ঝাড়খণ্ডের কারণে বাংলা সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় ছড়াচ্ছে, দাবি পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের ওএসডির
আসানসোল ও দূর্গাপুরের ১০০ টি কারখানাকে নিয়ে বৈঠক
বেঙ্গল মিরর, দূর্গাপুর, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমান্ত লাগোয়া পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল ও দূর্গাপুরে সম্প্রতি দূষণ নিয়ে চিন্তায় রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। শীতকালে উত্তুরে হাওয়া দক্ষিণে আসার ফলে ঝাড়খণ্ডের দূষণ বাংলায় ঢুকছে। দিল্লির আইআইটির সমীক্ষায় এমনটাই উঠে এসেছে। তাই, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও পরিবেশ দপ্তর ঝাড়খন্ড বাংলার সীমান্তে তিনটি পর্যায়ে গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। আগামী দিনে এই গাছই পশ্চিমবঙ্গকে রক্ষা করবে বলে জানান দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অফিসার অফ স্পেশাল ডিউটি বা ওএসডি সুব্রত ঘোষ।
কয়েকদিন আগে দূষণের সূচকের মাত্রায় দিল্লিকে টপকে গেছিল আসানসোল ও দুর্গাপুর। মাথায় হাত পড়েছিল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের। দুর্গাপুরের একাধিক ইস্পাত কারখানা বন্ধের নির্দেশও দিয়েছিল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের দূর্গাপুরের আঞ্চলিক দপ্তর। তারপরেও দূষণ সেভাবে নিয়ন্ত্রণে না আসায় আসানসোল ও দুর্গাপুরের প্রায় ১০০ টি কারখানাকে নিয়ে দুর্গাপুরে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আঞ্চলিক দপ্তরে জরুরী বৈঠক হল। শুক্রবার দুপুরে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ওএসডির উপস্থিতিতে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডা, দুর্গাপুর পুরনিগম, মহকুমা প্রশাসন ও আসানসোল এবং দুর্গাপুরের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে এই বৈঠক হয়। ডিপিএল সহ একাধিক কারখানার বিরুদ্ধে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ উঠছে। .
এদিনের এই বৈঠক থেকে রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ওএসডি সুব্রত ঘোষ সেই কারখানাগুলি সহ আসানসোল ও দুর্গাপুরের একাধিক কারখানাকে সতর্ক করেন।
পরে ওএসডি সুব্রত ঘোষ বলেন, ভবিষ্যতে ডিপিএলের ছাই কারখানা থেকে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকা না দেওয়া হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে ফাইন বা জরিমানা করা হবে। প্রত্যেক কারখানাকে ওয়াটার স্প্রিংলার ব্যবহার করে কারখানার পার্শ্ববর্তী এলাকার রাস্তায় রাস্তায় জল দিতে হবে। সমস্ত কারখানাকে সবসময়ই ইউএসপি চালাতে হবে।
তিনি আরো বলেন, এই এলাকার কারখানাগুলোর গতিবিধি নজরে রাখতে দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসন, আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডা, দুর্গাপুর পুরনিগম সহ সমস্ত কারখানাকে সঙ্গে নিয়ে একটি হোযাটসঅ্যাপ গ্রুপ করা হয়েছে। কারখানাগুলিকে জিপিএস ক্যামেরা ব্যবহার করে প্রতিদিন ওয়াটার স্প্রিংলারের মাধ্যমে রাস্তায় রাস্তায় কবার করে জল দেওয়া হচ্ছে কিনা সেগুলি গ্রুপে ছবি পাঠানোর কথা জানানো হয়। এই গ্রুপের আধিকারিকরা অভিযোগ পেলেই অভিযান চালাবে বলেও তিনি বলেন। দু’দিন আগে দুর্গাপুরের বাতাসের গুণমান সূচক যে পরিমাণ ছিল সেটা অনেকটাই কমেছে। ভবিষ্যতে যাতে বাতাসের গুণমান সূচক নিয়ন্ত্রণে থাকে সেদিকেও আমাদের তৎপরতা থাকবে।
এই প্রসঙ্গে দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক সৌরভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, এদিন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আঞ্চলিক অফিসে জরুরি বৈঠক হয়েছে। এই বৈঠক থেকে দুর্গাপুরের সমস্ত কারখানাকে সতর্কের সাথে সচেতন করা হয়েছে। দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসন ও নজরদারি বাড়িয়েছে। দুর্গাপুরের দূষণ যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে সেদিকেও আমাদের প্রত্যেক মুহূর্তে নজর রয়েছে।
বামুনাড়া শিল্প তালুকের একটি বেসরকারি ইস্পাত কারখানার এক আধিকারিক বলেন, এই ধরনের বৈঠকের জন্য আমরা অনেক কিছু জানতে পারছি। দুর্গাপুরের মানুষ উপকৃত হচ্ছে। আমাদের যা যা নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে আমরা সেই মতোই কাজ করছি। দুর্গাপুরের মানুষ যাতে সুস্থ থাকে সেজন্য আমরাও সমস্ত রকম ভাবে তৎপর।