DURGAPUR

দরজায় কড়া নাড়ছে লোকসভা নির্বাচন, পশ্চিম বর্ধমান জেলা নেতৃত্বকে কড়া বার্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, মন্ত্রী ও নেতাদের দায়িত্ব

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলা নেতৃত্ব আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করার জন্য কতটা প্রস্তুত রয়েছে ও কিভাবে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে লড়াই করে দলের প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহাকে আবারও জয়ী করাতে হবে তার রূপরেখা তৈরি করে দেওয়ায় পাশাপাশি প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা দলের সুপ্রিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা কেন্দ্রের অধীন কোন বিধানসভায় কোন নেতারা দায়িত্বে থাকবেন, তাও ঠিক করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার জেলা সফরে বেরিয়ে দূর্গাপুর সার্কিট হাউসে এসেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তিনি পুরুলিয়া যান। আগে সোমবার সন্ধ্যায় পশ্চিম বর্ধমান জেলা নেতৃত্বর সঙ্গে বৈঠক সেরে নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


সূত্রের খবর, বৈঠকের শুরুতেই দলনেত্রী জেলা নেতৃত্বর উদ্দেশ্যে বলেন, কেউ কেউ নাকি ভেবে নিয়েছেন, পশ্চিম বর্ধমান জেলা ও তার লাগোয়া এলাকার কয়েকটি আসন বিজেপির হাতে তুলে দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা এজেন্সি ইডি ও সিবিআই যেন তাকে বা তাদেরকে কোনভাবে বিরক্ত না করে। এই ধরনের চিন্তা যে বা যারা করছে, তারা ঠিক কাজ করছে না। দলনেত্রী খানিকটা হলেও হুমকির সুরে তাদেরকে সতর্ক করে বলে দেন, দলে থেকে যদি কেউ দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে তাহলে তাকে কোনভাবেই রেয়াত করা হবে না।    


এই বৈঠকে দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসিকে নির্বাচন পর্যন্ত কিছুটা হলেও  সতর্ক থেকে কাজ করার পরামর্শ দেন দলনেত্রী।
আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের জন্য অনেক আগেই দলের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হলেও, দুর্গাপুর-বর্ধমান লোকসভা আসনে কাকে প্রার্থী করা হবে, তা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা নেতৃত্বকে কোন ইঙ্গিত দেননি। তবে জেলা নেতৃত্বকে তিনি আভাস দিয়েছেন, এই কেন্দ্রে ভালো প্রার্থী দেওয়া হবে।
আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের অধীন বিধানসভার যে আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক রয়েছেন,  সেই কেন্দ্রে লোকসভা নির্বাচনে তাকেই দায়িত্ব নিয়ে জয়লাভ করাতে হবে বলে নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বাকি সব কেন্দ্রের দায়িত্ব জেলা নেতৃত্বকেই দেওয়া হয়েছে। যেমন কুলটি বিধানসভার দায়িত্ব উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ই থাকবেন। তাকে সাহায্য করবে বারাবনি বিধানসভার বিধায়ক তথা আসানসোল পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায়। (বেঙ্গল মিরর এক্সক্লুসিভ )এছাড়াও থাকবেন জামুরিয়ার বিধায়ক হরেরাম সিংহ, আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি তথা আসানসোল পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক ও দলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী। কুলটি বিধানসভায় দলের সংগঠন অনেকটা দুর্বল রয়েছে বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন। তাই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রের বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে।


আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভার দায়িত্বে থাকবেন দলের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন ওরফে দাসু। তাকে সাহায্য করবেন বিধানসভার প্রাক্তন বিধায়ক বর্তমানে রানিগঞ্জের বিধায়ক তথা আসানসোল দূর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডার চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার।
সেই রকমভাবেই আসানসোল উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে দায়িত্ব রাজ্যের আইন ও শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটক তো থাকবে। দলের স্বার্থে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার  কেন্দ্রে তাকে প্রচারে যেতে হবে। তাই তাকে সাহায্য করবে আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক। পাশাপাশি দলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী সব বিধানসভা কেন্দ্রে যাবেন ও সবকিছু দেখবেন। 
সেই রকমভাবে দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভার দায়িত্ব থাকবেন বিশ্বনাথ পাড়িয়াল। তাকে সাহায্য করবেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা দুর্গাপুর পূর্বের বিধায়ক প্রদীপ মজুমদার।


এদিনের বৈঠকে সবকিছু নিয়ে আলোচনা হওয়ার সময় আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভার প্রসঙ্গ উঠে। সূত্র মারফত জানা গেছে,  তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি বলেন, ঐ কেন্দ্রে গত বিধান সভা নির্বাচনে দলের রাজ্য যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ হারেনি। তাকে দলের জেলা নেতারা জোর করে হারিয়ে দিয়েছেন। জেলা নেতাদেরকে তিনি সতর্ক করে বলেন, সব খবর আমার কাছে থাকে। 
প্রসঙ্গতঃ, গত লোকসভা নির্বাচনে আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভায় সায়নী ঘোষকে হারিয়েছেন অগ্নিমিত্রা পাল। কুলটিতে বিজেপির ডাঃ অজয় পোদ্দারের কাছে হেরে যান প্রাক্তন বিধায়ক তথা পুর চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *