কুলটিতে দুই পরিবারের বিবাদের জেরে রণক্ষেত্র এলাকা, তলোয়ার নিয়ে হামলা ও গুলি চালানোর অভিযোগ
বেঙ্গল মিরর, কুলটি, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও কাজল মিত্র : জমি নিয়ে দুই প্রতিবেশী পরিবারের মধ্যে বিবাদের জেরে রণক্ষেত্র হয়ে উঠলো এলাকা। কিছুক্ষণ কথা কাটাকাটির পরে প্রকাশ্য রাস্তায় শুরু হয় মারামারি। এমনকি, তরোয়াল বার করে নিয়ে আসেন দুই পরিবারের লোকজনেরা বলে অভিযোগ । তারপর রাস্তার উপরই চলল ‘ পারিবারিক দ্বন্দ্ব “। তাতে ঝরল রক্ত। উঠল গুলি ছোঁড়ারও অভিযোগ। রবিবার দুপুরে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের কুলটি থানার বরাকরের মনবেড়িয়া এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। জানা গেছে, এই ঘটনায় জখম হয়েছেন দুই পক্ষের অন্ততঃ তিন জন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় কুলটি থানা ও বরাকর ফাঁড়ির পুলিশ। বেশ কিছুক্ষনের চেষ্টায় পুলিশ গোটা পরিস্থিতি সামাল দেন।
জানা গেছে, কুলটি থানার বরাকরের মনবেড়িয়া এলাকায় আখতার আনসারি ও নইম ছামাড়িয়া নামে দুই ব্যক্তির পাশাপাশি দুই পরিবারের মধ্যে একটি জমি নিয়ে বিবাদ দীর্ঘ দিনের। রবিবার সকাল থেকে ঐ জমি নিয়ে আবারও তরজা ও বিবাদ শুরু হয় দুই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। প্রথমে বচসা থেকে বাগ্বিতণ্ডা। তারপর শুরু হয় হাতাহাতি। পরে চলে তরোয়াল উঁচিয়ে একে অপরকে আক্রমণ। এই বিবাদের মধ্যে জড়িয়ো পড়েন দুই পরিবারের মহিলারা। অশান্তি এমন জায়গায় পৌঁছায় যে, রাস্তার দুদিকে পথচলতি লোকজনের থমকে যান। প্রকাশ্য রাস্তায় লাঠি ও তলোয়ারের মতো অস্ত্র হাতে দাপাদাপি করতে দেখে চমকে যান অনেকেই।
অন্য দিকে, নইম ছামাড়িয়া পরিবারের অভিযোগ, চামড়ার ব্যবসায়ী আখতার আনসারির বাড়ি থেকে গুলি চালানো হয়েছে। যদিও কাউকে লক্ষ্য করে এই গুলি ছোঁড়া হয়নি। কমপক্ষে শূন্যে তিন রাউন্ড গুলি চালানো হয় বলে দাবি করা হয়েছে। দুই পরিবারের বচসা, মারামারি এবং গুলি চালানোর খবর পাওয়ার পর কুলটি থানা ও বরাকর ফাঁড়ি থেকে পুলিশের একটি দল যায় ঘটনাস্থলে। বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। যে তিনজন এই ঘটনায় আহত হন, তাদেরকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। জানা যায়, তারমধ্যে দুজন স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রয়েছে। গুলি চালানো হয়েছে কি না তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি (পশ্চিম) সন্দীপ কররা বলেন, পারিবারিক একটা গন্ডগোলের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেছিলো। গুলি চলেছে কি না সেটা তদন্তসাপেক্ষ। দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। ঠিক কি ঘটনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
পরে জানা যায়, কুলটি থানার পুলিশ একটি বন্দুক এবং একটি রাইফেল উদ্ধার করেছে।
অন্যদিকে, পরে অভিযুক্তদের গ্রেফতারির দাবিতে এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন আহত পরিবারের সদস্যেরা। যা নিয়ে নতুন করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।