আসানসোলের বাজারে – বাজারে হানা জেলা টাস্ক ফোর্সের মহকুমাশাসকের নেতৃত্বে
শাকসবজির অগ্নিমূল্যে ছ্যাঁকা আমজনতার
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়/সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : ( Asansol Latest News Today ) নিত্য প্রয়োজনীয় শাকসবজির এখন অগ্নিমূল্য। সকালে বিকেলে ব্যাগ হাতে বাজারে গেলে কার্যত ছ্যাঁকা খেতে হচ্ছে। পকেট ফাঁকা হয়ে গেলেও, ব্যাগ ভরছে না।
এমন পরিস্থিতিতে বুধবার সাতসকালেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ ও পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস পোন্নাবলমের পরামর্শে আসানসোলে বাজারে বাজারে হানা দিলো জেলা টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা। এর নেতৃত্বে ছিলেন আসানসোলের মহকুমাশাসক (সদর) বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। এছাড়াও ছিলেন ইন্সপেক্টর অফ মেট্রোলজি, আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ইবি বা এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ ও অন্যান্য দপ্তরের আধিকারিকরা।
টাস্ক ফোর্স মুলতঃ আসানসোলের জিটি রোডের বড়বাজার, হটন রোড ও কোর্ট মোড়ের বাজার পরিদর্শন করেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন বাজার কমিটির সদস্যরাও। হোলসেল ও রিটেল দুই বাজারের দাম খতিয়ে দেখেন মহকুমাশাসক। কথা বলেন ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে। কোন সবজির কি দাম, হোলসেল থেকে কিনে রিটেলে তা কত দামে বিক্রি করা হচ্ছে, তা মহকুমাশাসক জানতে চান। দুইয়ের মধ্যে দামের এতো বেশি ফারাক কেন, তা মহকুমাশাসক জানার চেষ্টা করেন। আর্টিফিশিয়াল বা কৃত্রিম ভাবে শাকসবজির দাম যাতে বাড়ানো না হয়, সেই ব্যাপারে বিক্রেতার সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। দামের পাশাপাশি টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা ওজনের জন্য ব্যবহার করা ইলেকট্রনিক মেশিনও পরীক্ষা করা হয়েছে। বেশি কিছু মেশিনে গন্ডগোল ধরা পড়েছে। পরীক্ষায় দেখা গেছে, বেশ কয়েকজন বছরে একবার করে ইন্সপেক্টর অফ মেট্রোলজি দপ্তরে গিয়ে মেশিন কেলিব্রেশন করাননি। এরফলে ওজন ঠিক মতো ক্রেতারা পাচ্ছেননা।
এদিন মহকুমাশাসকের নির্দেশে বেশ কিছু মেশিন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকরা বাজেয়াপ্ত করেছেন। স্পট ফাইনও কয়েকজনকে করা হয়েছে। সব দোকানদারকে এই ব্যাপারে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, নিয়ম মেনে মেশিন কেলিব্রেশন না করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরে মহকুমাশাসক বলেন, জেলার টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা মহকুমা স্তরে এদিন আসানসোলের বেশ কয়েকটি বাজার পরিদর্শন করেন। হোলসেল ও রিটেল দুটি ক্ষেত্রেই তা করা হয়েছে। দুই ক্ষেত্রেই দামের ফারাক কতটা তা যাচাই করা হয়েছে। কৃত্রিম ভাবে যাতে জিনিসপত্রের দাম বাড়ানো না হয়, তারজন্য সতর্ক করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ওজনের ইলেকট্রনিক মেশিনও পরীক্ষা করা হয়েছে। বেশকিছু ক্ষেত্রে গরমিল ধরা পড়েছে। যে কারণে বেশি কিছু মেশিন সিজ করা হয়েছে। স্পট ফাইনও করা হয়েছে কয়েকজনকে। দাম বেশি, তার সঙ্গে ওজনে কম দেওয়ার কারণে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষদেরকে। এরজন্য সতর্ক করা হয়েছে। মহকুমাশাসক বলেন, এই অভিযান লাগাতার চলবে।
প্রসঙ্গতঃ, গোটা রাজ্যের সঙ্গে আসানসোল শহর সহ শিল্পাঞ্চলের সব বাজারে শাকসবজির দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে। একমাত্র পটল বাদে। আলু ৩৪ টাকা, পেঁয়াজ ৫০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, বেগুন ১০০ টাকা, ঢ্যাড়শ ৮০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা, একটা ফুলকপি ৪০ টাকা। পটল শুধু ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।