আসানসোল ও রানীগঞ্জে বিজেপি ও তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ
বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জী, আসানসোল ও রানীগঞ্জ : বিজেপির পক্ষ থেকে বুধবার বন্ধের ডাক দেওয়ার পর, রানীগঞ্জে বাজার এলাকায় বিজেপি একদিকে যখন সমগ্র এলাকায় বাজার বন্ধ করার জন্য দিকে দিকে ব্যবসায়ীদের দোকানপাট বন্ধ করার জন্য হুঁশিয়ারি দেন। সেখানেই তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা তৃণমূলের নেত্রী স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে বাজারের সকল দোকানদারদের দোকান খোলার জন্য ডাক দেন তারা দিকে দিকে দোকানদারদের দোকান খুলে দিতে অনুরোধ জানান। এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই বিজেপি ও তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের মধ্যে রানিগঞ্জ বাজার এলাকায় মুখোমুখি সংঘর্ষ বেধে যায় পরে পুলিশ প্রশাসন ঘটনার সামাল দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
বিজেপি কর্মী সমর্থকরা দাবি করেন তাদের বেশ কয়েকজন কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলা করা হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব বিজেপির করা অভিযোগ অস্বীকার করে। নেতৃত্বদের দাবি মানুষজন স্বতঃস্ফূর্তভাবে দোকান খুলতে চাইলে তাদের বাধা দিতে যাওয়ায় স্থানীয় এলাকার মানুষজনই তাদের বিরোধিতা করেন এতে কোন তৃণমূল কর্মী সমর্থক কাউকেই মারধর করেনি বলেই দাবি করেছেন তারা। এদিকে এদিনের এই ঘটনায় রানীগঞ্জের নেতাজী স্ট্যাচু লাগোয়া এলাকায় বিজেপি ও তৃণমূলের বচসা ও হাতাহাতির সময় ছবি তুলতে গিয়ে আক্রান্ত হতে হয় সাংবাদিক প্রিয়রঞ্জন ব্যানার্জিকে, দুষ্কৃতীরা শুধু তাকে মারধোরই করে না, তার সঙ্গে থাকা মোবাইলটিও ভাঙচুর করে দুষ্কৃতীরা, বলেই তিনি এদিন রানীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এদিকে রানীগঞ্জের আসানসোল দক্ষিণ গ্রামীন এলাকাতেও সকাল প্রায় এগারোটা নাগাদ বিজেপির বেশ কিছু কর্মী সমর্থক বল্লভপুরের বাঁশতলা মোড় এলাকায় বিক্ষোভ আন্দোলন করতে গেলে তাদের ওপর তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় বিজেপির বেশ কয়েকজন কর্মী সমর্থক গুরুতরভাবে আহত হয় কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেও জানা গেছে। একই সাথে পুলিশ প্রশাসন এই ঘটনার সামাল দিতে গিয়ে আহত হয়েছে বলেও জানা যায় এক সাব ইন্সপেক্টর বাঁশতলা মোড়ে দুইদলের কর্মী সমর্থকদের সামাল দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়। তার এই ঘটনায় হাত ভেঙে গিয়েছে বলেই জানা গেছে।
সার্বিকভাবে রানীগঞ্জে বুধবার বন্ধের চেহারা একেবারে উত্তেজনাময় ছিল, বহু দোকানদার এদিন সকালেই বিজেপি নেতৃত্বের কথায় দোকান বন্ধ করলেও পরে রানীগঞ্জের তৃণমূল ব্লক সভাপতি রূপেশ যাদব ও রানীগঞ্জের বরো চেয়ারম্যান মোজাম্মেল শাহজাদার আশ্বাসে কয়েকজন দোকানদার দোকান খুললেও প্রায় ৮০ শতাংশ দোকানপাট এ দিন বন্ধ থাকে। পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে কয়েকটি বাস চলাচল করলেও বেশিরভাগ বাস বন্ধ থাকে। আর এ সকলের জেরে দিনভর ব্যাপক হয়রানি শিকার হতে হয় বহু অজানা যাত্রীদের।
অন্য়দিকে বিজেপির ডাকা বন্ধকে ঘিরে গোটা রাজ্যজুড়ে তৃণমূল এবং বিজেপি মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। সর্বত্রই দুই দলের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে। আসানসোলেও একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে। উভয় দলই এটিকে মর্যাদার বিষয় হিসেবে দেখছে। বুধবার প্রায় ১১টার দিকে, আসানসোলের উসজাগ্রামে বিজেপি এবং তৃণমূল কর্মীরা একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। জানা যাচ্ছে, বিজেপি বন্ধের সমর্থনে একটি মিছিল বের করছিল এবং সবাইকে বন্ধ মানার জন্য বলছিল। এর মধ্যেই, স্থানীয় কাউন্সিলরের নেতৃত্বে তৃণমূলের দল সেখানে পৌঁছায় এবং দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষ চলাকালীন, উভয় পক্ষই লাঠি ব্যবহার করার অভিযোগ তুলছে। সংঘর্ষে এক বিজেপি কর্মীর মাথায় আঘাত লাগে এবং তাকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। উভয় দলই একে অপরকে দোষারোপ করছে।