ASANSOL

আসানসোলে বৌদিকে খুনের অভিযোগ দেওরের বিরুদ্ধে, গ্রেফতার

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল, ৩০ ডিসেম্বরঃ ( Asansol Live News Today ) পারিবারিক অশান্তির জেরে বৌদিকে সবজি কাটার ছুরি খুন করার অভিযোগ উঠল দেওরের বিরুদ্ধে। শনিবার বিকেলে আসানসোল দক্ষিণ থানার দিলদার নগরের শিব মন্দির সংলগ্ন এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। এই ঘটনাশ গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ।মৃতার নাম মনি দেবী মন্ডল (৩০)। ঘটনার পরে দেওর ওমপ্রকাশ রাম ওরফ ভোলু আসানসোল দক্ষিণ থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে। পুলিশ তাকে প্রথমে আটক করে। পরে গোটা ঘটনা সম্পর্কে খোঁজখবর করে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে । জানা গেছে, থানায় পুলিশ কর্মীরা দেকেন ঐ যুবকের ডানহাতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এদিন সন্ধ্যা ছটা নাগাদ পুলিশ তাকে আসানসোল জেলা হাসপাতালের এমারজেন্সি বিভাগে নিয়ে আসে। পরে তাকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেই সময় সে সংবাদ মাধ্যমকে জানায়, বৌদি মনি দেবী তার উপর ছুরি নিয়ে আক্রমণ করেছিলো। তখন সে বাধা দিতে যায়। সেই সময় ধস্তাধস্তিতে মনি দেবী ছুরিকাহত হয়ে। যদিও জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মনি দেবীর শরীরে প্রায় সব জায়গায় একাধিক ক্ষত রয়েছে। বিশেষ করে তার মুখের আঘাত সবচেয়ে বেশি।


জানা গেছে, বছর বারো আগে দিলদার নগর লাগোয়া নয়া বস্তির বাসিন্দা মীনা দেবীর সঙ্গে দিলদার নগরের শিব মন্দির সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা মন্টু মন্ডলের বিয়ে হয়েছিল। মনি দেবীর বাবা ও মা নেই। সে কাকা কাকিমার কাছে মানুষ হয়েছে। মন্ট ও মিনার ৫ টি সন্তান আছে। শুক্রবারই কাজের জন্য কলকাতায় গেছে মনি দেবীর স্বামী।
আসানসোল দক্ষিণ থানার দিলদার নগরের শিব মন্দির সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা মনি দেবী মন্ডলের পড়শিদের অভিযোগ, এদিন বিকেলে বাড়ির মধ্যেই ঐ গৃহবধুর উপর তার দেওর ওমপ্রকাশ রাম ওরফে ভোলু ধারালো অস্ত্র দিয়ে চড়াও হয়। সেই সময় মনি দেবীর সঙ্গে ২ বছরের ছোট ছেলে ছিলো। শাশুড়ি সীতা দেবী বাইরে ছিলেন। পড়শিদের আরো অভিযোগ, তারা চিৎকার শুনে বাড়ির মধ্যে ঢোকেন। ততক্ষণে দেওর পালিয়েছে। গৃহবধূর ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় বিছানায় পড়েছিলো। তার শরীরে একাধিক জায়গায় আঘাত তারা দেখেন। এরপরে পড়শিরা রক্তাক্ত অবস্থায় ঐ গৃহবধুকে উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষনা করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ পৌঁছায়। পরে থানায় আত্মসমর্পণ করা অভিযুক্ত দেওরকে আটক করে পুলিশ।


ঘটনার খবর পেয়ে গৃহবধূর বাপের বাড়ির লোকেরা জেলা হাসপাতালে আসেন। সেই সময় তারা সেখানে থাকা মনি দেবীর শাশুড়ি সীতা দেবীর উপরে ক্ষোভ উগড়ে দেন। মৃতার কাকিমা ববিতা দেবী রাউত সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বিয়ের পর থেকেই শাশুড়ি ও শ্বশুর বাড়ির লোকেরা মনির উপর অত্যাচার করতো। মাঝে সে বাপের বাড়ি চলে আসে। দুবছর আগে স্বামী তাকে বুঝিয়ে নিয়ে যায়। গত কয়েক দিন ধরে আবার অশান্তি হচ্ছিলো। তারপর এই ঘটনা। খবর পেয়েছি ওর দেওর ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করেছে। আমরা সবার শাস্তি চাই।
মৃতার শাশুড়ি সীতা দেবী বলেন, আমি বাড়িতে ছিলাম না। ছোট জায়ের সঙ্গে বৌমার ঝগড়া হয়েছিলো। তারপর খবর পেয়ে আসি। তখন দেখি এই অবস্থা।
এদিকে পুলিশ জানায়, অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কি কারণে এই খুন তার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ধৃতর হাতে আঘাত থাকায় তাকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

Leave a Reply