন সিদ্ধান্ত মেয়র বিধান উপাধ্যায় নিয়েছেন বলে মঙ্গলবার জানান আসানসোল পুরনিগমের চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়। এদিন সকালে চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় পুরনিগমের অন্যতম ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটককে সঙ্গে নিয়ে জিটি রোডে সংযোগকারী হটন রোড মোড় সংলগ্ন এলাকায় গিয়ে রাস্তার দুধার দখল করে থাকা দোকানদার বা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন।


এর আগে দিন সাতেক আগে আসানসোল শহরের মুল অংশের যানজট সমস্যা মেটাতে মেয়র বিধান উপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন যে, ১৩ ডিসেম্বর বুধবারের মধ্যে জিটি রোড সংযোগকারী হটন রোড মোড় থেকে এসবি গরাই রোডের ইসমাইল মোড় পর্যন্ত রাস্তার দুধারের দখল সরিয়ে নিতে হবে দোকানদারদের। রাস্তার উপরে থাকা দোকানের অংশ না ভাঙলে বা সরিয়ে না নিলে ১৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার থেকে উচ্ছেদ অভিযানে নামবে পুরনিগম। মেয়রের এই ঘোষণার কথা গত সাতদিন ধরে আসানসোল পুরনিগমের তরফে গোটা হটন রোড জুড়ে মাইকিং করা হয়।


তবে শহরের মানুষদের আগে থেকেই একটা আশঙ্কা ছিলো যে, আসানসোল পুরনিগমের তরফে যাই জানানো হোক না কেন, এমন একটা সাহসী পদক্ষেপ বাস্তবে কার্যকর হবেনা। তার কারণ বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। ভোট ব্যাঙ্ক হারাতে রাজ্যের শাসক দল এমন একটা পদক্ষেপ দেখাতে সাহস করবেন। চরম সীমা শেষ হওয়ায় ২৪ ঘন্টা আগে শহরবাসীদের আশঙ্কা সত্যি হলো।
এদিন পুর আধিকারিকদের সাথে নিয়ে চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় ও ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক হটন রোডে গিয়ে গোটা এলাকা পরিদর্শন করার পাশাপাশি দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলেন। পাশাপাশি কোন দোকানের কতটা বর্ধিত অংশ সরিয়ে ফেলতে হবে সে ব্যাপারেও দোকানদারদের বুঝিয়ে দেন তারা।


পরে চেয়ারম্যান ও ডেপুটি মেয়র বলেন, এর আগে মেয়র সবার সঙ্গে আলোচনা করে হটন রোড থেকে বেআইনি দখলদারদের সরিয়ে গোটা রাস্তা যানজট মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু এইসব দোকানদারদের রুটি রোজগারের কথা ভেবে তার থেকে পিছিয়ে আসা হয়েছে। তবে এদিন আমরা গোটা এলাকা পরিদর্শন করে দোকানদের রাস্তার দখল করা অংশ ফাঁকা করতে বলা হয়েছে। কি করতে হবে, তা তাদেরকে ভালো করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।


এই হটন রোড দিয়ে আসানসোল জেলা হাসপাতালে যেতে হয়। এর পাশাপাশি এই রাস্তায় রয়েছে কলেজ ও একাধিক স্কুলও। আসানসোল শহরকে যানজট মুক্ত করতে ইতিমধ্যেই একাধিক কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে পুরনিগমের পক্ষ থেকে। জিটি রোডের ভগৎ সিং মোড় থেকে গীর্জা মোড় পর্যন্ত জিটিরোডের একপাশের সরকারি জমি থেকে বেশ কিছু দোকান উচ্ছেদ করে সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু হয়েছে। শহরের জিটি রোড লাগোয়া বড় বাজার ফুটপাত ও বাজার এলাকায় যানজট মুক্ত করতে এর আগেও একাধিকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বেআইনি দখলদারদের সঙ্গে বেআইনি ভাবে চলা শয়ে টোটো রাস্তা দখল করায় যানজট স্থায়ীভাবে থেকে যাচ্ছে বলে শহরের বাসিন্দারা মনে করেন। একই সমস্যা হয়ে আছে এসবি গড়াই রোডের মতো আরো একটি জনবহুল ও ব্যস্ততম রাস্তাতেও।

Leave a Reply