বার্ণপুরে বাগদেবীর আরাধনায় থিম ভাবনা, বিগ বাজেটের দুই পুজোয় প্রতিমা, মন্ডপ থেকে আলোকসজ্জায় চমক
বেঙ্গল মিরর, বার্ণপুর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার ইস্পাত নগরী বার্ণপুরে এই বছরেও বাগদেবীর আরাধনায় রয়েছে ” থিম ” ভাবনার মধ্যে অন্য রকম কিছু একটা করা। বার্ণপুরের নরসিংবাঁধ এলাকায় বলতে গেলে পাশাপাশি দুটো বিগ বাজেটের সরস্বতী পুজো হয়। একটি হলো নরসিংবাঁধ ইউনাইটেড ক্লাব ও অপরটি হলো নরসিংবাঁধ তরুণ সংঘ । ইউনাইটেড ক্লাবের পুজো ২০১৬ সালে শুরু হয়েছিলো। তাদের পুজো এবার ৮ বছর পার করলো। তরুণ সংঘের পুজো এবার ২৭ বছরের। দুটি পুজোর প্রতিমা ও প্যান্ডেল বা মন্ডপ সজ্জায় চমক রয়েছে। সঙ্গে অবশ্যই রয়েছে আলোকসজ্জা। দুই পুজোর উদ্যোক্তারা বলতে গেলে, একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন খামতি রাখতে চায়নি।
সোমবার রাতে ফিতে কেটে ও প্রদীপ জ্বালিয়ে দুটি পুজোর উদ্বোধন করেন আসানসোল পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক। তার সঙ্গে মেয়র পারিষদ গুরুদাস ওরফে রকেট চট্টোপাধ্যায়, বোরো চেয়ারম্যান শিবানন্দ বাউরি, স্থানীয় কাউন্সিলার গুরমিত সিং সহ অন্যান্যরা ।
ইউনাইটেড ক্লাবের প্রতিমা রুপায়ন করেছেন শিল্পী বাপি বাউরি। মন্ডপ সজ্জায় কৌশিক পাল। এই ক্লাবের সম্পাদক পঙ্কজ কুমার সাউ ও সভাপতি নিক্কি সাউ বলেন, পরিবেশ বান্ধব সবকিছু দিয়ে টেরেকোটার ভাবনায় মন্ডপ সজ্জা করা হয়েছে। ২৮ ফুট লম্বা মন্ডপ তৈরী করা হয়েছে। বাঁশের সঙ্গে মাটির বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করা হয়েছে। মেটালের কিছু স্ট্যাচুও রাখা হয়েছে। অভিনব প্রতিমা মাটির সাজে সজ্জিত। কাপড় বা ধাতব কিছু প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহার করা হয় নি। ক্লাবের দুই কর্মকর্তার দাবি, পরিবেশকে খারাপ করবে না, এমন জিনিসই ব্যবহার করা হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে মানানসই আলোকসজ্জাও। তাদের আরো দাবি, ভালো একটা পুজো আমরা দর্শনার্থীদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রতিমা বিসর্জ্জন করা হবে। পুজো শুরুর দিনের পরে রয়েছে রক্তদান শিবির, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, প্রশ্ন মঞ্চ ও ভোগ বিতরণ।
অন্যদিকে, ২৭ বছরে পা দেওয়া তরুণ সংঘের মন্ডপ তৈরী করা হয়েছে কাল্পনিক মন্দিরের আদলে বলে জানান পুজোর অন্যতম কর্মকর্তা তথা সভাপতি অভীক গোস্বামী। তিনি বলেন, আমাদের এবারের মন্ডপ ও প্রতিমা রুপায়নে ছিলেন তুষার দাস ও তাপস দাস। মন্ডপ সজ্জা করা হয়েছে বাঁশের সঙ্গে থার্মোকল, মাটির বিভিন্ন জিনিস, বেত সহ অন্যান্য সামগ্রী। এখানে এমন কিন্তু ব্যবহার করা হয় নি, যা পরিবেশকে দূষিত করে। প্রতিমা তৈরি হয়েছে একেবারে মাটি দিয়ে। কাপড়ের কোন ব্যবহার নেই। তিনি বলেন, পুজো করলেও, আমাদের একটা সামাজিক দায়িত্ব আছে। যা আমরা মাথায় রেখে পরিকল্পনা করে থাকি। পুজোর কটা দিনে কম্বল বিলি, রক্তদান শিবিরের পাশাপাশি হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ১৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে প্রতিমা বিসর্জ্জনের পরে, রাতে ভোগ বিতরণ করা হবে।
তিনি আরো বলেন, ক্লাবের পুজো ও বছরভর নানা সামাজিক কাজের সঙ্গে একটা লাইব্রেরি আছে। যেখান থেকে পড়ুয়া থেকে চাকরি প্রার্থীরা সুবিধা পেয়ে থাকে।
দুই পুজোর উদ্যোক্তাদের দাবি, নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরার নজরদারি যেমন আছে। তেমন রয়েছে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থাও।