PANDESWAR-ANDAL

নদীতে ডুবে যাওয়া একজনকে বাঁচিয়ে অন্য জনকে উদ্ধার করে প্রশংসিত হচ্ছে অনাথ

বেঙ্গল মিরর,  সার্থক কুমার দে, অন্ডাল :  নদীতে ডুবে যাওয়া একজন যুবতীকে বাঁচিয়ে অপরজনকে উদ্ধার করে এখন প্রশংসিত হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দা অনাথ বাউরি । বিডিও বলেন উনি সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন । সাহসিকতার জন্য অনাথকে সম্বর্ধিত করা হবে ।শনিবার বেলা ১১ টা নাগাদ অন্ডালের ১২ নম্বর রহমতনগর এলাকার বাসিন্দা জ্যোতি প্রসাদ (২৫) ও ঝাড়খণ্ডের রাঁচির বাসিন্দা জ্যোতির আত্মীয় বিউটি (২০) ও প্রিয়াঙ্কা পাসওয়ান স্নান করতে যান অন্ডালের বাসকা নদী ঘাটে । স্নানের আগে নদী পাড়ে রিলস করার জন্য ভিডিও তুলছিল তারা বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা । অসাবধানতার কারণে রিলস করার সময় পা পিছলে নদীর জলে পড়ে যান জ্যোতি, প্রিয়াঙ্কা ও বিউটি । জল থেকে প্রিয়াঙ্কা ও বিউটিকে উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দা অনাথ বাউরী নামে একজন । বিউটিকে মৃত বলে জানান জানান চিকিৎসকেরা ।

ডুবুরি নামিয়ে শনিবার জ্যোতির খোঁজে শুরু হয় তল্লাশি । রবিবারও তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে ডুবুরিরা । তবে এখনো তার খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে প্রশাসন সূত্রে খবর ।
এদিকে একজনকে বাঁচিয়ে ও অন্যজনকে উদ্ধার করে এখন সকলের মুখে প্রশংসিত হচ্ছে অনাথ বাউড়ির নাম । রবিবার নদী ঘাটে দাঁড়িয়ে অনাথ জানান ঘটনার সময় তিনি পাশের একটি ঘাটের স্নান করছিলেন । তিনজন যুবতী নদীতে তলিয়ে যাচ্ছিল তা দেখে আমি নদীর জলে ঝাঁপিয়ে পড়ি । জলের ভিতর আমার হাতে লাগে প্রিয়াঙ্কা নামের মেয়েটির মাথার চুল । সেই চুল ধরে আমি ওই মেয়েটিকে নদীর পাড়ে তুলে আনি । তখন ও বেঁচে আছে কিনা জানতাম না । নদী পাড়ে শুইয়ে তার বুকে বেশ কয়েকবার জোরে জোরে চাপ দিতে মেয়েটি শ্বাস নিতে শুরু করে । তারপর অন্য একজনকে বাঁচাবার জন্য আবার নদীতে ডুব দিই । প্রথমবার ডুব দিয়ে তার সন্ধান পায়নি । দ্বিতীয়বারে ডুবে যাওয়া মেয়েটির নাগাল পায় । কিন্তু আমার শ্বাষ নিতে অসুবিধা হওয়ায় উপরে উঠে আসি । তৃতীয়বারের চেষ্টাতে বিউটি নামে মেয়েটিকে জল থেকে তুলে আনতে সক্ষম হয় । পরে জানতে পারি বিউটি নামে মেয়েটি মারা গেছে ।



দু’জনকে উদ্ধার করায় জন্য অনাথ এখন প্রশংসিত হচ্ছে সবার কাছ থেকে । অন্ডালের বিডিও দেবাঞ্জন দত্ত বলেন অনাথ সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে । নিজের জীবনের পরোয়া না করে সে দুজনকে উদ্ধার করেছে । একই কথা বলেন আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি দুর্গাপুর সুবীর রায় ও । তারা জানান উদ্ধারকাজ শেষ হলে সাহসিকতার জন্য অনাথকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্বর্ধিত করা হবে । অনাথ জানান সে অবিবাহিত । বাড়িতে মা, দাদা, বৌদি ভাইপো, ভাইজিরা রয়েছে ।‌ স্থায়ী কোন কাজ নেই, দাদার দোকান আছে । সেই দোকানে ফাই ফমাস খাটার কাজ করে সে । মানবিকতার খাতিরে সে উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়েছিল বলে জানান অনাথ ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *