ASANSOL

জমজমাট চর্যাপদের আন্তঃরাজ্য নাট্যোৎসব

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত: সম্প্রতি আসানসোলে শহর হয়ে উঠেছিলো নাট্যমুখর। পশ্চিমবঙ্গের বারোটি ও আসামের একটি নাটক অর্থাৎ দুই রাজ্যের নাটক দেখলো আসানসোলের নাট্যপ্রেমী মানুষ। চর্যাপদের পক্ষ থেকে রুদ্র প্রসাদ চক্রবর্তী জানান; “এই নাট্যমেলায় প্রতিবছর আসানসোলের মানুষের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে, তা প্রতিদিনের পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহ দেখলেই বোঝা যাচ্ছে৷ ফলত আয়োজক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব আরও ভালো কাজ করে মানুষকে দারুণ নাটক উপহার দেওয়া। শিল্পের বিকাশই আমাদের লক্ষ্য।” সেই উদ্দেশ্যকেই সামনে রেখে গত ১৪ থেকে ১৭ ই ডিসেম্বর আসানসোল রবীন্দ্রভবনে আয়োজিত হলো, একাদশ চর্যাপদ আন্তঃরাজ্য নাট্য উৎসব।

শুরুতেই একটি চারাগাছে জল প্রদান করে উদ্বোধিত করা হলো নাট্যমেলার। উদ্বোধন করেন আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস, আসানসোল কোর্টের জিআরও দেবাশীষ চৌধুরী ও আসানসোল পৌরসভার পক্ষে গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় এবং চর্যাপদের প্রতিষ্ঠাতা রুদ্র প্রসাদ চক্রবর্তী। প্রকাশ পায় চর্যাপদ নাট্যপত্র ‘এবং নাটক’ এর উৎসব সংখ্যা। এবারের বিষয় ‘বাদল সরকারের জন্ম শতবর্ষ’। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন; আসানসোল দূর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের মাননীয় চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, আসানসোল পৌরসভার মাননীয় চেয়ারম্যান অমরনাথ চ্যাটার্জি ও মাননীয় ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক প্রমুখরা।


এই নাট্যোৎসবে যেই সকল নাটক দেখতে পাওয়া গেলো তা হলো; শারন্য দে পরিচালিত 10th প্ল্যানেট কলকাতার ‘একটি বন্ধ পোস্ট অফিস’, অমিও মেমোরিয়াল ক্রিয়েটিভ আর্টসের মূকাভিনয় ‘শহীদ’, পরিচারনা কল্পতরু গুহ, সাঁইথিয়া ওয়েক আপের ‘হু অ্যাম আই’, পরিচালনা তীর্থজিৎ ঘোষ,চন্ডীতলা প্রম্পটারের নাটক ‘ইরাবান গাথা’ পরিচালনা রাকেশ ঘোষ,
থিয়েলাইট কলকাতার পরিচালক অতনু সরকার পরিচালিত ‘অ মৃতার সন্ধানে’,
আসানসোল প্রত্যয়ীর বিজয় ভট্টাচার্য নির্দেশিত ‘সোনার কুড়ুল’, পূর্ব রঙ্গ আসামের গুণাকর দেবগোস্বামীর নির্দেশনায় ‘রত্নাকর’, দোমোহানী বাজার নাট্য সেনার, গৌতম ভট্টাচার্য পরিচালিত ‘মহাভারতের যুদ্ধ’, বর্ধমান পাপেটিয়ার্সের পুতুল নাটক ‘মামা ভাগ্নে কুপোকাত’, নির্দেশনা পার্থ প্রতিম পাল,
আসানসোল রিপোর্টারি থিয়েটারের ‘বাঘ’, নির্মাণ স্বপন বিশ্বাস, বার্নপুর দিশারীর সৌরিন শেঠের নির্দেমনায় ‘জন্মভূমি’।


এই উৎসবে
আসানসোল চর্যাপদ মঞ্চস্থ করে রুদ্র প্রসাদ চক্রবর্তী পরিচালিত সফোক্লিস ও জাঁ আনুই এর নাট্যসূত্র থেকে বিনির্মিত নাট্য ‘আন্তিগোনে’ এবং ছোটদের চর্যাপদের প্রযোজনা সুকুমার রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নির্মিত ‘আবোল তাবোল একাই একশো’। অন্য সকর নাটকের পাশাপাশি চর্যাপদের দুটি নাটক নিয়ে দর্শকের মধ্যে ছিলো ব্যাপক উত্তেজনা।
এই নাট্যমেলাতে দেখতে পাই; ফেলে আসা সময়ের পুতুল নাটক, শিশুননট্য, গ্রীক ক্লাসিকাল, রামায়ণ, মহাভারত, শেক্সপিয়ার অনুপ্রাণিত নাট্য প্রযোজনা।

প্রতি বছরের ন্যায় এই বছরও চর্যাপদ চারুকলা সম্মানে ভূষিত করা হয় চার নাট্য ব্যক্তিত্বকে, তারা হলেন গুণাকর দেব গোস্বামী, অতনু সরকার, পার্থ প্রতিম পাল ও বাণীব্রত রাজগুরু।
নাট্যমেলায় ‘বর্তমানে অন্য ধারার থিয়েটার’ বিষয়ে একটি নাট্যালোচনাও আয়োজিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন; তীর্থজিৎ ঘোষ, গুনাকর দেব গোস্বামী শরন্য দে এবং পার্থপ্রতিম পাল। এছাড়াও ছিলো ‘নাট্য বৃত্তি’। এবারে ‘চর্যাপদের মুখ’ সম্মান পান বিশ্বরূপ চক্রবর্তী ও বর্ষসেরা ‘মুকুট সম্মান’ লাভ করেন ঐশী কর, শুভদীপ চৌধুরী ও রাজেশ পাত্র। দর্শকের মধ্যে তিনজনকে প্রদান করা হয় ‘চর্যাপদ নাট্যমিত্র সম্মান যা পান শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়
, অনিতা ভট্টাচার্য ও জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য’।
সাধারন দর্শকের পাশাপাশি এই নাট্যমেলাকে সফর করতে হাত বড়িয়ে দিয়েছিলেন; আসানসোল পৌরসভা ও সংস্কৃতি মন্ত্রক, ভারত সরকার।
প্রতিবারের মতোই পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহে নাট্যোৎসব সম্পন্ন হয়। নাট্যোৎসব দেখতে দূর দূরান্ত থেকে উপস্থিত হন দর্শকেরা।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *