PANDESWAR-ANDAL

দূর্গাপুর – বর্ধমান কেন্দ্রে শাসক দলের প্রার্থী কি ৮৩ র বিশ্বকাপ দলের সদস্য, ইস্পাত নগরীতে কীর্তি আজাদ উপস্থিতিতে শুরু জল্পনা

বেঙ্গল মিরর, দূর্গাপুর, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* বাংলার দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লোকসভা কেন্দ্র হলো দূর্গাপুর – বর্ধমান। এই কেন্দ্রে কি এবারে রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের প্রার্থী কি হতে চলেছেন ১৯৮৩ সালে কপিল দেবের নেতৃত্বে ক্রিকেটের বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের সদস্য কীর্তি আজাদ। মঙ্গলবার ইস্পাত নগরীতে তার উপস্থিতি এমন জল্পনাকে সামনে এনে দিলো। তবে নিজের প্রার্থী হওয়া নিয়ে প্রাক্তন সাংসদ কীর্তি আজাদ অবশ্য এদিন সরাসরি কোন মন্তব্য করেননি। তার দাবি, সেটা তো ঠিক করবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃনমুল সুপ্রিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


   তবে, প্রাক্তন ক্রিকেটার এদিন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তার দেওয়া প্রতিশ্রুতি না রাখার কথা মনে করিয়ে দিয়ে কটাক্ষ করেন। 
তিনি এদিন দুর্গাপুরের ইস্পাত নগরীর দুর্গাপুর ক্রিকেট ক্লাবে ব্যাট হাতে নেমে পড়েন। মারেন বেশ কয়েকটি ছয় ও চার। তারপরে তিনি খেলোয়ারদের সঙ্গে পরিচিত সেরে নিয়ে তাদের উৎসাহ বাড়ান। এই ক্রিকেটারের সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত, গ্রামোন্নয়ন, সমবায় মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা পান্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ও দূর্গাপুর পুরনিগমের ১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রাজীব ঘোষ সহ অন্যান্যরা।


উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুদিন বাংলা সফরে এসেছিলেন। তিনি দলের সভা থেকে রাজ্যের ৪২ টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪২ টি পাবে নেতা ও কর্মীদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেন। এই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কীর্তি আজাদ বলেন, সে তো ক্ষমতায় আসার আগে ২০১৪ নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন প্রত্যেক মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে  ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। বছরে ২ কোটি বেকার যুবক-যুবতীদের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। গ্যাসের দাম কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এই বিজেপি সরকার। সেইসব প্রতিশ্রুতি মিলেছে কিনা, তা দেশের মানুষ বলতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রী সহ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দাবি করেছিলেন ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে ২০০র বেশি আসন পাবে বিজেপি। কিন্তু ১০০টিও আসন পাইনি বিজেপি। তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের কাজ করেন। তাই বাংলার মানুষের রায়ে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনেও মানুষ জবাব দেবে বলেও জানান তিনি।


কীর্তি আজাদকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করে জানতে চান, আপনি কি এবারের লোকসভা নির্বাচনে এই দূর্গাপুর বর্ধমান কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন? উত্তরে তিনি বলেন, আমি আগামী ১০ মার্চ কলকাতার বিগ্রেডে ” জনগর্জন সভা ” য় এই এলাকার মানুষদের যাওয়ার জন্য অনুরোধ করতে দুর্গাপুরে এসেছি।
প্রসঙ্গতঃ, ১৯৮৩ সালে ক্রিকেট বিশ্বে ত্রাস সৃষ্টি করা ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হয়ে কপিলদেবের নেতৃত্বে প্রথম বিশ্বকাপ জয় করে নজির গড়েছিলো ভারত। আর সেই বিশ্বজয়ী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন এই কীর্তি আজাদ। তার রাজনৈতিক জীবনের শুরুটাও অনেকটা ক্রিকেটের মতো। গেরুয়া শিবির দিয়ে তার রাজনীতির পিচে আত্মপ্রকাশ। এরপর কংগ্রেসে যোগ। ২০২১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৃনমুল কংগ্রেসে পথ চলা শুরু। কিন্তু এতদিন পর্যন্ত এই ক্রিকেটার বাংলার বাইরেই ছিলেন। বঙ্গে তাকে তেমনভাবে দেখা যায় নি। তিনি গোয়া তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক কাজ দেখশোনা করতেন।


কিন্তু এখন আচমকাই তার বাংলায় আসা ও দলের সভার জন্য প্রচার করা অবশ্যই নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
তার প্রার্থী হওয়া নিয়ে অবশ্য তৃনমুল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি কোন মন্তব্য করেননি।
এর আগের লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে জিতে সাংসদ হয়েছেন বিজেপির সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া। এবারে পদ্ম শিবির তাকে আবার সেখানে প্রার্থী করবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়।
তবে, বিজেপির জেলা নেতৃত্ব শাসক দলের প্রার্থী নিয়ে তেমন চিন্তিত নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *