ASANSOL

রাজ্যের ১০০০ ফ্লাই অ্যাশ ব্রিকস এবং টাইলস কারখানার কর্মীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়লো

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য , আসানসোল।( West Bengal Fly Ash Bricks Industry ) পশ্চিম বর্ধমান জেলা সহ রাজ্যের ১০০০ ফ্লাই অ্যাশ দ্বারা তৈরি ইট বা ব্রিকস এবং টাইলস কারখানার কর্মীদের আরো কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়লো। সেই সঙ্গে কাঁচামাল পাওয়ার ক্ষেত্রেও নিশ্চয়তাও বাড়লো। সদ্য কেন্দ্রীয় সরকারের বন ও পরিবেশ এবং আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষ থেকে গেজেট নোটিফিকেশন করে এই বিষয়ে বেশ কয়েকটি নতুন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এতদিন এই কারখানাগুলোতে ইট বা টাইলস তৈরি করতে গিয়ে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ছাই পেতে চরম সংকটে পড়তে হতো কারখানার মালিকদের। গেজেটের নতুন সিদ্ধান্তে কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছে কয়লা চালিত রাজ্যের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলির থেকে ৩০০ কিলোমিটারের মধ্যে এই ধরনের যে স্লাই অ্যাস কারখানা গুলি আছে তাদের সেখানকার ছাই দেওয়ার জন্য সরাসরি জানাতে হবে ।

অভিযোগএতদিন সিমেন্টের বড় মাঝারি কারখানাগুলি নিজেরা বেশিরভাগ ছাই তুলে নেওয়ায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তা কিনতে হতো বা পেতে অসুবিধা হতো এইসব ছোট ছোট ইট তৈরির কারখানা গুলির। ফলে তারা চরম সমস্যায় পড়তেন এবং প্রচুর টাকাও খরচ করতে হতো ।দ্বিতীয়ত কেন্দ্রীয় সরকারের এই নতুন গেজেট নোটিফিকেশনে বলে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার ,রাজ্য সরকার বা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের অধীনস্থ সংস্থা, স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা গুলি এবং ব্যক্তিগত মালিকানাধীন যেকোনো নির্মাণ কার্যের ক্ষেত্রেই ফ্লাইঅ্যাশ ইট ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে এইসব কারখানা গুলিতে সারা বছরের আগের তুলনায় অনেক বেশি কাজ করা সম্ভব হবে।


ওয়েস্ট বেঙ্গল ফ্লাইএস ব্রিক্স অর্গানাইজেশনের রাজ্য সম্পাদক বিবেক ভুয়ালকা ও সুভাস আগারওয়াল বলেন পশ্চিম বর্ধমানের প্রায় দেড়শো কারখানা সহ আমাদের রাজ্যে ১০০০ এমন কারখানা আছে। এখানে গড়ে কর্মী ধরলে প্রায় পঁচিশ হাজার কর্মী কাজ করেন। এছাড়াও পরোক্ষভাবে আরো কিছু কর্মী নানান কাজে ব্যবহার করা হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের এই নির্দেশের ফলে আমরা তিন ভাবে উপকৃত ।প্রথমত সরাসরি এবার আমরা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি থেকে ছাই পাব যাতে সারা রাজ্যের আমাদের কারখানাগুলো কাঁচা মালের সুবিধা হবে। দ্বিতীয়ত কোন দালাল বা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কাওকে যেতে হবে না ।তৃতীয়তঃ এটা অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব হবে এবং সকলকেই এই ইট ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। চতুর্থ তো এর ফলে আরও অন্তত ১০থেকে ১৬ হাজার নতুন করে কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে ।এই রাজ্যে এবং রাজ্য সরকারের রাজস্বও বাড়বে। তিনি বলেন এতদিন এইসব কারখানাগুলোর অভিযোগের দেখভালের জন্য কেউ ছিলেন না। নতুন নির্দেশে সেই দায়িত্ব রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ কে দেওয়া হয়েছে। যদি এই নির্দেশ কেউ না মানেন তাহলে আমরা সেখানে অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সালানপুর ব্লকের প্রান্তপল্লীর কাছে এই রকম একটি কারখানার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক অতনু রায় বর্মন বলেন একদিকে যেমন আমরা সহজেই এবার কাঁচামাল পাব ঠিক তেমনি রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সংস্থাগুলি তাদের সমস্ত নির্মাণ কার্য আমাদের মত পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে করলে এই ইটের চাহিদা বাড়বে। তার ফলে কর্মসংস্থানের সুবিধা হবে ।লাল ইট তৈরি করতে একদিকে যেমন মাটি কেটে কয়লা দিয়ে তা পোড়ানোয় দূষণ হয় তেমনি অন্যদিকে মাটি কেটে নেয়ার ফলে উর্বরতা শক্তি কমে। এই ইট বা টাইলসের ব্যবহারের বাড়ানোর সাথে সাথে দূষণ রোধ করা সম্ভব হবে এবং মাটির উর্বরতা শক্তি রোধ করা সম্ভব হবে। আসানসোল পুরসভার চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন এই নির্দেশ দেখে অবশ্যই পুরসভা তা বিচার বিবেচনা করে কাজ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *