ASANSOL

চাকরির লোভে বাবাকে হত্যা করে কিভাবে, পুলিশকে দেখালো ছেলে

বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জী, রানীগঞ্জ :ইসিএলে চাকরি পাওয়ার লোভে নিজের বাবাকেই পথের কাঁটা মনে করে বাবা কে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে পাকাপাকি পরিকল্পনা করেছিল এক খনি কর্মীর মেজো ছেলে। তবে পুলিশের কঠিন প্রশ্ন উত্তরের ফাঁদে পড়ে শেষ রক্ষা হলো না, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে, তার মেজো ছেলের কথাবার্তায় অসংগতি দেখে, ঘটনার পনেরো দিনের মাথায় শেষমেষ ধরা পড়ে, বাবাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার অপরাধে তারই মেজো ছেলে। ঘটনাটি ঘটে অন্ডাল থানা অন্তর্গত উখড়া ফাঁড়ি এলাকায়।


শনিবার এ বিষয়ের প্রেক্ষিতে ধৃত ওই ব্যক্তিকে নিয়ে এই ঘটনার পুনর্নির্মাণ করল পুলিশ। এদিন ঘটনাটি সে কিভাবে সংঘটিত করেছিল সে সম্পর্কে একটি নাট্যরূপ প্রস্তুত করা হয়। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি কিভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছিল তা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সকলের সামনেই এই হত্যার ঘটনা কিভাবে সে সংগঠিত করেছিল তা পুলিশ প্রশাসনের কাছে তুলে ধরে।



ঘটনা প্রসঙ্গে জানা যায় খনি কর্মী এতোয়ারি মিঞা ইসিএল এর চনচনি কোলিয়ারিতে কাজ করতেন। আর মাত্র তিন মাস পরেই অবসর গ্রহণ করতেন তিনি, বর্তমানে তার বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর আর ৬০ বছরের এই হলে তার অবসর গ্রহণের সময় হয়ে যেত। আর সেই বিষয়কেই নজরে রেখে, তার ছেলে বাবার কাজ পাওয়ার লোভেই এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলেই প্রাথমিক অনুমান পুলিশের।

এ প্রসঙ্গে জানা যায়, চলতি বছরের গত ২৩ শে জানুয়ারি, মঙ্গলবার বাকোলা সুভাষ কলোনি সংলগ্ন জঙ্গলে থেকে গাছের নীচে ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার হয় ঐ খনি কর্মীর মৃতদেহ । পরে তা এতোয়ারী মিঞার দেহ বলে জানা যায় । সে সময় পরিবার সূত্রে দাবি করা হয়, রবিবার বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফেরেনি এতোয়ারী বাবু । এনিয়ে খোঁজাখুঁজির পর তার সন্ধান না পাওয়ায়, ঐদিন রাতেই উখড়া ফাঁড়িতে নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করা হয়, পরিবারের পক্ষ থেকে । দুদিন পর মঙ্গলবার তার মৃতদেহ উদ্ধার হয় । পুলিশ মৃতদেহের মুখে গভীর ক্ষত লক্ষ্য করে মৃত্যুর কারণ নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয় । পরে মৃত্যুর কারণ জানতে ময়না তদন্ত শুরু করে পুলিশ ।‌

এই তদন্তের পর, পরিবারের সদস্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় । যেখানে বাবার মৃত্যু নিয়ে তার মেজ ছেলে আব্দুল হাকিমের কথা বার্তায় বেশ কিছু অসংলগ্নতা লক্ষ্য করে তদন্তকারী অফিসার । এরপরই মঙ্গলবার রাতে বাবাকে খুনের অভিযোগে তার ছেলে আব্দুল হাকিমকে গ্রেফতার করে পুলিশ । বুধবার ধৃত আব্দুল হাকিমকে দুর্গাপুর কোর্টে পেশ করে পুলিশ । যেখানে বিচারক  ধৃতকে, আরো নানা বিষয়ে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এবার সেই তদন্তের প্রেক্ষিতেই শনিবার তাকে নিয়ে আসা হলো ঘটনাস্থলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *