আসানসোল আরপিএফ আটকালো ভিন রাজ্যে মানব পাচার
জসিডি স্টেশনে অপারেশন ” আহট”, উদ্ধার ৫ নাবালক, ধৃত দুই



বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* মানব পাচার আটকাতে রেলওয়ে সুরক্ষা বাহিনী বা আরপিএফ তাদের প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে অপারেশন ” আহট” (মানব পাচারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ) র অধীনে ভারতীয় রেলে অভিযান জোরদার করেছে। অপারেশন ” আহট ” র লক্ষ্য হল সন্দেহজনক কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ, ক্ষতিগ্রস্তদের – বিশেষ করে নারী ও শিশুদের – উদ্ধার এবং পাচারকারীদের বিরুদ্ধে সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহন করা। এরজন্য সংবেদনশীল স্টেশন এবং ট্রেনগুলিতে প্রশিক্ষিত কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে ।

এই উদ্যোগটি যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার এবং মানবাধিকার সমুন্নত রাখার জন্য ভারতীয় রেলের দৃঢ় সংকল্পকে প্রতিফলিত করে।এই অভিযানের একটি বড় সাফল্য এসেছে গত ৩০ মে শুক্রবার। ঐদিন পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের জসিডি রেল স্টেশনে সতর্ক আরপিএফের কর্মীরা পাঁচ নাবালক শিশুকে উদ্ধার করে। দুই সন্দেহভাজন পাচারকারীকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
ঐদিন জসিডি স্টেশনে ৫ নাবালককে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। তখন আরপিএফের কর্মীরা তাদের কাছে যেতেই, সেখানে থাকা দুই ব্যক্তি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আরপিএফ সঙ্গে সঙ্গে পিছু ধাওয়া করে ঐ দুজনকে গ্রেফতার করে। তাদের তাৎক্ষণিকভাবে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতরা নিজেদের পরিচয় দেয়। তাদের নাম হলো নন্দকিশোর যাদব (৩২), বাড়ি ভেমিয়া, থানা-কাটোরিয়া, জেলা-বাঁকা, বিহার এবং বিনোদ যাদব (৩০), হরখানা, থানা-কাটোরিয়া, জেলা-বাঁকা, বিহার।
আরপিএফের জেরায় ধৃতরা স্বীকার করেছে যে তারা এদেরকে তামিলনাড়ুতে কাজের জন্য নিয়ে যেতে জসিডি স্টেশনে আসে। সেখান থেকে তিরুপুর যাওয়ার জন্য ২২৬৪৪ নল পাটনা-এরনাকুলাম সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসে উঠার পরিকল্পনা করছিল।ধৃতদেরকে আরো জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, পাচারকারীদের কাছে শিশুদের বাবা-মা বা স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে কোনও আইনি অনুমতি ছিল না। এমনকি তারা স্থানীয় মুখিয়া, ওয়ার্ড সদস্য বা ব্লক-স্তরের আধিকারিকদের কাছ থেকে কোনও শংসাপত্রও নিয়ে আসেনি।
প্রয়োজনীয় সমস্ত আইনি পদক্ষেপ সম্পন্ন করার পরে, দুই অভিযুক্তকে উদ্ধার হওয়া নাবালকদের সাথে জসিডি জিআরপি বা রেল পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন জন্য ধৃতদের বিরুদ্ধে বিএনএস বা ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারা ১৩৭(২) এবং ১৪৩(৫) এবং জুভেনাইল জাস্টিস এ্যাক্ট বা কিশোর বিচার আইনের ধারা ৭৫/৮১ এর অধীনে একটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে।