ASANSOL

আসানসোলে রেল কর্মীর আবাসনে ভোজালি দেখিয়ে ১০ লক্ষ টাকার গয়না লুঠ

বেঙ্গল মিরর,আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় : গৃহকর্ত্রী ও তার দুই সন্তানকে ভোজালি দেখিয়ে আসানসোলে এক রেল কর্মীর আবাসনে লুটপাট চালানো দুই সশস্ত্র দূষ্কৃতি। বুধবার ভোররাতের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে আসানসোল দক্ষিণ থানার দোমহানি রেল কলোনি এলাকায়। দুই দূষ্কৃতি ১৫ মিনিট রেল কর্মীর আবাসনে থেকে আলমারি থেকে বেশ কিছু মূল্যবান সামগ্রী ও ১০ লক্ষ টাকার সোনার গয়না লুঠ করে নিয়ে যায়। বুধবার সকালে এই ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পরে রেল কলোনি এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন রেল আবাসনের আবাসিকরা। ঘটনার খবর পেয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ ও আরপিএফ এলাকায় আসে। আবাসনে আবাসিক থাকা সত্বেও যেভাবে দুই দূষ্কৃতি দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে লুটপাট চালানো, তাতে পুলিশ ও আরপিএফের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।


জানা গেছে, ভুপেন্দ্র কুমার সিং, পূর্ব রেলের  আসানসোল রেলওয়ে ডিভিশনের পয়েন্ট ম্যান ভুপেন্দ্র কুমার সিং আসানসোলের দোমহানি রেল কলোনির স্লিপ গ্রাউন্ডের কাছে রেল আবাসনে পরিবার নিয়ে থাকেন। বর্তমানে তিনি কিছু ব্যক্তিগত কাজে তার পৈতৃক বাড়িতে গেছেন। মঙ্গলবার রাতে রেল কর্মীর স্ত্রী শ্বেতা সিং দুই সন্তানকে নিয়ে আবাসনে ছিলেন। বুধবার ভোররাত সাড়ে তিনটে নাগাদ দিকে দুই যুবক ধারালো অস্ত্র ভোজালি হাতে নিয়ে দরজা ভেঙে রেল আবাসনে ঢুকে পড়ে। সেই সময় শ্বেতা সিং তার দুই সন্তানকে নিয়ে গভীর ঘুমিয়েছিলেন। ধারালো অস্ত্র নিয়ে আবাসনের  দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তারা আলমারি ভেঙ্গে চুরির চেষ্টা শুরু করে। সেই শব্দ শুনে শ্বেতা সিংয়ের ঘুম ভেঙে যায়। তিনি জেগে ওঠেন।

স্বাভাবিক ভাবেই  তখন তিনি ঐ দুই যুবককে আবাসনের ভেতরে দেখে ভয় পেয়ে যান। তিনি চিৎকার করে আশেপাশের লোকজনদের ডাকার আগেই দুই যুবক তার কপালে অস্ত্র ধরে তাকে ও তার সন্তানদেরকে খুনের হুমকি দিয়ে চুপ করে থাকতে বলে। এরপর দুই যুবক শ্বেতা সিং আবাসনের ভেতরে আলমারিতে রাখা সমস্ত মূল্যবান জিনিস ও নগদ টাকা তুলে দেওয়ার হুমকি দেয়। কিন্তু তার কাছে নগদ টাকা ছিল না। কিন্তু এরপর দুই যুবক প্রায় ১৫ মিনিট ধরে আবাসনে থাকা সমস্ত আলমারি খুলে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার গহনা নিয়ে পালিয়ে যায়। দুই যুবক চলে যাওয়ার পরে শ্বেতা সিং চিৎকার করে আশপাশের লোকেদের ডাকেন।


এদিকে এই ঘটনার জেরে রেল কলোনি আবাসনে বসবাসকারী লোকজনদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তারা বলেন, রেল আবাসনে আরপিএফের নিয়মিত টহল দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। তাদের দায়িত্ব  রেলের আবাসনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু তা করা হচ্ছে না। এরফলে প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও এটা ঘটছে এমন ঘটনা ঘটছে। আরপিএফের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শ্বেতা সিং। তিনি বলেন, স্বামী নেই। এমন অবস্থায় ভোররাত সাড়ে তিনটের সময় দুই যুবক আমার আবাসনে ঢুকে পড়ে। আমি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু সন্তানদের ক্ষতি হবে, এই ভেবে চুপ করে ছিলাম।
ঘটনার খবর পেয়ে রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স বা আরপিএফ ও আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ আসে। পুলিশ জানায়, রেল কর্মীর পরিবারের তরফে ঘটনা নিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *